ঢাকা, শনিবার ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ২৭শে পৌষ ১৪৩১

লক্ষ্মীপুরে বোরো ধান উৎপাদনে বাম্পার ফলন, ন্যায্য দামে বিক্রির আশা

মু.ওয়াহিদুর রহমান মুরাদ,লক্ষ্মীপুর । | প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার ৯ মে ২০২৩ ০৭:৪১:০০ অপরাহ্ন | দেশের খবর

 

 
লক্ষ্মীপুরে বোরো ধানের ভালো দাম পাওয়ায় এটি আবাদের দিকে ঝুঁকছেন কৃষকরা। এবার কোনো জমি অনাবাদি থাকবে না বলে আশা করেন তারা।
 
লক্ষ্মীপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এবার জেলার ৫টি উপজেলায় বোরো ধানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিলো ৩৭ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে, যা গত বছরের চেয়ে ৫ হাজার হেক্টর বেশি।
 
চররুহিতার চরমণ্ডল গ্রামের কৃষক আজাদ হোসেন জানান, এবার ধানের দাম ভালো পাওয়া গেছে। এতে চাষিরা খুবই খুশি। সার-কীটনাশকের দাম বেশী ছিল তবে দাম নাগালের ভেতরেই ছিলো ।
 
২০২১ সালেও ধান চাষ করে লোকসান হওয়ায় ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত ছিলেন চাষিরা। কিন্তু গত দুই বছর ধরে প্রতি মণ ধানে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা লাভ হওয়ায় চাষাবাদ বাড়িয়েছেন তারা। যদি সামনে ধানের দাম এভাবে থাকে, তাহলে লোকসান না হওয়ার আশা করেন কৃষকরা।
 
রামগতির কৃষক মাইনুল ইসলাম জানান, গত বছর এক একর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করেন তিনি। দাম ভালো পেয়েছেন। তাই চলতি বছরে দুই একর জমিতে বোরো আবাদের প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি।
 
রায়পুরের চরবংশীর কৃষক মনির হোসেন ও দুলাল হোসেন এর সঙ্গে কথা হয় তারা জানান, সরকার যদি কৃষকের দিকে তাকিয়ে সামনে খরচ অনুযায়ী ধানের দাম আরও বাড়িয়ে দেয় তাহলে কৃষক বাঁচবে, আর কৃষক বাঁচলে দেশের খাদ্য সংকট না হওয়ার আশা এখানকার চাষিদের।
 
কৃষি কর্মকর্তা তহমিনা খাতুন বলেন, আগে দাম কম হওয়ায় কৃষকরা ধান আবাদ বাদ দিয়ে অন্য ফসল লাগাত। কিন্তু গত দুই বছরে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন ও দাম ভালো পাওয়ায় ধানের চাষাবাদ বাড়ছে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি আবাদের আশা করছে জেলা কৃষি বিভাগ।কৃষকদের সরকারিভাবে বীজ ও সার দিয়ে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হয়। এ বছর রায়পুর উপজেলায় বোরোর লক্ষমাত্রা ছিলো ১০৩৬৬ হেক্টর জমি এবং উৎপাদন হয়েছে ৫৯ হাজার মেট্রিক টন। ধানের বীজতলা থেকে বোরো ধান রোপণ করা পর্যন্ত এখনো কৃষকের কোনো ক্ষতি হয়নি। উঁচু জমিতে এ ধান চাষ কারা ভালো। আমরা ধান রোপণের জন্য কৃষকদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছি এবং কৃষি বিভাগ কৃষকদের আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতি সম্পর্কে অবহিত করছে।তিনি আরো বলেন, পোকা দমনে অধিক পরিমাণে কীটনাশক ব্যবহার করে চাষিরা। এতে প্রকৃতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। তাই আবাদ করা জমিতে ‘পাচিং’ পদ্ধতি অবলম্বন করে পোকা-মাকড় দমনে কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এতে ফসল উৎপাদনে খরচ কম হয়। বর্তমানে কৃষকরা হাইব্রিড (উন্নত ফলনশীল) জাতের ফসলের দিকে ঝুঁকছেন বেশি। আশা করি সামনের বছরগুলোতে বোরো ধানের উৎপাদন বাড়বে। আমাদের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা সব সময় কাজ করছেন।
 
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘গত দুই বছরে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন ও দাম ভালো পাওয়ায় ধানের চাষাবাদ বাড়ছে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি আবাদের আশা করছেন। এতে করে চাষিদের লোকসানের মুখে পড়তে হয়নি। তাই এবার কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে বোরো ধান চাষে কৃষকদের সব বিষয়ে পরামর্শ দেয়া হয়েছে ।