বিগত ২০১৪ থেকে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১১ বছরে দেশে ৬০ হাজার ৯৮০টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১ লাখ ৫ হাজার ৩৩৮ জন নিহত এবং ১ লাখ ৪৯ হাজার ৮৪৭ জন আহত হয়েছে।
সোমবার (২১ অক্টোবর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস ২০২৪’ উপলক্ষ্যে ‘সড়ক সেক্টরে সীমাহীন অব্যবস্থাপনা: দায়িত্ব নেবে কে?’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এই প্রতিবেদন তুলে ধরেন বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এই সময়ে গণপরিবহন সংকটে মোটরসাইকেলে যাতায়াতের কারণে ২০ হাজার ১২৪টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ৩৭ হাজার ৫৫৩ জন নিহত এবং ৪৬ হাজার ১৬৭ জন আহত হয়েছ। যা মোট নিহতের ৩৯.৬৫ শতাংশ। সড়কে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ২ লাখ ৫৫ হাজার ১৮৫ জনের মধ্যে ৭৫ হাজার ৮৮৪ জনের পরিচয় মিলেছে। যার মধ্যে ১৪ হাজার ৯২৮ জন চালক এবং ১৭ হাজার ১৫০ পথচারী। এদের মধ্যে ৭ হাজার ৩৩২ জন পরিবহন শ্রমিক ৮ হাজার ৮০১ জন শিক্ষার্থী, ১ হাজার ৫৯৩ শিক্ষক এবং ৫১৪ জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য৷
এছাড়া এদের মধ্যে ১২ হাজার ১০৯ জন নারী, ৮ হাজার ৬৭ শিশু, ৫৫৯ সাংবাদিক, ৪৩০ চিকিৎসক, ২৯৪ বীর মুক্তিযোদ্ধা, ৫৫ শিল্পী, ৩৬১ আইনজীবী ও ৩৩০ প্রকৌশলী এবং ৩ হাজার ৪১৬ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী হতাহত হয়েছে।
সংগঠনের মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, দেশের ইতিহাসে সড়ক মন্ত্রণালয়ের একযুগেরও বেশি সময়ের মন্ত্রী হিসেবে ওবায়দুল কাদের পরিবহনে বিশৃঙ্খলা, অরাজকতা, ভাড়া নৈরাজ্য, সড়কে চাঁদাবাজি, মানসম্মত গণপরিবহন নামানো, অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধে চরমভাবে ব্যর্থতার কারণে সড়কে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ধারাবাহিকভাবে বেড়েছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সরকার পরিবর্তন পরেও সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিআরটিএ’তে ওবায়দুল কাদেরের প্রেতাত্মারা পদে পদে বসে আছে। এখনো তারা সড়কে গণহত্যা বন্ধে, যানজট ও দুর্ঘটনা কমানো, সড়কে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। সড়কের চাঁদাবাজরা পালিয়েছে, জ্বালানি তেলের দাম কমেছে কিন্তু পরিবহন ভাড়া কমছে না। পণ্যমূল্য কমছে না।
তিনি আরও বলেন, সড়ক মন্ত্রণালয়, বিআরটিএ’সহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোতে ওবায়দুল কাদেরের আশীর্বাদপুষ্ট কতিপয় দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা শতশত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। তারা মন্ত্রণালয় ও বিআরটিএকে পকেটে নিয়ে ঘুরেন। এখানো সেই ধারা অব্যহত রয়েছে। তারা বিগত সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়নে তৎপর। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন সড়কে ভয়াবহ যানজট ও বিশৃঙ্খলা থামাতে না পারলে বর্তমান সরকারকে ভয়াবহ খেসারত দিতে হবে। পরিবহন খাত জঞ্জালমুক্ত করতে হলে এইখাতের আপদমস্তক সংস্কার প্রয়োজন।
তাই অন্যান্য জরুরী জনগুরুত্বপূর্ণ খাতের মত পরিবহন খাত সংস্কার কমিশন গঠন করার দাবি জানান তিনি।
বায়ান্ন/একে