দ্রব্য মূল্যের উর্ধ্ব গতির কারনে নিম্ন আয়ের মানুষের পক্ষে গোস্ত কিনে খাওয়া স্বপ্নের মতো।গোস্তের সাদ মিটানোর জন্য অনেক নিম্ন আয়ের মানুষ গরুর ভুরি,মাথার গেস্ত,ফুসফুস কিনে থাকেন।
তাই পবিত্র মাহে রমজানে ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী রংপুর মহানগরীতে সর্বনিম্ন ২৫০ গ্রাম মাংস বিক্রির ব্যবস্থা করতে উদ্যোগ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন রংপুর সিটি করপোরেশনের (রসিক) মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা। এই উদ্যোগ বাস্তবায়নে মাংস ব্যবসায়ী ও নগরীর বিভিন্ন বাজার কমিটির সঙ্গে মতবিনিময় করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
রংপুর মহানগরীতে ছোটবড় ২২টি বাজার ছাড়াও পাড়া-মহল্লার মোড়ে রয়েছে গরুর মাংস বিক্রির দোকান। প্রতিদিন এখানে অন্তত ১৫০ থেকে ২০০ গরু জবাই করা হয়। বর্তমানে গরুর মাংসের কেজি ৭০০ টাকা। তাই সাধ আছে, কিন্তু সাধ্য না থাকায় গরুর মাংস কিনতে পারছেন না বেশিরভাগ নিম্ন আয়ের মানুষ।
দুই সদস্যেরপরিবারে এক বেলার জন্য দেড় থেকে দু’শ গ্রাম মাংস যথেষ্ট হলেও রংপুরে এই পরিমাণ মাংস কেনাবেচার প্রচলন নেই। সর্বনিম্ন আধা কেজি মাংস কিনতে হয়, যার দাম ৩৫০ টাকা। এই পরিমাণ মাংস কিনলে একদিনের রোজগারের প্রায় পুরোটাই চলে যায় দরিদ্র পরিবারের। তাই বেশিরভাগ নিম্ন ও দরিদ্র মানুষের খাবারের পাত থেকে উঠে যাচ্ছে গরুর মাংস। তাদের কথা ভেবে এই উদ্যোগ নিয়েছেন মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা।
গরুর মাংসের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে অনেক মানুষ, বিশেষত গরিব মানুষ তাদের শিশুদের মুখে এক টুকরা মাংসও তুলে দিতে পারছেন না। রোজার মাস শুরু হওয়ার আগে মহানগরীর সব মাংস ব্যবসায়ীকে ডেকে মানুষের সাধ্য অনুযায়ী মাংস কেনাবেচার ব্যবস্থা করব।
মোস্তাফিজার রহমান আরও বলেন, বাংলাদেশে না থাকলেও প্রতিবেশী ভারতে কিন্তু একশ বা দুইশ গ্রাম মাংস বিক্রি হয়। এটি করতে পারলে দরিদ্র মানুষ মাংস খেতে পারবে। আমরা চাই সবার সঙ্গে কথা বলে কমপক্ষে ২৫০ গ্রাম হলেও যেন মাংস বিক্রি করা হয়। ক্রেতা বা ভোক্তা যেন মাংস কিনতে এসে ফিরে না যায়, সেই দিকটাকে গুরুত্ব দিতে হবে। একজন ক্রেতা তার যতটুক প্রয়োজন, সেটাই কিনতে পারবে। কিন্তু আমাদের দেশে ব্যবসায়ীরা সেটা মানেন না বলেই অনেক নিম্ন আয়ের মানুষ তার চাহিদা অনুযায়ী গরুর মাংস কিনতে পারছেন না। আমাদের চেষ্টা থাকবে অন্তত রমজান মাসে যেন মাংস ব্যবসায়ীরা ২৫০ গ্রাম মাংস বিক্রি করতে আপত্তি না করেন। এটা বাস্তবায়ন করতে সিটি করপোরেশনের মনিটরিং টিম মাঠে কাজ করবে। পাশাপাশি আমরা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরসহ প্রশাসনের সহায়তা নেব।
তিনি বলেন, কোনো গ্রাহক বা ক্রেতা যদি ২৫০ গ্রাম মাংস কিনতে যায় আর মাংস ব্যবসায়ী যদি তা বিক্রি না করেন তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে আমরা ওই মাংস ব্যবসায়ীর লাইসেন্স বাতিল করে দেব। এই উদ্যোগ রমজানের শুরু থেকেই বাস্তবায়ন করা হবে। আমরা নৈতিকতার দিক থেকে অনেক পিছিয়ে আছি। আমাদের বিবেক কাজ করতে হবে। মাহে রমজানে ব্যবসায় বেশি লাভবান হতে অনেককে সিন্ডিকেট করতে দেখি। অথচ এই মাসে উচিত স্বল্প মুনাফায় সন্তুষ্ট থেকে ব্যবসা করা। আমাদের অনুরোধ থাকবে কেউ যাতে সিন্ডিকেট না করে, অধিক মুনাফা লাভের আশায় পণ্য মজুদ না করে এবং নিম্ন আয়ের মানুষদের কষ্ট না দেয়।