ঢাকা, মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

রায়পুর উপজেলা গৃহহীন ও ভূমিহীনমুক্ত ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর,ঘর পেয়ে খুশি অসচ্ছলরা

মোঃওয়াহিদুর রহমান মুরাদ, করেসপন্ডেন্ট : | প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার ২১ জুলাই ২০২২ ০৩:০৭:০০ অপরাহ্ন | চট্টগ্রাম প্রতিদিন

লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলাকে ভূমি ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। আজ বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টায় গণভবন থেকে সরাসরি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রায়পুর ও লক্ষ্মীপুরে ১৪৪২টি সহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ২৬ হাজার গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারদের মধ্যে এসব বাড়ি হস্তান্তর করেন তিনি। এসময় রায়পুর-সদর ও রামগতি উপজেলায় মোট ৪৩৬ টি ঘর বুঝিয়ে দেওয়া হয় আনুষ্ঠানিকভাবে। মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে বিনা খরচে ঘর উপহার দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি।

 

৩য় পর্যায়ে রায়পুরসহ ৫টি উপজেলার ১৪৪২টি পরিবারের মাঝে ঘর প্রদান করা হবে। এর মধ্যে সদর ৩০০টি, রায়পুর ৩০০টি, রামগঞ্জ ১৯২টি, রামগতি ৩৯০টি ও কমলনগর ২৬০ পরিবার।

 

এসময় রায়পুর উপজেলা পরিষদের হলরুমে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের ব্যবস্থাপক ফাতেমা খাতুন শিরিন এর সঞ্চালনায়  বক্তব্য রাখেন, মেয়র গিয়াস উদ্দিন রুবেল ভাট, ইউএনও অনজন দাশ, ভাইস চেয়ারম্যান  মারুফ বিন জাকারিয়া, সহকারি কমিশনার (ভূমি) রাসেল ইকবাল ও ওসি শিপন বড়ুয়াসহ সাংবাদিকবৃন্দ।ধার ব্যবস্থা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী রায়পুরে আশ্রয়ণ প্রকল্প-৩ এর আওতায় পরিবারদের মধ্যে নতুন ঘর উপহার দেওয়া হয়। ৩৬৪ পরিবারকে দেওয়া হয় নতুন এ বাড়ি। নতুন ঘর পাওয়া এসব ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষগুলোর চোখে মুখে এখন অনাবিল স্বপ্ন।

 

ঘর পাওয়ার আনন্দে রায়পুরের চরবংশি ইউপির চরকাছিয়া এলাকার ভূমিহীন জাহানারা বেগমের চোখে আনন্দ অশ্রু। ঘর পেয়ে কেমন লাগছে, জিজ্ঞেস করায় জাহানারা বলেন, ‘আমি দুই ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে বেড়িবাঁধ জায়গায় কুঁড়েঘর তুলে থাকি। স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারিনি যে, আমি জমিসহ ইটের একখানা নতুন ঘর পাবো। শেখ হাসিনার সরকার আমাকে ইটের ঘর দিবেন। এই বয়সে ইটের ঘরে থাকতে পারবো। আমি ভীষণ খুশি হয়েছি ঘর পেয়ে। তার মত অন্যরাও শুধু ঘরই নয়, পাচ্ছেন নিজ নামে দুইশতক জমি, স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট, সুন্দর বারান্দা বসবাসের নিরাপদ সুবিধা।

 

রায়পুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা দিলিপ দে জানান, সরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রতিটি ঘরের জন্য দুই শতাংশ খাসজমির বন্দোবস্তসহ দুই কক্ষের সেমিপাকা ঘর তৈরি করে দেওয়া হয়। এসব ঘরের প্রতিটিতে ১টি রান্না ঘর, টয়লেট ও সামনে খোলা বারান্দা রয়েছে। উপজেলার জন্য সম্প্রতি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের মাধ্যমে ‘ক’ ক্যাটাগরির অন্তর্ভুক্ত ভূমিহীন ও গৃহহীন ২য় পর্যায়ে ১৬৫টি পরিবারকে জমি ও ঘর নির্মাণের বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ঘরগুলো হলো-উপজেলার দক্ষিন চরবংশি ইউপির চরলক্ষি কারিমিয়া এলাকার ৭০টি ও আদর্শগ্রাম-৪১টি, উত্তর চরবংশি ইউপির কুচিয়ামোরা-২২টি, চরমোহনা গ্রামে-২০টি, উত্তর চরআবাবিল ইউপির বন্ধুবাড়ি এলাকায়- ৩৪টি, কেরোয়ার ইউপির মিরগঞ্জ এলাকায়-৯টি, বামনী ইউপির শিবপুর এলাকায়-১০টি ও পালবাড়ি এলাকায়- ৯৪জন জমি ও ঘর পাচ্ছেন। মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৮৫ লাখ ৫০ হাজার এবং প্রতিটি গৃহনির্মাণে ব্যয় হয়েছে এক লাখ ৭১ হাজার টাকা।

 

রায়পুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনজন দাশ জানান, ৩য় পর্যায়ে রায়পুরসহ জেলাতে ১৪৪২ পরিবারের মাঝে ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল । লক্ষ্মীপুরে দুই পর্বে ১৭৮৬টি ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রতিটি ঘর বাবদ খরচ হয়েছে ২ লাখ ৪১ হাজার টাকা। এসব ঘরে বিদুৎ, রাস্তা, স্যানিটারি, পানিসহ সব সুবিধার ব্যবস্থা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী রায়পুরে আশ্রয়ণ প্রকল্প-৩ এর আওতায় পরিবারদের মধ্যে নতুন ঘর উপহার দেওয়া হয়। ৩৬৪ পরিবারকে দেওয়া হয় নতুন এ বাড়ি। নতুন ঘর পাওয়া এসব ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষগুলোর চোখে মুখে এখন অনাবিল স্বপ্ন।