ভারতে আটক হওয়া হাজার হাজার কোটি টাকা পাচারকারী পি কে হালদারকে আবার ফেরত চেয়েছে বাংলাদেশ। রবিবার সন্ধ্যায় দিল্লিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শংকরের মধ্যে একান্ত বৈঠক এবং পরবর্তীতে আনুষ্ঠানিক জয়েন্ট কনসালটেটিভ কমিশনের বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
এ বিষয়ে একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘এক্সট্রাডিশন চুক্তির অধীনে ইতিমধ্যে আমরা পি কে হালদার এবং তার ছয়জন সহযোগীকে ফেরত চেয়েছি। আশা করছি তাদেরকে দ্রুত ফেরত দেবে ভারত সরকার।’ এক্সট্রাডিশন চুক্তির মাধ্যমে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে সরকার এবং এজন্য বিচারিক ব্যবস্থার শরণাপন্ন হতে হবেনা বলে তিনি জানান।
তিনি বলেন, এ বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত কারণ বিষয়টি রাজনৈতিক।
ভূ-রাজনৈতিক কারনে বিভিন্ন ধরনের সংকট তৈরি হচ্ছে। এ সংকট মোকাবিলা করার জন্য আঞ্চলিকভাবে কাজ করার প্রস্তাব দিয়েছে ভারত।
ওই কর্মকর্তা বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের কারনে সাপ্লাই চেইন বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। এরফলে খাদ্য, জ্বালানি নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন ধরনের সংকট তৈরি হচ্ছে। এই সংকট উত্তরণে কানেক্টিভিটি জোরদারসহ একসঙ্গে কাজ করার প্রস্তাব দিয়েছে ভারত।
এ বিষয়ে বাংলাদেশের আপত্তি নেই জানিয়ে ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘প্রতিবছর আমরা লাখ লাখ টন গম রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে আমদানি করি যা এবছর করা সম্ভব হয়নি। এই সময়ে ভারত থেকে আমরা বড় আকারে গম আমদানি করছি’।
গম আমদানির জন্য আগের এলসির মাল পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং বর্তমানে খোলা এলসিগুলো ভারত যাচাই-বাছাই করার পরে পাঠাবে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।
বাংলাদেশকে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ভারত আট বিলিয়ন ডলারের লাইন অফ ক্রেডিট দিয়েছে। এটির বাস্তবায়ন নিয়ে বিভিন্ন সময়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে এবং সেগুলো সমাধানের জন্য দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনা চলছে।
ওই কর্মকর্তা বলেন, বৈঠকে দুইপক্ষের জটিলতাগুলো কীভাবে দুর করা যায় সেটি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ঋণের গ্রেস পিরিয়ড এবং স্থানীয়ভাবে পণ্য সংগ্রহ করার ক্ষেত্রে যে জটিলতা রয়েছে সেগুলো দুর করার জন্য ২১ জুন দুইপক্ষ দিল্লিতে বৈঠক করবে তিনি জানান।
তিনি বলেন, এ বছর এলওসি বাস্তবায়ন আগের বছরগুলোর তুলনায় ভালো।
সীমান্ত হত্যাকাণ্ড
বর্তমান সময়ে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে হত্যাকাণ্ড কম হলেও বন্ধ হয়নি। এটি বন্ধের জন্য জোর তাগাদা দিয়েছে ঢাকা। এ বিষয়ে ওই কর্মকর্তা বলেন, সীমান্ত হত্যা বন্ধে পেট্রোলিং বাড়ানোসহ অন্যান্য ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এছাড়া সীমান্তে অপরাধ কমানোর বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়।
পাট রফতানির ওপর শুল্ক
বাংলাদেশ থেকে পাট আমদানির ওপর এন্টি-ডাম্পিং শুল্ক আরোপ করেছে ভারত সরকার। এ বিষয়ে প্রথম থেকে আপত্তি জানিয়েছে ঢাকা।
এ বিষয়ে কর্মকর্তা বলেন, আমাদেরকে জানানো হয়েছে যে বিষয়টি ভারত কর্তৃপক্ষ তাদের চুড়ান্ত পর্যালোচনা করছে। আমাদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে পর্যালোচনার পরে এটি যেন প্রত্যাহার করা হয়।