ঢাকা, শনিবার ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ২৮শে পৌষ ১৪৩১

গভীর রাতে ঘরের জানালা খুলে নারীদের ভিডিও ধারণ, আতঙ্কে গ্রামবাসী

আর আই রাজিব: | প্রকাশের সময় : সোমবার ১ মে ২০২৩ ০৪:১৬:০০ অপরাহ্ন | দেশের খবর

 
রাতেরবেলা ঘরের জানালা খুলে ঘুমিয়ে পড়লে মোবাইল ফোনে নারীর অসংলগ্ন ভিডিও ধারণ করার খবরে আতঙ্কিত ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ। অনেকের গায়ে সরাসরি হাত দেয়ার খবরও পাওয়া গেছে।
গত ২৩ এপ্রিল ঈদের দিন রাতে উপজেলার নিত্যানন্দপুর ইউনিয়নের সাফখোলা গ্রামের এক বাড়িতে ভিডিও ধারণের সময় একজনকে হাতেনাতে ধরতে গেলে ফোন ফেলে পালিয়ে যায় সেই দুস্কৃতিকারী। পরে তার মোবাইল ফোনে গ্রামের বিভিন্ন বয়সী নারীর নগ্ন ও অর্ধনগ্ন ভিডিও পাওয়া যায়। তবে এ ঘটনায় এখনো কেউ  গ্রেফতার হয়নি এবং তার পরিচয় পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে পুলিশ তৎপর হলেও থানায় কোনো মামলা হয়নি।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, এক বছর ধরে গ্রামে গভীর রাতে হাজির হতো এক যুবক। নারীরা ঘুমিয়ে পড়লে তাদের ছবি তোলা ও ভিডিও করা হতো। এমনকি জানালা দিয়ে গায়ে হাত দেয়া কিংবা পাটকাঠি দিয়ে শরীরে খোঁচা দেয়া হতো। পরে টের পেয়ে নারীরা চিৎকার দিলেই দৌড়ে পালিয়ে যেত সে।
গ্রামের নয়ন নামের এক ব্যক্তি জানান, দীর্ঘদিন ধরে এমন ঘটনা ঘটতে থাকলে গ্রামের যুবকরা বিষয়টি আমলে নেয়। পরে ঈদের দিন রাত ৩টার দিকে তার মেজ ভাইয়ের ঘরের জানালা দিয়ে ভিডিও করার চেষ্টা করলে ভাইয়ের ঘুম ভেঙে যায়। এ সময় ভিডিও ধারণকারীর হাতে আঘাত করলে মোবাইলটি ঘরের মধ্যে পড়ে যায় এ সময় ওই ব্যক্তি দৌড়ে পালিয়ে যায়। তবে তার মুখ গামছা দিয়ে বাঁধা ছিল।
তিনি বলেন, পরে মোবাইল চেক করে দেখা যায় গ্রামের অধিকাংশ পরিবারের মেয়ের রাতে শুয়ে থাকার ভিডিওসহ আরও অনেক ভিডিও গোপনে ধারণ করা রয়েছে। উদ্ধার হওয়া মোবাইলটি কার সে তথ্যও এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।

গ্রামের বেশ কয়েকজন নারী জানান, রাতে ঘুমালে জানালায় এসে ফোনের আলো দেয়, অনেক সময় পাটকাঠি দিয়ে আমাদের শরীরে খোঁচা দেয়। এতে চিৎকার দিলে সে পালিয়ে যায়,কাউকে ধরা যায় না। অনেক মেয়ে ভয়ে রাতে এখন ঘুমাতে পারে না।
এদিকে ওই মোবাইল ফোনে গ্রামের এক কিশোরের সিমকার্ড পাওয়া গেছে। ঝিনাইদহের ডিবি পুলিশ ওই কিশোরকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়ে দিয়েছে। তবে সেই সিমকার্ড কিছুদিন আগে সে এক কলেজছাত্রকে দিয়ে দেয় বলে জানায়।
এ বিষয়ে ওই কিশোর আরো জানায়, ওই মোবাইল ফোনে পাওয়া সিমকার্ডটি আমার।  গ্রামের এক কলেজছাত্র কিছুদিন আগে আমার কাছ থেকে  নিয়েনেয়।
এ বিষয়ে জানতে ওই ছাত্রের বাড়িতে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। তার পরিবারের সদস্যরাও এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
নিত্যানন্দপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আবু তাহের বলেন, সাফখোলা গ্রামটিতে এখন আতঙ্ক বিরাজ করছে। রাতে মা-মেয়েরা ইচ্ছামতো ঘুমিয়ে থাকে। তাদের ছবি তোলা মোটেও ঠিক নয়। এ ঘটনার পর থেকে এলাকার কেউ ঠিকমতো রাতে ঘুমায় না। আমি শৈলকুপা থানাকে বিষয়টি জানিয়েছি।
শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম বলেন, আমি ঘটনা শুনেছি। বিষয়টি খুবই আপত্তিকর। আমরা প্রকৃত অপরাধীকে খুঁজে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করছি। তবে এখনো থানায় কোনো মামলা হয়নি।