ঢাকা, শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১লা অগ্রহায়ণ ১৪৩১

চা শ্রমিকদের আন্দোলনে উত্তাল সিলেট

সিলেট ব্যুরো: | প্রকাশের সময় : রবিবার ২১ অগাস্ট ২০২২ ০৬:৩১:০০ অপরাহ্ন | সিলেট প্রতিদিন

দৈনিক মজুরি ১৪৫ টাকা প্রত্যাখ্যান করে নূন্যতম ৩০০ টাকা করার দাবিতে আবারও আন্দোলনে নেমেছে সিলেটের চা-শ্রমিকরা। আন্দোলনের এক পর্যায়ে তারা সিলেট বিমানবন্দর সড়ক অবরোধ করে মিছিল ও সমাবেশ করেন।

 

রোববার সকাল ১১টা থেকে ফের আন্দোলন শুরু করা সিলেট ভ্যালির চা-শ্রমিকরা দুপুর ১২টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত সিলেট বিমানবন্দর সড়ক অবরোধ করে বিভিন্ন ধরনের শ্লোগান দিতে থাকেন। এসময় সড়কের দুইপাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যানজটের সৃষ্টি হয়।

 

পরে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরীর আশ্বাসে ২৪ ঘণ্টার জন্য সড়ক অবরোধ কর্মসূচি স্থগিত করে লাক্কাতুরা চা বাগানের দুর্গা মণ্ডপের সামনে গিয়ে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকরা।

 

এদিকে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাদের দাবী মানা না হলে আগামীকাল থেকে ফের সড়ক অবরোধ করবেন বলে জানান তারা। এছাড়া পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালনের সিদ্ধান্তে অটল রয়েছেন শ্রমিকরা।

 

বিষয়টি নিশ্চিত করে চা-শ্রমিকের সন্তান ও আন্দোলনকারীদের একজন দেবাশীষ গোয়ালা বলেন, চা-বাগান মালিকরা আমাদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করছেন। ১২০ টাকা থেকে ২৫ টাকা বাড়িয়ে ১৪৫ টাকা করে আমাদের দয়া দেখাচ্ছেন তারা। কিন্তু আমরা কারও দয়া চাই না। আমরা আমাদের ন্যায্য দাবি চাই। বর্তমান যুগে কোথাও এই মজুরি নেই।

 

আন্দোলন প্রত্যাহার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যেখানে শ্রমিকের অধিকার বাস্তবায়ন হয় নাই, সেখানে প্রত্যাহার নয় প্রত্যাখ্যান হওয়া জরুরি। তাই আমরা আমাদের দাবিতে অনড় অবস্থায় আবারও মাঠে নেমেছি।

 

এর আগে  শনিবার (২০ আগস্ট) বিকেলে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের কার্যালয়ে চা-শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠকে চা-শ্রমিকদের নতুন মজুরি ১৪৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়। পরে বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে শ্রমিকদের চলমান কর্মবিরতি প্রত্যাখ্যানের ঘোষণা দেন।

 

প্রসঙ্গত, এর আগে চলতি বছরের জুন মাসে বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়ন ও মালিকপক্ষের সংগঠন বাংলাদেশ চা সংসদের বৈঠক হয়। সেখানে শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ৩০০ টাকা করার প্রস্তাব দেন শ্রমিক নেতারা। কিন্তু মালিকপক্ষ ১৪ টাকা বাড়িয়ে ১৩৪ টাকা মজুরির প্রস্তাব দেয়। যে কারণে শ্রমিক নেতারা তা প্রত্যাখ্যান করেন। এরপর আরও এক মাস পার হয়ে যায়। মালিকপক্ষ কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি। এর প্রতিবাদে ৯-১২ আগস্ট পর্যন্ত টানা চার দিন প্রতিদিন দুই ঘণ্টা করে ধর্মঘট পালন করেন চা-শ্রমিকরা। তারপরও মালিকপক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো কথা না বলায় ১৩ আগস্ট থেকে বাংলাদেশের সব চা-বাগানে অনির্দিষ্টকালের জন্য পূর্ণদিবস কর্মবিরতি শুরু করেন শ্রমিকরা।