মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়ায় শারমিন আক্তার বিউটি (২৭) নামে এক গৃহবধুর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) সকালে উপজেলার কাদিপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামস্থ স্বামীর বাড়ি থেকে সিলিং ফ্যানের সাথে ওড়না দিয়ে ফাঁস লাগানো অবস্থায় ওই গৃহবধু বিউটির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
গৃহবধুর পরিবারের দাবি, তাকে হত্যা করা হয়েছে। এই ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গৃহবধূর শ্বশুর আব্দুল কাইয়ুম (৬০) ও ননদ জেসী (২৫) কে আটক করেছে পুলিশ।
বিউটি গোবিন্দপুর গ্রামের দুবাই প্রবাসী পায়েল আহমেদের স্ত্রী এবং উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের দুই নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য শায়েস্তা মিয়ার কন্যা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৪ বছর আগে উপজেলার হাজিপুর ইউনিয়নের উত্তর পল্কি গ্রামের বাসিন্দা ও হাজীপুর ইউনিয়নের দুই নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য শায়েস্তা মিয়ার মেয়ে বিউটির সঙ্গে একই উপজেলার কাদিপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের আব্দুল কাইয়ুমের ছেলে পায়েল আহমেদের বিয়ে হয়। তাদের সংসার জীবনে ভিবা ও বাহা নামে ৩ বছর বয়সী যমজ দুই সন্তান রয়েছে।
গৃহবধু বিউটির পিতা শায়েস্তা মিয়া অভিযোগ করে বলেন, ৪ বছর আগে মেয়ে হওয়ার কারণে ননদেরা প্রায়ই তার মেয়েকে মারধর করে আসছিলো। এ নিয়ে অনেক বিচার সালিশও হয়েছিল। ঈদের পর মেয়ে আমার বাড়িতে বেড়াতে এসেছিল। গত শুক্রবার তার স্বামীর ফোন পেয়ে সে স্বামীর বাড়ি চলে যায়। বৃহস্পতিবার সকাল ৯ টায় আমার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে মেয়ের স্বামীর বাড়ির পক্ষ থেকে খবর দেওয়া হয়। আমরা তাদের বাড়িতে গিয়ে দেখি মেয়ের লাশ ফ্যানের সাথে ঝুলে আছে। অথচ মেয়ের পা খাটের ওপর লাগানো অবস্থায় রয়েছে। মেয়ের ননদ জেসী ও কুলফী তাঁকে হত্যা করে লাশটি ঝুলিয়ে রেখে দরজা বন্ধ করে দেয়। এখন আমার মেয়েকে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। তিনি আরো বলেন, এই ঘটনায় তার মেয়ের দুই ননদ, শ্বশুর ও মেয়ের স্বামীকে অভিযুক্ত করে একটি অভিযোগ থানায় দায়ের করেছেন।
কুলাউড়া থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে আমরা গৃহবধু বিউটির লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছি। মেয়ের বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে শ্বশুর ও ননদকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুছ ছালেক বলেন, এ ঘটনায় গৃহবধুর পিতা শায়েস্তা মিয়া বাদী হয়ে ৪ জনকে অভিযুক্ত করে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তদন্ত করে পরবর্তী আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।