ঢাকা, শুক্রবার ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩ই পৌষ ১৪৩১
টার্গেট আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন

চট্টগ্রামে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন ব্যারিস্টার মীর হেলাল

এনামুল হক লিটন, চট্টগ্রাম | প্রকাশের সময় : শুক্রবার ৬ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৭:০৬:০০ অপরাহ্ন | দেশের খবর

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তৃণমূল পর্যায়ে দলকে শক্তিশালী করে তুলতে চট্টগ্রামে মাঠ পর্যায়ে সড়ব রয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির কেন্দ্রিয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন। তিনি প্রাক্তন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) সাবেক মেয়র মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিনের ছেলে।

চলতি বছরের ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর নতুন করে যেন প্রান ফিরে পেয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি এবং দলীয় ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো। এরই অংশ হিসেবে এবং রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতে বিএনপির ৩১ দফা বাস্তবায়নে চট্টগ্রামে মাঠ পর্যায়ে কাজ করে যাচ্ছেন ব্যারিষ্টার মীর হেলাল।

দলীয় সূত্র জানায়, বিগত শেখ হাসিনা সরকারের শাসনামলে দীর্ঘ দেড়যুগের বেশী সময় ধরে বিএনপির নেতাকর্মীদের গায়েবি মামলা ও হামলা সহ্য করেই দিন কাটাতে হতো তাদের। ফলে বছরের পর বছর নিজ নিজ এলাকায় বা ঘরে থাকতে পারতো না এমন নেতাকর্মীদের সংখ্যাও অনেক। ওই সময়েও কর্মীদের খোঁজ খবর নিয়েছেন মীর হেলাল।

সূত্রমতে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-৫ সংসদীয় আসনের (হাটহাজারী ও বায়েজিদ আংশিক) সংসদ সদস্য প্রার্থী হবেন তিনি। এ লক্ষ্যে তিনি চলতি মাসে এবং গত নভেম্বর মাসে হাটহাজারিতে বেশ কয়েকটি সভা-সমাবেশ করেছেন।

এছাড়া চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি নেতৃবৃন্দের সাথে তিনি মাঠ পর্যায়ে সড়ব রয়েছেন। গত ৩ নভেম্বর চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আওতাধীন সব কয়টি থানা ও ওয়ার্ড কমিটি বিলুপ্ত করার পর সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটিগুলো পুনর্গঠনের ঘোষনায় থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়েয় নেতাকর্মী এবং নতুন পদ প্রত্যাশীদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দিপনা ও মাঠ পর্যায়ে বেশ চাঙ্গাভাব দেখা দিয়েছে।

চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির প্রথম সভায় থানা ও ওয়ার্ডের সব কমিটি ভেঙে দেয়ার সিদ্ধান্তের পর বিএনপির মহানগর কেন্দ্রিক যেকোনো অনুষ্ঠানে হাজির হচ্ছে থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ের বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠন সমুহের নেতাকর্মী এবং পদ প্রত্যাশীরা।

জানা গেছে, গত ৪ নভেম্বর চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির ৫৩ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কমিটিকে কেন্দ্র থেকে অনুমোদন দেওয়া হয়। এর আগে গত ৭ জুলাই এরশাদ উল্লাহকে আহ্বায়ক ও নাজিমুর রহমানকে সদস্য সচিব করে সেখানে আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল।

ওই কমিটিতে আগের কমিটির অনেক নেতাকে বাদ দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ উঠেছে, আগের কমিটির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন ও সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্করের ঘনিষ্ঠ অনেক নেতাকে বাদ দিয়ে ওই কমিটি করা হয়েছে। তবে বিষয়টি এমন নয় জানিয়ে নগর বিএনপির আহবায়ক এরশাদ উল্লাহ বলেন, সবাই ত্যাগী। কিন্তু সবাইকে তো আর পদ দেওয়া য়ায়না।

দলীয় সূত্র জানায়, তরুণ নেতা ব্যারিষ্টার মীর হেলাল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির চেয়ারপারসনের ঘনিষ্ঠ হিসেবে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের নজর কাড়ছেন। ফলে বর্তমান নেতৃত্বের অনেক নেতাকর্মিরা তাঁর সাথে মাঠে সড়ব থাকছেন।

মীর হেলালের ঘনিষ্ঠ একজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, কেন্দ্র এখন মীর হেলাল ভাইয়ের কথাকে গুরুত্ব দিচ্ছেন বেশী, তাই নেতাকর্মিরা এখন হেলাল ভাইমূখী।

দলীয় একটি সূত্র জানায়, বর্তমান নগর বিএনপির নতুন কমিটির দুজনই বেশি ঘনিষ্ঠতা রাখছেন মীর হেলাল উদ্দিনের সঙ্গে। ডা. শাহাদাত হোসেন ও আবুল হাশেম বক্করের অনুসারীরা কমিটিতে কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন। তবে ডা. শাহাদাত সদ্য চট্টগ্রাম সিটির মেয়রের দায়িত্ব নেওয়ার পর সেটিকে ঘিরে অনেকটা চাঙ্গা এই অংশটি।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে মহানগর বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর বলেন, ‘কমিটির বিষয়ে কোনো কথা বলতে চাই না। দল যেটা ভালো মনে করেছেন সেটা করেছে।’

এ প্রসঙ্গে মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান বলেন, অনেকের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকায়ও বাদ পড়েছে কেউ কেউ।’

এদিকে স্থানীয় পর্যায়ে বহিষ্কার আতঙ্কে ভুগছে দলটির নেতাকর্মীরা। এরই মধ্যে বিভিন্ন অভিযোগে বেশ কয়েকজনকে চট্টগ্রাম বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। কারও বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ উঠলে তাকে বহিষ্কার করা হচ্ছে কেন্দ্র থেকে।

এ প্রসঙ্গে বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক (চট্টগ্রাম বিভাগ) ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল হেলাল উদ্দিন বলেন, আমাদের মধ্যে কেউ যেন কোনো অপরাধের সাথে জড়িত না হয় সেদিকে সবাইকে নজর রাখতে হবে।

রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতে বিএনপির ৩১ দফা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রাষ্টীয় কাঠামো সংস্কারের অগ্রগতি দৃশ্যমান না হলে জনমনে অসন্তোষ তৈরির সম্ভাবনা রয়েছে। সংস্কারের সময়কাল নির্ধারণ করা না হলে, লক্ষ্যে পৌঁছানো ক্রমান্বয়ে কঠিন আকার ধারণ করবে। দুই সহস্রাধিক শহীদের রক্তে অর্জিত বিপ্লব সফল করতে বিএনপি বদ্ধপরিকর।

বায়ান্ন/প্রতিনিধি/একে