ঢাকা, শনিবার ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৪ই পৌষ ১৪৩১

শীতের কারণে চরম দুর্ভোগে দরিদ্র ও ছিন্নমূলরা

মোঃ মাসুদ, রাজশাহী ব্যুরো : | প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার ২৩ ডিসেম্বর ২০২১ ০৭:৩৪:০০ অপরাহ্ন | দেশের খবর

বইছে হিমেল হাওয়া, বাড়ছে শীত। রাজশাহী অঞ্চলে বেড়েছে শীতের প্রকোপ। শীতের কারণে সবচেয়ে বেশি কষ্টে রয়েছে ছিন্নমূল মানুষগুলো। ঠাঁই ঠিকানা না থাকা মানুষগুলোর রাত কাটছে খোলা আকাশের নিচে।

 

 রাজশাহীর ওপর দিয়ে বর্তমানে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়েছে। হঠাৎ করেই তাপমাত্রা নিচে নেমে আশায় শৈত্যপ্রবাহ হওয়ায় তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে।

 

সরেজমিনে নগরীর রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনের ভেতরে ও বাইরে, রেলওয়ে মার্কেট, সাহেব বাজারের স্যান্ডেল পট্টি ছাড়াও নগরীর বিভিন্ন এলাকায় ছিন্নমূল মানুষগুলোকে শীতের মধ্যে রাত কাটাতে দেখা গেছে।

 

আবহাওয়া পর্যবেক্ষক আব্দুস সালাম জানান, রাজশাহীতে তাপমাত্রা উঠা-নামা করছে। ফলে কখনও হালকা আবার কখন বেশি শীত অনুভূত হচ্ছে। তবে গত তিনদিনের তুলনায় প্রায় তিন ডিগ্রি তাপমাত্রা বেড়েছে। বুধবার (২২ ডিসেম্বর) রাজশাহীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৫ দশমিক ৩ ডিগ্রি। এছাড়া সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৪ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

 

তিনি আরো জানান, মঙ্গলবার (২১ ডিসেম্বর) সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৫ দশমিক ৪ ডিগ্রি। এছাড়া সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

অন্যদিকে, সোমবার (২০ ডিসেম্বর) সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩২ দশমিক ৪ ডিগ্রি। আর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

এই কর্মকর্তা আরো জানান, আকাশ মেঘলা থাকলে তাপমাত্রা বাড়ছে। আর পরিস্কার থাকলে তাপমাত্রা কমছে। তাপমাত্রা কমলে বেশি শীত অনুভূত হচ্ছে।

 

রাজশাহী রেল স্টেশন চত্বরে বস্তামুরি দিয়ে শুয়ে থাকা আব্দুর রহিম জানান, সারাদিন ভিক্ষা করি। আর রাতে এখানে শুয়ে থাকি। শীত করে,তবুও থাকতে হয়।

 

আড়ানি থেকে এসে রাজশাহী শহরে কাচু নামের আরেক ব্যক্তি জানায়, রাজশাহীতে রিক্সা চালাই। কয়েকদিন গ্যারেজে ছিলাম। সেখানে জায়গার সমস্যা, তাই এখানে থাকি। তিনি আরো বলেন, একা মানুষ, তাই ঘর ভাড়া পেতে সমস্যা। এছাড়া ঘর ভাড়া নিতে আগাম টাকা চাই; এই টাকা পাবো থোকায়। তাই কষ্ট করে এই ফাঁকা জায়গায় শুয়ে আছি।

 

এদিকে, প্রতিকূল আবহাওয়ায় ভিড় বেড়েছে নগরীর ফুটপাতের গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে।দেখা গেছে গরম কাপড় ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়।

 

 আবহাওয়ার এই পরিবর্তনে মানুষজন আক্রান্ত হচ্ছেন শীতজনিত বিভিন্ন রোগে। বেশী আক্রান্ত হচ্ছেন বয়স্ক ও শিশুরা। হাসপাতালেও বাড়ছে শীতজনিত বিভিন্ন অসুখে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। হাসপাতালে বিশেষ করে শিশুদের কোল্ড ডায়রিয়া ও বয়স্কদের শ্বাসকষ্টজনিত রোগী বেশী ভর্তি হচ্ছেন।

 

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞরা জানান, হঠাৎ করে শীত বেড়ে যাওয়ায় সব বয়সের মানুষ ঠাণ্ডাজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। হাসপাতালে ঠাণ্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এ সব রোগীর মধ্যে শিশু ও বয়স্কদের সংখ্যা বেশী।