ঢাকা, রবিবার ১৯ মে ২০২৪, ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

রায়পুরে অবৈধ ড্রেজার ব্যবসায়ীদের দায় দলের নয়, সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ নয়ন এমপির

মোঃওয়াহিদুর রহমান মুরাদ, করেসপন্ডেন্ট : | প্রকাশের সময় : সোমবার ২২ অগাস্ট ২০২২ ০৮:২৫:০০ অপরাহ্ন | চট্টগ্রাম প্রতিদিন

লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর উপজেলা প্রশাসন এর ব্যতিক্রমী আয়োজনে ৪৭ অবৈধ ড্রেজার মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা ও সচেতনতার লক্ষ্যে বিশাল এক জনসচেতনতা সভার আয়োজন করা হয় দক্ষিণ চরবরংশী ইউনিয়নে সোমবার বিকাল ৪টায়।

 

নদীভাঙ্গন রোধ ও ফসলি জমি সুরক্ষায় ড্রেজারের অপব্যবহার রোধকল্পে, উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনজন দাশ এর সভাপতিত্বে, ২২ আগস্ট রোজ সোমবার বিকাল ৪টায়, ৮নং দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গণে জনসচেতনতামূলক সভার আয়োজন করা হয়। সভায় এ্যাডভোকেট নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়ন, সংসদ সদস্য প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। 

 

দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়ন পরিষদ মাঠে আয়োজিত সমাবেশের প্রধান অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন এমপি ছাড়াও, বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মামুনুর রশিদ, ইউএনও অনজন দাশ, এসিল্যান্ড রাসেল ইকবাল, ভাইস চেয়ারম্যান মারুফ বিন জাকারিয়া, সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন হাওলাদার, ইউপি চেয়ারম্যান মিন্টু ফরায়েজী ও আবুল হোসেন মাষ্টার সহ সাংবাদিক ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ। 

 

রায়পুর উপজেলার উত্তর চরবংশী ও দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়নে বর্ষায় চর কাছিয়া, চর ঘাশিয়া ও চরলক্ষ্মী, চর আবাবিল, চর জালিয়া, মাষ্টার ঘাট গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া মেঘনা নদীর ভাঙ্গন প্রতিরোধে ব্যবস্থা না নেওয়ায় গত এক বছরে প্রায় ২’শ বসতঘর ও ৪টি মাছের আড়ৎ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

 

সভা শুরু হওয়ার আগে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা মফিজ খাঁ বলেন, ভাঙ্গনে চরাঞ্চলের লোকজন প্রতিনিয়ত ভিটেমাটি হারানোর ভয়ে আতঙ্কের মাঝে বসবাস করছে। অব্যাহত ভাঙ্গনের ফলে ফসলি ভূমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। গৃহহারা এ মানুষগুলো এখন খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে। এ বছর বর্ষা ও টানা বর্ষণে কয়েক শতাধিক একর ফসলি জমি, বাগান, ও কয়েক’শ বসতভিটা নদীগর্ভে চলে গিয়েছিল। ভূমিহীন হয়েছে প্রায় ৩০০ পরিবার।

 

সরেজমিনে গিয়ে আজ সকালে দেখা যায়,  চরাঞ্চলের হাবিব গাজী, সৈয়দ চকিদার, রহুল আমি মেম্বার ও হুমায়ন প্রধানিয়ার মাছের আড়ৎসহ বেশ কয়েকটি দোকান মেঘনার ভাঙ্গনে চিরতরে তলিয়ে যায়। এছাড়া অনেক বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলিন হয়। ফলে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলো সবকিছু হারিয়ে এখন নিঃস্ব। কোথাও জায়গা না পেয়ে বসতভিটা হারিয়ে অনেকেই খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন।এখন হুমকিতে আছে আরও সমপরিমান পরিবার। স্থানীয় সংসদ সদস্য নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন কিছুদিন পূর্বে নদী ভাঙ্গনের চিত্র দেখেছেন। কিন্তুু ভাঙ্গনরোধে কার্যকর কোন ব্যবস্থা নেয়ার মতো পদক্ষেপ চোখে পড়েনি বলে জানান তারা।

 

 

অনুষ্ঠানের সভাপতি ইউএনও অনজন দাশ বলেন, 

সরকারের নির্দেশে নদী ভাঙ্গন রোধে অবৈধ ড্রেজার মেশিনের বিরুদ্ধে অভিযান করা হবে। ইতিমধ্যে নদীভাঙ্গনের কারনে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। যারা অতি সুখে আছেন, তারাই এই অবৈধ ড্রেজারের সাথে জড়িত। সাড়ে ৩ লক্ষ মানুষের কাছে ৪৭ জন বা ১০০ জন অবৈধ ব্যাবসায়ী কিছুইনা। অবৈধ ব্যাবসায়ীরা ৭১ এর রাজাকারের উত্তরসুরী। অবৈধ ড্রেজারের সর্বনিম্ন সাজা ২ বছর, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা। নদী ভাঙ্গন রোধকল্পে আমরা কাউকে ছাড় দিবোনা। অবৈধ ড্রেজারের শুধু তথ্য দিয়ে নয়, ধরে আটকিয়ে আমাদের খবর দিবেন। 

 

ভাঙ্গন রোধে কঠিন ব্যবস্থা নিতে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন এমপি বলেন, অবৈধ ড্রেজারের সাথে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে শনিবার থেকে প্রশাসনকে সর্বোচ্চ এ্যাকশন নেয়ার নির্দেশনা  লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য এড.নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন এমপির। এই অভিযান বা অবৈধ ড্রেজার বানিজ্যের সাথে আওয়ামীলীগ দলীয় কেউ জড়িত থাকে তার বিরুদ্ধে দল এবং প্রশাসনকে জিরো টলারেন্স দেখানোর ঘোষণা। অবৈধ ড্রেজার দিয়ে জেলা আওয়ামীলীগ -এমপি কোনদিন জড়িত ছিলো না। ৪৭ জনের নাম এসেছে তাদের বিরুদ্ধে শুক্রবারের পরেও ড্রেজার চলমান থাকলে কঠোর আইনী পদক্ষেপ জেল, জরিমানা আদায়ে প্রশাসনকে সহযোগিতার নির্দেশ দিয়েছেন এলাকাবাসী ও দলীয় নেতা - কর্মীদের