জাল জালিয়াতির কারবার কম বেশি সকল বিভাগেই আছে বৈ কি! তাই বলে শিক্ষা বিভাগে জাল জালিয়াতি? বিষয়টি কেমন জানি লাগছে। যাই হোক- জাল জালিয়াতির তালিমটাই এখন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে চলছে। বিশ্বাস না হলে সাময়িক, সেমিষ্টার, বার্ষিকসহ বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষার দিকে নজর দিন। একটু চোখ কান খোলা রাখলেই তার প্রমাণ পেয়ে যাবেন। আর যদি তা না পান তাহলে বড়ই আফসোস ও পরিতাপের বিষয় যে, আপনি চোখ থাকতে অন্ধ আর কান থাকতেও বধির। আসল কথায় আসি- কিছুদিন আগে জাতীয় দৈনিক আমাদের বার্তা নামক পত্রিকা ও অনলাইন দৈনিক শিক্ষা ডট কম- এ দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত জাল সনদধারী শিক্ষকদের তালিকা প্রকাশ করেছে। তালিকায় অন্যদের সাথে জামালপুর সদর উপজেলার দিগপাইত ইউনিয়নের দিগপাইত ধরণী কান্ত বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (সমাজ) জেসমিন, সহকারী শিক্ষক (কম্পিউটার) ওয়াসিম উদ্দিন ও পার্শ্ববর্তী ছোনটিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (কম্পিউটার) সুরাইয়া আক্তার এর নাম রয়েছে। শিক্ষক জেসমিনের শিক্ষক নিবন্ধন সনদটিই অন্য একজনের। অর্থাৎ রিনা রাণী সরকার নামক একজনের সনদ ব্যবহার করে চাকরি করে আসছে। আর শিক্ষক ওয়াসিম উদ্দিন ও সুরাইয়া আক্তারের কম্পিউটার সনদ জাল। অর্থাৎ তারা দু’জনই অবৈধ পন্থায় পাওয়া সনদে চাকরি করে আসছে। এবিষয়ে জানতে চাইলে- শিক্ষক জেসমিনের সাফ কথা, তার সনদের বিষয়ে যে সমস্যা ছিল তা সংশোধন করা হয়েছে। শিক্ষক ওয়াসিম উদ্দিনের যুক্তি, যেহেতু শিক্ষা বিভাগ তাদের বিরুদ্ধে কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়নি। সেহেতু জাল সনদ বলা যাবে না। অপরদিকে শিক্ষক সুরাইয়া আক্তারের বক্তব্য, ২০১৭ সালে এ নিয়ে কিছু সমস্যা ছিল। তখন টাংগাইলের দুদক অফিস তাকে ডেকেছিল। তখন তার স্বামী টাংগাইল গিয়ে সমস্যার সমাধান করে এসেছে। এখন আগের বিষয়টিই ভুল করে নতুনভাবে আমাদের বার্তা ও দৈনিক শিক্ষা ডট কম প্রকাশ করেছে। সুরাইয়া আক্তারের স্বামী আলী আহাম্মদ ওরফে মুক্তা মাস্টার বলেন, ২০১৭ সালে সমস্যা দেখা দিয়েছিল। তখনই তা সংশোধন করে তার প্রতিবেদন বিদ্যালয়ে জমা দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে ছোনটিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল লতিফ জানান, জাল সনদধারী শিক্ষকের তালিকায় সুরাইয়া আক্তারের নাম আছে এটা ঠিক। এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে- সংশোধিত কোন প্রতিবেদন বিদ্যালয়ে জমা দিয়েছে কি না তা তিনি জানেন না। তবে এ বিষয়ে ওই শিক্ষকের বেতন বন্ধ রয়েছে। দিগপাইত ধরণী কান্ত বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান (মিন্টু) জানান, শিক্ষক ওয়াসিম উদ্দিন ও জেসমিন এর বেতন বন্ধ রয়েছে। শিক্ষা সচেতন মহলের দাবি- শিক্ষা বিভাগ জাল সনদধারী শিক্ষকদের বিরুদ্ধে কঠিন সিদ্ধান্ত নিলে শিক্ষায় বৈষম্য দূর করা অনেকটাই সম্ভব হবে।