ঢাকা, শনিবার ১৮ মে ২০২৪, ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

রৌমারীতে বন্যায় ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

শৌখিন মিয়া, রৌমারী ও চর রাজিবপুর প্রতিনিধি : | প্রকাশের সময় : রবিবার ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৪:৫৮:০০ অপরাহ্ন | দেশের খবর
ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে কুড়িগ্রামের রৌমারীতে বন্যার পানিতে তলিয়ে ব্যাপক ফসলে ক্ষতি হয়েছে। বিনষ্ট হয়েছে ১ হাজার ৩২৭ হেক্টর জমির রোপা আমন বীজতলা, রোপা আমন ও শাক-সবজি ফসল। এতে ৮ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ১১ হাজার ১৭৩ জন কৃষক। 
 
উপজেলা কৃষি অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে ৮ হাজার ৩৫ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ করা হয়। বন্যার পানিতে তলিয়ে যায় ১ হাজার ৩২৭ হেক্টর জমির ফসল। এরমধ্যে ৪২৪ হেক্টর জমির ফসল সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং আংশিক ক্ষতি হয় ৯০৩ হেক্টর জমির ফসল। উৎপাদনে ক্ষতি হয়েছে মোট ১ হাজার ৭৫৫ মেট্রিক টন ফসল। যা মোট ১৭ দশমিক ৭৩ শতাংশ ক্ষতি হয়েছে। এতে ৪ হাজার ৯৮৩ জন কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এতে ক্ষতি হয়েছে ৮ কোটি টাকা।
 
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, রৌমারী উপজেলার চরশৌলমারী ইউনিয়নের চর গেন্দার আলগা, ঘুঘুমারী, সুখেরবাতি, নয়াপাড়া, খেদাইমারী, পশ্চিম খেদাইমারী ও মশালের চর, যাদুরচর ইউনিয়নের যাদুরচর চাক্তাবাড়ি, যাদুরচর নতুনগ্রাম, যাদুরচর নতুনগ্রাম আদর্শ পাড়া, ধনারচর হাট খোলাপাড়া, গোলাবাড়ি আকন্দপাড়া, ধনারচর কাটিয়ামারী ধনারচর চরেরগ্রাম, ধনারচর নতুনগ্রাম, ধনারচর পশ্চিমপাড়া, কোমড়ভাঙ্গি পুরাতনপাড়া ও বন্দবের ইউনিয়নের ফলুয়ারচর, বাঘমারা, পালেরচর, বলদমারা এলকার ১ হাজার ৩২৭ হেক্টর জমির রোপা আমন বীজতলা, রোপা আমন ও শাক-সবজি ক্ষতি হয়েছে।
 
রৌমারীর যাদুরচর ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য ও কৃষক আব্দুল বাতেন বলেন, তিনি ১ বিঘা ২১ শতাংশ জমিতে আমন রোপণ করেছিলেন। বন্যার পানিতে তলিয়ে গিয়ে সমস্ত ফসল নষ্ট হয়েছে তার।
 
চরশৌলমারী ইউনিয়নের খেদাইমারী এলাকার রাসেল মন্ডল বলেন, তিনি ৬ বিঘা জমিতে রোপা আামন রোপণ করেছিলেন। কিন্তু বন্যার পানিতে সম্পূর্ণ জমি তলিয়ে গিয়ে ফসল নষ্ট হয়েছে।
 
চরশৌলমারীর সুখেরবাতি গ্রামের কৃষক আমির হামজা জানান, তার ৪ বিঘা জমিতে রোপা আমন রোপণ করেন। কিন্তু বন্যার পানিতে তলিয়ে সব ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। এ নিয়ে হতাশায় ভুগছেন তিনি।
 
যাদুরচর ইউনিয়নের ধনারচর নতুনগ্রাম আদর্শপাড়া গ্রামের দুলাল হোসেন বলেন, তার ৩ বিঘা জমিতে আমন লাগিয়েছেন। কিন্তু সব ফসল বন্যার পানিতে ডুবে নষ্ট হয়ে গেছে। 
 
রৌমারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে নদীর পানি বৃদ্ধিতে ফসলের ক্ষতি হয়েছে। তার ভাষ্য, তিনি সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণ করে ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে। আগামী দিনে এসব ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের একটি পুনর্বাসন ও প্রণোদনার আওতায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে বলেও জানান তিনি।