শিশু অপহরণের হুমকি দিয়ে বগুড়া জেলার কাহালু উপজেলার বিভিন্ন বাড়ির গেট ও দেয়ালে পোষ্টারিং করে চাঁদা দাবি করা হয়েছে। এতে করে ওই এলাকায় সাধালণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। উপজেলার মুরইল ইউনিয়নের বিষ্ণুপুর গ্রামের প্রায় দ’ু শতাধিক বাড়ির গেটে পরিবারের শিশুদের অপহরণ থেকে বাঁচাতে বিভিন্ন অংকের টাকা চাঁদা দাবি করে চিঠি সাটিঁয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। রবিবার ভোরে ঘুম থেকে উঠেই বাড়ির দেয়াল ও গেটে সাঁটানো এই চিঠি দেখে লোকাজনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে লোকজনকে আশ^স্ত করার সঙ্গে আতঙ্কিত না হওয়ার আহবান জানিয়েছে।
এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাদের গ্রামে এধরনের ঘটনা আগে ঘটেনি। এলাকায় সাধারণ নিম্ম আয়ের লোকজনের বসবাস বেশি। বিষ্ণুপুর গ্রামের ৪টি পাড়া- মন্নাপড়া, মিস্ত্রী পাড়া, মজাগাড়ি ও দপ্তরি পাড়ার লোকজন ঘুম থেকে জেগে উঠে দরজা খুলেই দেখতে পান দরজা ও দেয়ালে চিঠি। এতে সালাম দিয়ে বলা হয়েছে-‘৭ তারিখ থেকে আপনাদের ছেলে মেয়ে হারায় গেলে, কিছু করার থাকবে না’। ‘অল্প কিছু টাকার জন্য বাচ্চাদের বিপদে ফেলবেন না’। এধরনের কথা বলে বিভিন্ন অংকের টাকা চাওয়া হয়েছে। এর পরিমান ২শ থেকে ৬ হাজার টাকা পর্যন্ত। নির্দিষ্ট স্থানে বাক্স থাকবে বলে চিঠিতে জানিয়ে টাকার সঙ্গে নাম লিখে দেয়ার কথা বলা হয়। কম্পিউটার প্রিন্টে করা এই চিঠিতে টাকা না দিলে শিশুদের অপহরনের হুমকি দেয়া হয়। চিঠির নিচে লেখা রয়েছে ‘শ্যাডো’। বাড়ি বাড়ি চিঠি সাঁটিয়ে দেয়ার ঘটনায় পুরো গ্রাম জুড়ে শোরগোল পড়ে যায়। অভিভাবকদের মধ্যে দেখা দেয় আতঙ্ক। অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাননি। শাহীদুল ইসলাম নামের এক ব্যবসায়ী জানালেন তার বাড়িতে ছেলে মেয়ে রয়েছে। চিঠি পাওয়ার পর তাদের বাড়ির বাইরে যেতে মানা করছেন। এমনি অবস্থা গ্রাম জুড়ে। এলাকার ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল জানালেন, বিষয়টি এলাকায় আতঙ্ক সৃস্টি করেছে। প্রায় ৩শ’ বাড়ির দেয়াল ও গেটে চিঠি সাঁটিয়ে দিয়েছে কোন চক্র। এলাকার ইউপি মেম্বার জাহিদুর রহমান জানালেন, লোকজন বাচ্চাদের বাড়ি ঘরের বাইরে যেতে দিচ্ছেনা।
এঘটনার খবর পেয়ে বগুড়া জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আব্দুর রশিদ ও কাহালু-নন্দীগ্রামের দায়িত্ব অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজরান রউফ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। সেখানে পুলিশের একটি টিম মোতায়েন রয়েছে। এ ব্যাপারে কাহালু থানার ওসি মাহমুদ হাসান জানিয়েছেন তারা খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে যান। সেখানে লোকজনকে আশ^স্ত করা হয়েছে। এলাকার মসজিদের মাইকে লোকজনকে আতঙ্কিত না হওয়ার আহবান জানান হয়েছে।
থানা পুলিশের ধারনা নেশাসেবনকারী কোন চক্র এই চিঠি দিয়েছে। তবে এর পরেও লোকজনের মন থেকে আতঙ্ক কাটছে না।