ঢাকা, শনিবার ২৯ জুন ২০২৪, ১৫ই আষাঢ় ১৪৩১

নরসিংদীতে নিখোঁজের চারদিন পর শিশু মাইশার মরদেহ সেপটিক ট্যাংক থেকে উদ্ধার, আটক ৩

নাজমুল হাসান, নরসিংদী : | প্রকাশের সময় : বুধবার ২৬ জুন ২০২৪ ০৬:৫৬:০০ অপরাহ্ন | দেশের খবর

নরসিংদীর পলাশে নিখোঁজের চারদিন পর মাইশা আক্তার নামে সাড়ে ৩ বছরের এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৫ জুন) সকালে উপজেলার ডাংগা ইউনিয়নের জয়নগর গ্রামের নিজ বাড়ির সেফটি ট্যাংক থেকে ওই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ ও র‍্যাব-১১ এর সদস্যরা। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন তিনজনকে আটক করেছে র‍্যাব।

 

আটককৃতরা হলো, কুষ্টিয়ার কুমারখালী এলাকার জালাল শেখ (৪৯), তার স্ত্রী মাহফুজা শেখ (৩৯) ও ছেলে বিল্লাল শেখ (২০)। তারা সবাই শিশুটির বাবা মেহেদী হাসানের বাড়ির ভাড়াটিয়া।

 

নিহত মাইশা আক্তার জয়নগর গ্রামের মেহেদী হাসানের মেয়ে। সে শুক্রবার থেকে নিখোঁজ ছিল। এ ঘটনায় নিখোঁজের দিন রাতেই পলাশ থানায় জিডি করেছিলেন পিতা মেহেদী হাসান।

 

ডাংগা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য বেলায়েত হোসেন ও পলাশ থানা পুলিশ জানায়, জয়নগর গ্রামের শিলবাড়ির মোড়ের মেহেদী হাসানের মেয়ে মাইশা নিজ বাড়ি হতে গত শুক্রবার বিকেল থেকে নিখোঁজ ছিল। পরে তাকে কোথাও খুঁজে না পেয়ে ঘটনার রাতেই পলাশ থানায় জিডি করেন মাইশার বাবা।

ঘটনার চার দিন পর মঙ্গলবার ভোরে মেহেদী হাসানের ভাড়াটিয়া জামাল শেখ, স্ত্রী মাহফুজা শেখ ও ছেলে বিল্লাল শেখকে আটক করে র‍্যাব। পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে নিজ বাড়ির সেফটি ট্যাংক থেকে সকাল ৮টার দিকে মাইশার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ ও র‌্যাব সদস্যরা। পরে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তবে কি কারণে মাইশাকে হত্যা করেছে সে বিষয়ে তাৎক্ষণিক কিছু জানাতে পারেনি পুলিশ।

 

পলাশ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো: জসিম উদ্দিন বলেন, এ ঘটনায় আজ ভোরে ডাংগা থেকে তিনজনকে আটক করেছে র‌্যাব। তাদের পলাশ থানায় হস্তান্তর করবে র‍্যাব। শিশুকে কি কারণে হত্যা করা হয়েছে তা আটকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ ও তদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে।

 

র‍্যাব ১১ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক ও নরসিংদী ক্যাম্প কমান্ডার নিশাত তাবাসসুম সংবাদ সম্মেলনে জানান, নিহত শিশুর পরিবার, স্থানীয় লোকজনের দেয়া তথ্য ও সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে প্রথমে সন্দেহভাজন বিল্লালকে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে বিল্লালের পিতা মো: জালাল (৪৮) শিশু মাইশাকে হত্যার পর শৌচাগারের সেফটিক ট্যাংক এর ভেতর লুকিয়ে রেখেছে বলে জানায়। পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে সেফটি ট্যাংক এর ভেতর থেকে শিশু মাইশার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এসময় তার পিতা জালাল ও তার স্ত্রী মাহফুজাকে আটক করা হয়েছে।

 

নিশাত তাবাসসুম আরও বলেন, মাইশা শিশু বাড়ির সামনে খেলাধূলার সময় জালাল মিয়াকে বালু নিক্ষেপ করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শিশুটিকে ধমক দিলে সে দৌড় দিয়ে মাটিতে পড়ে আঘাত প্রাপ্ত হয়। পরে শিশুটিকে বাড়িতে ধরে নিয়ে যায় জালাল। এরপর থেকে শিশুটিকে পাওয়া যাচ্ছিল না। কীভাবে হত্যা ও লুকিয়ে রাখার ঘটনা ঘটানো হয়েছে সে বিষয়ে আরও জিজ্ঞাসাবাদের পর জানা যাবে।