ঢাকা, শুক্রবার ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ২৬শে পৌষ ১৪৩১

অভয়নগরে জলাবদ্ধতায় দুই হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষ অনিশ্চিত

মারুফ কবীর, যশোর | প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার ৯ জানুয়ারী ২০২৫ ০২:১৪:০০ অপরাহ্ন | দেশের খবর

ভবদহ অঞ্চলের জলাবদ্ধতায় যশোরের অভয়নগরে প্রায় দুই হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। সরকারি সেচপ্রকল্পের মাধ্যমে পানি নিষ্কাশন করা হলেও উপজেলার চারটি ইউনিয়ন ও নওয়াপাড়া পৌর এলাকার কিছু অংশ ধান চাষোপযোগী হয়নি, বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় এনে সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লাভলী খাতুন।

অভয়নগর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলার ১৪ হাজার ২৩০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতার কারণে এবার এক হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হচ্ছে না। এর মধ্যে প্রেমবাগ ইউনিয়নে একশ' হেক্টর, সুন্দলী ইউনিয়নে ৯০০ হেক্টর, চলিশিয়া ইউনিয়নে ৪০০ হেক্টর, পায়রা ইউনিয়নে ৩০০ হেক্টর এবং নওয়াপাড়া পৌর এলাকায় ২০০ হেক্টর জমি রয়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, চারটি ইউনিয়ন ও পৌর এলাকায় জমে থাকা পানি কমতে শুরু করেছে। জলাবদ্ধ ইউনিয়নের অধিকাংশ বিলে এখনও ৭-১০ ইঞ্চি উচ্চতায় পানি রয়েছে। পৌর এলাকার ৫, ৬ এবং ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কয়েকটি বিল ও আবাসিক এলাকায় ৩-৫ ইঞ্চি পরিমাণ পানি জমে রয়েছে।

এ সময় পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সরখোলা গ্রামের কৃষক জিয়াউর রহমান বলেন, ‘জলাবদ্ধতার কারণে এবার ৬ বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষ করা যাচ্ছে না। এ ব্যাপারে কৃষি অফিস কোনো প্রকার সহযোগিতা করছে না। ভবদহের জলাবদ্ধতার অভিশাপ আমাদের মতো কৃষকদের বিপদের মধ্যে ফেলেছে। সমস্যার স্থায়ী সমাধান না হলে কৃষকরা কৃষি কাজ ছেড়ে অন্য কাজে চলে যেতে বাধ্য হবে।’

চলিশিয়া ইউনিয়নের কোটা গ্রামের কামরুজ্জামান তরফদার বলেন, ‘আমার ৭০ বিঘা কৃষি জমি এখনও জলাবদ্ধ। গত বছরের মাঘ মাসে ঘেরের মধ্যে ধান চাষ করেছি, কিন্তু এবছর জলাবদ্ধতার কারণে বিলের ও ঘেরের মধ্যে ধান চাষ করা সম্ভব হচ্ছে না। ভবদহ এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা যদি সরকারি সহায়তা না পায়, তবে তারা এক সময় তাদের সব সম্পত্তি বিক্রি করে অন্যত্র চলে যাবে। তাই কৃষকদের দাবি, জলাবদ্ধতার স্থায়ী সমাধান করতে হবে।’

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লাভলী খাতুন বলেন, ‘জলাবদ্ধ এলাকাগুলো থেকে পানি কমতে শুরু করেছে। তারপরও বোরো ধান চাষে এবার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে না। কারণ উপজেলা ও পৌর এলাকার এক হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করার প্রক্রিয়া চলছে। আগামীতে প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় তাদের সহযোগিতা করা হবে।’

বায়ান্ন/প্রতিনিধি/পিএইচ