ঢাকা, মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

টেকনাফ ছেড়েছেন সেই বিতর্কিত ইউএনও

নিজস্ব প্রতিবেদক : | প্রকাশের সময় : বুধবার ২৭ জুলাই ২০২২ ১০:১৮:০০ পূর্বাহ্ন | জাতীয়

কক্সবাজারের টেকনাফের বহুল বিতর্কিত সেই ইউএনও মোহাম্মদ কায়সার খসরু শেষ পর্যন্ত টেকনাফ ছেড়েছেন। এক সাংবাদিককে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করার অভিযোগে সদ্য বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) হওয়া এই কর্মকর্তা চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের এক আদেশে মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) দুপুরে টেকনাফ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. এরফানুল হক চৌধুরীকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে তিনি বিদায় নেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেন কক্সবাজার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. আমিন আর পারভেজ।  

তিনি বলেন, নতুন ইউএনও পদায়ন না হওয়া পর্যন্ত অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে এরফানুল হক চৌধুরী টেকনাফে ইউএনওর দায়িত্ব পালন করবেন। ওএসডি হওয়া মোহাম্মদ কায়সার খসরু আপাতত চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে থাকবেন।

এর আগে গতকাল সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম মোহাম্মদ কায়সার খসরুকে প্রত্যাহার করে ওএসডি করার কথা জানান।

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে টেকনাফের ইউএনওকে ওএসডি করে নিয়ে আসার জন্য বলা হয়েছে। এখন উচ্চ আদালত কী নির্দেশনা দেন, সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে টেকনাফের ইউএনও মোহাম্মদ কায়সার তাঁর অফিসিয়াল মোবাইল ফোন নম্বর থেকে কল করেন স্থানীয় সাংবাদিক সাইদুল ফরহাদকে। এ সময় সংবাদ প্রকাশের কারণ জানতে চেয়ে তাঁকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করতে থাকেন। রেকর্ড করা তাঁর ফোনকলের অডিও সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এতে ইউএনওর ব্যাপক সমালোচনা হয়। পরদিন শুক্রবার বিকেলে শহরের হিলডাউন সার্কিট হাউসের সম্মেলন কক্ষে উভয় পক্ষকে নিয়ে জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদের উদ্যোগে বৈঠক হয়। এ বৈঠকে ইউএনও প্রকাশ্যে ঘটনার জন্য ক্ষমা চান।  

এদিকে গত রোববার (২৪ জুলাই) বিষয়টি উচ্চ আদালতের নজরে আনেন দুকের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। এ সময়  উচ্চ আদালত বলেছেন, ‘রং হেডেড পারসন’ ছাড়া কেউ এভাবে বলতে পারে না। বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন। একই সঙ্গে 

শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট ওই ঘটনায় কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা রাষ্ট্রপক্ষকে জানাতে বলেছেন।

শুনানির একপর্যায়ে আদালত আরও বলেন, ইউএনও যে ভাষা ব্যবহার করেছেন, তা অত্যন্ত দুঃখজনক ও অগ্রহণযোগ্য। রং হেডেড পারসন ছাড়া কেউ এভাবে বলতে পারে না। যে ভাষা ব্যবহার করেছেন, তা কোনো ভাষা হতে পারে না। দেখা যাচ্ছে, ইউএনও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। এর অর্থ তাঁর বক্তব্য গ্রহণযোগ্য নয় বলে স্বীকার করে নিচ্ছেন।

সাংবাদিকরা সমাজের দর্পণ, রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ উল্লেখ করে আদালত বলেন, তাঁরা অপরাধ করলে আইন আছে, প্রেস কাউন্সিল আছে। তবে কেউ এভাবে গালিগালাজ করতে পারেন না। আইন নিজের হাতে তুলেও নিতে পারেন না।