ঢাকা, মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

দেশে ১০ বছরে হাজার কোটি টাকার অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার

নিজস্ব প্রতিবেদক : | প্রকাশের সময় : রবিবার ১৯ জুন ২০২২ ০৯:৩৮:০০ অপরাহ্ন | জাতীয়

মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ার মো. রুহুল আমিন রিপন থাকেন রাজধানী ঢাকার পল্লবীতে। মিরপুর-পল্লবী এলাকায় অস্ত্র বিক্রির জন্য নিয়োজিত তিনি। এ কাজ করছেন এক বছরের বেশি সময় ধরে। গত ১৯ এপ্রিল অস্ত্র ও গুলি বিক্রির সময় ধরা পড়েন পুলিশের হাতে। একটি বিদেশি পিস্তল ও ১২ রাউন্ড গুলিসহ রিপনকে আটক করে পল্লবী থানা পুলিশ।

পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবিসহ প্রতিটি সংস্থার অভিযানেই এভাবে অবৈধ অস্ত্রসহ আটক হচ্ছে চোরাকারবারিরা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কঠোর নজরদারি ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির অভাবেই দেশে আসছে অবৈধ অস্ত্র। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দাবি, প্রতিনিয়ত নিত্যনতুন কৌশল অবলম্বন করছে চোরাকারবারিরা। অস্ত্র কারবারিদের ধরতে নিয়মিত অভিযানও চালান তারা।

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) দেওয়া তথ্য মতে, গত ১০ বছরে এসএমজি একটি, রাইফেল পাঁচটি, রিভলবার ৫৮টি, পিস্তল ৫৫৪টি, বন্দুক ৬৪৬টি, গোলাবারুদ ১৮ হাজার ৪৭০টি, ম্যাগাজিন ৪৯৬টি, আর্টিলারি, মর্টার, রকেট শেল ৯৪টি, বোমা ১৩৭টি, ককটেল ২৭১টি, গানপাউডার ১ হাজার ২৮ কেজি উদ্ধার হয়েছে। মালিক ও মালিকবিহীন অবৈধ এসব অস্ত্র-গোলাবারুদ উদ্ধার করতে গিয়ে দেশের বিভিন্ন থানায় সাতশর বেশি মামলা করে বিজিবি। এসব মামলায় ২২০ জন আসামিকে আটক করে থানায় হস্তান্তর করেছে তারা। যেসব অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে তার বাজারমূল্য প্রায় হাজার কোটি টাকা।

অবৈধ অস্ত্র চোরাচালান বন্ধের কোনো সুষ্ঠু ব্যবস্থা রয়েছে কি না জানতে চাইলে বিজিবির অপারেশন বিভাগের পরিচালক লে. কর্নেল ফয়জুর রহমান বলেন, অপরাধের ধরন ও কৌশলভেদে নতুন নতুন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হয়। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত এলাকা দিয়ে চোরাকারবারিরা নিত্যনতুন কৌশল অবলম্বন করে অস্ত্র চোরাচালান করে দেশের বিভিন্ন স্থানে সেই অস্ত্র সরবরাহ করছে। চোরাচালানিদের পেছনে আন্তর্জাতিক চোরাচালান নেটওয়ার্কও রয়েছে। সীমান্তে বিজিবির গোয়েন্দা নজরদারি ও টহল তৎপরতার বিষয়টিও অবস্থা অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন হয়।

সীমান্ত এলাকায় বিজিবির নজরদারির অভাব কিংবা অন্য কোনো কারণ আছে কি না জানতে চাইলে বিজিবির এই কর্মকর্তা বলেন, নজরদারির অভাব রয়েছে বলে মনে হয় না। সব সময়ই বিজিবির নজরদারি থাকে। ফলে অবৈধ অস্ত্র মালিকবিহীন অবস্থায়ও উদ্ধার করা হয়‌‌। প্রতিবছরই আমরা অনেক অস্ত্র উদ্ধার করতে পারছি। বিজিবির সদস্যদের সম্পৃক্ততার বিষয়টি কখনো আমাদের নজরে আসেনি। সেই সুযোগও নেই। এমনটা হলে নিশ্চয়ই আইনগত ব্যবস্থা রয়েছে। আমরা চাই অবৈধ অস্ত্র চোরাচালান স্থায়ীভাবে বন্ধ করার।‌ আমাদের গোয়েন্দা সংস্থা ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান এ বিষয়ে বদ্ধপরিকর।