কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় পুলিশের অভিযানের সময় এক জাসদ নেতার ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় তিন পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে স্থানীয় একটি বাজারের দোকানে প্রায় তিন ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন জাসদের বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা। পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে পুলিশের একটি মোটরসাইকেল।
শুক্রবার ১৩ ডিসেম্বর রাতে ভেড়ামারা উপজেলায় চাঁদগ্রাম ইউনিয়নের চন্ডিপুর গ্রামে ঘটে এই ঘটনা। নবহত রফিকুল ইসলাম দুদু চন্ডিপুর গ্রামের মৃত আব্দুল আজিজ মন্ডলের ছেলে। তিনি চাঁদগ্রাম ইউনিয়ন জাসদের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমানের ভাই এবং জাসদ নেতা।
রফিকুলের ব্রিজ থেকে লাফিয়ে পড়ে মৃত্যু খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় উশৃংখল জনতা তিন পুলিশ সদস্যকে আটক করে রেখে পুলিশের একটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয়। পরে অতিরিক্ত পুলিশ এসে তাদের উদ্ধার করে।
স্থানীয়রা জানান, সন্ধা সাড়ে সাতটার সময় দুদুকে ধরতে পুলিশ আসে। এসময় আটক এড়াতে দুদু পাশেই একটি ব্রিজ থেকে লাফ দিয়ে নিচে পড়ে তার মৃত্যু হয়। এসময় জাসদের কিছু নেতা কর্মী পুলিশকে আটক করে তাদের একটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয়।
নিহতের ছেলে জানান, আমার বাবা নির্দোষ। পুলিশ আটক করে ব্রিজ থেকে ফেলে হত্যা করেছে। আমরা পুলিশের বিচার দাবি করছি। দুদুর ভাই জানান, চন্ডিপুর থেকে আমার ভাইকে ভেড়ামারা থানা পুলিশ আটক করে বাজারের উপর ব্যাপক মারধর করে। তখন আমার ভাই মারা যায়। পুলিশ বাঁচতে ব্রিজ থেকে ফেলে দিয়ে ঘটনা অন্য দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। উপস্থিত জনগণের সাথে কথা বলে নিহতের পরিবারের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি।
ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স এর চিকিৎসক সূত্রে জানা যায়, রফিকুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তিকে রাত ৮ টার দিকে হাসপাতালে আনা হলে জরুরী বিভাগের দ্বায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তবে তার শরীরে কোন প্রকার আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। ধারনা করা হচ্ছে তিনি স্ট্রোক করে মারা গেছেন। মৃতদেহ কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট আসলে মৃত্যুর সঠিক তথ্য জানা যাবে।
ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ শহিদুল ইসলাম বলেন, বিভিন্ন মামলার আসামি ধরার নিয়মিত ডিউটির আওতায় চন্ডিপুরে রফিকুল ইসলাম দুদু নামে এক আসামি ধরতে যায় পুলিশের একটি টিম। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে আসামি পালাতে গিয়ে ব্রিজ থেকে পড়ে মৃত্যু হয়েছে। কিছু লোক পুলিশের তিন সদস্যকে আটক করে তাদের মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। আমরা আটক পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার করেছি। এখন আইনি ভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।
কুষ্টিয়া জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, ঘটনা স্থলে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। তদন্তকরে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঘটনার পরথেকে এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।