ঝিনাইদহের শৈলকুপায় মাদক বিক্রিতে বাধা দেওয়ায় জাফর আহমেদ (৫০) নামের এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগের পর ভুক্তভোগী পরিবারের স্বজনদের অভিযুক্ত মুক্তার হোসেন জীবনাশের হুমকি দেওয়ায় আতঙ্কে রয়েছে পুরো পরিবার। এর আগে গত বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকালে উপজেলার উমেদপুর ইউনিয়নের গাড়াখোলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আহত জাফর আহমেদ শৈলকুপা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দুইদিন চিকিৎসা নিয়ে শনিবার (২১ ডিসেম্বর) রাতে বাড়িতে ফিরেছেন।
জাফর আহমেদ গাড়াখোলা গ্রামের ইউসুফ আলীর ছেলে। তিনি কৃষিযন্ত্র মেরামতের কাজ করেন। অভিযুক্ত মুক্তার হোসেন একই গ্রামের মৃত মান্দার হোসেনের ছেলে।
আহত জাফর আহমেদ জানান, গত বৃহস্পতিবার বিকালে গাড়াখোলা গ্রামের আলমের ছেলে স্কুল পড়ুয়া আজমির একই গ্রামের মুক্তার হোসেনের কাছে গাজা কিনতে আসে। এসময় তিনিসহ ওই গ্রামের মুস্তাইন বিল্লা ইমন, আলী হোসেন, রাজ্জাক বিশ্বাস ও রাজু আহম্মেদ গাজা বিক্রি করতে বাধা দেন। এতে মুক্তার হোসেন ও তার পরিবারের সদস্যরা ক্ষিপ্ত হয়ে তার ওপর দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করে। এসময় তারা তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করে। পরে প্রতিবেশি ও স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
আহত জাফর আহমেদের ছেলে মুস্তাইন বিল্লাহ ইমন বলেন, ‘মুক্তার হোসেন এলাকায় একজন মাদক বিক্রেতা হিসেবে পরিচিত। এর আগে কয়েকবার পুলিশ মাদকসহ তাকে গ্রেপ্তার করেছে। এছাড়া মাদক বিক্রিতে এলাকাবাসী বিভিন্ন সময়ে একজোট হয়ে প্রতিবাদ করেছে, বিভিন্ন মহলে অভিযোগও দিয়েছে। আমার বাবা বাধা দেওয়ায় তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালায়। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দেওয়ায় আমাদের পরিবারের সদস্যদের হত্যার হুমকি দিচ্ছে। এতে আমরা আতংকে আছি।’
স্থানীয় যুবক মোহাম্মদ আলী শিকদার বলেন, ‘মাদকের বিরুদ্ধে আমরা স্থানীয়রা সামাজিকভাবে এলাকায় প্রতিরোধ গড়ে তুলেছি। অথচ মুক্তার হোসেন মাদক বিক্রি করে যুবসমাজকে ধ্বংস করছে। তার বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগও দেওয়া হয়েছে। এসব ঘটনার পর থেকে আমাকেও হত্যার হুমকি দিচ্ছে। আমরা সবাই জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’
স্থানীয় ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান বলেন, ‘জাফর আহমেদের ওপর হামলার ঘটনায় সালিশ বৈঠকের কথা চলছিল। কিন্তু বিএনপি নেতা মোস্তাফিজুর রহমান তুর্কি অভিযুক্ত মুক্তারের পক্ষ নিয়ে সালিশ বন্ধ করে দিয়েছে। মুক্তার এলাকায় মাদক বিক্রেতা হিসেবে পরিচিত। আমরা এলাকাবাসী তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছি।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত মুক্তার হোসেনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তা বন্ধ পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্ত (ওসি) মাসুম খান বলেন, ‘একটি অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনাটির তদন্ত করে শীঘ্রই অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বায়ান্ন/প্রতিনিধি/পিএইচ