প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে নাড়ির টানে বাড়ি ফিরছেন মানুষ। তবে তাদের সেই ফেরার পথ অনেক দূর্গম। একদিকে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যানজটের সঙ্গে যোগ হয়েছে প্রচণ্ড ধুলা। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে উত্তরবঙ্গগামী যাত্রীদের। ধুলায় সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন শিশু ও বয়স্করা।
মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) সকাল ১০টার দিকে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের কালিহাতী উপজেলার জোকারচর এলাকা, সল্লা, সেতু পূর্ব রেলস্টেশন, হাতিয়া, ভাবলা ও এলেঙ্গায় সড়কের বাইরে দিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। এতে ধুলায় মহাসড়ক অন্ধকার হয়ে যাচ্ছে। ধুলা থেকে বাঁচতে যাত্রীদের কোনো তেমন কোনো সুরক্ষা সামগ্রী না থাকায় তারা বিপাকে পড়েছেন। অনেককেই ধুলা থেকে বাঁচতে মুখে কাপর বেঁধে রাখতে দেখা গেছে।
দীর্ঘ সময় ধরে যাত্রী ও চালকরা ধুলার নিশ্বাস নেওয়ার কারণে বিভিন্ন ধরনের জটিল রোগ হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে বলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন।
এদিকে মহাসড়কে ধীরগতির কারণে যাত্রী ও চালকদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের জোকারচর এলাকায় কথা হয় খোলা ট্রাকে করে পরিবার নিয়ে যাওয়া রিয়াজের সঙ্গে। তিনি বলেন, বাস না পেয়ে অনেকটা বাধ্য হয়ে খোলা ট্রাকে বাড়ি যাচ্ছি পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে। কিন্তু মহাসড়কে প্রচণ্ড ধুলা। যানবাহন মেইন সড়ক দিয়ে না গিয়ে আগে যাওয়ার প্রতিযোগিতায় সড়কের বাইরে দিয়ে যাচ্ছে। এতে চারদিক ধুলায় অন্ধকার হয়ে যাচ্ছে। আমরা আগে থেকে মাস্ক নিয়ে আসিনি। তাই কাপড় দিয়ে মুখ ঢাকতে হচ্ছে।
গার্মেন্টস কর্মী মুন্নি খাতুন বলেন, ভাবতেই পারিনি সড়কে এতো ধুলা হবে। বড়দের তেমন ক্ষতি না হলেও শিশুরা কষ্ট করছে ধুলায়।
এ সময় কথা হয় এক গাড়ি চালকের সঙ্গে। তিনি বলেন, সড়ক দিয়ে গাড়ি চলাচল করলে ধুলা হতো না। কিন্তু একটি গাড়ি আরেকটি গাড়িকে অভারটেক করতে গিয়ে সড়কের বাইরে দিয়ে গাড়ি চালাচ্ছে। এতে ধুলার সৃষ্টি হচ্ছে।
মহাসড়কে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা বলেন, মাস্ক থাকলেও কাজ হচ্ছে না। ধুলা মাস্কের ভেতর দিয়েই নাকে প্রবেশ করছে। মহাসড়কে ডিউটি করলে ধুলা খেতেই হবে।
টাঙ্গাইলে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. রাজিব পাল চৌধুরী বলেন, বাড়ি ফেরার পথে যারা খোলা ট্রাক বা পিকআপযোগে গন্তব্যে যাচ্ছেন তারা মহাসড়কের ধুলা বালির নিঃশ্বাসের কারণে শ্বাসকষ্ট রোগে ভুগতে পারেন। এ ছাড়া যাদের এজমার সমস্যার রয়েছে তাদের বেশি ক্ষতি হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। বিশেষ করে শিশুরা ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হতে পারে। ধূলিকণা শ্বাসনালীতে ঢুকে ফুসফুসের ক্ষতি করে। এ ছাড়া চোখ জ্বালাপোড়া, হাঁপানি, অ্যাজমা, শ্বাসকষ্ট, যক্ষ্মা ও ক্যানসারের মতো রোগ হতে পারে।