![](https://dainikbayanno.com/storage/liton-ctg-photo-2.jpg)
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চট্টগ্রাম মহানগরের আওতাধীন, নগরের ১৫টি থানা ও ৪৩টি ওয়ার্ড কমিটি বিলুপ্ত করেছে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি। গেল বছরের ৩ ডিসেম্বর মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় এসব কমিটি বিলুপ্ত ঘোষনা করা হয়।
এদিন বিএনপির নগর কার্যালয় নছিমন ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সাবাদিকদের এ তথ্য জানান, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ।
ওই সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক কার্যক্রম ঢেলে সাজানোর লক্ষ্যে ২০২৪ সালের ৭ জুলাই দুই সদস্য বিশিষ্ট কমিটি এবং পরবর্তীতে একই বছরের ৪ নভেম্বর ৫৩ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়।
দেশের এই ক্রান্তিকালে বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীদের সুসংগঠিত করার জন্য মেয়াদোত্তীর্ণ ১৫ টি থানা ও ৪৩ টি ওয়ার্ডের বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে।
ওই সময়ে নগর বিএনপির পক্ষথেকে জানানো হয়, বিলুপ্ত ঘোষিত থানা ও ওয়ার্ডে অতি দ্রুত আন্দোলনে ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাকর্মীদের নিয়ে কমিটি গঠন করা হবে।
সূত্র জানায়, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তৃণমূল পর্যায়ে দলকে শক্তিশালী করে তুলতে চট্টগ্রামে মাঠ পর্যায়ে সড়ব রয়েছেন বিএনপি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা। গেল বছরের ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর নতুন করে যেন প্রান ফিরে পেয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি এবং দলীয় ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো।
জানা গেছে, বিগত শেখ হাসিনা সরকারের শাসনামলে দীর্ঘ দেড়যুগের বেশী সময় ধরে বিএনপির নেতাকর্মীদের গায়েবি মামলা ও হামলা সহ্য করেই দিন কাটাতে হতো তাদের। ফলে বছরের পর বছর নিজ নিজ এলাকায় বা ঘরে থাকতে পারতো না এমন নেতাকর্মীদের সংখ্যাও অনেক। কিন্তু ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গনঅভ্যুত্থানের পর সাংগঠনিকভাবে বেশ চাঙা হয়ে উঠেছে বিএনপি।
দলীয় জাতীয় কর্মসূচী ছাড়াও নিয়মিত সাংগঠনিক কার্যক্রম দেখা যায় কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মধ্যে। বিশেষ করে বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতে ৩১ দফা কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রায় প্রতিদিনই সভা-সমাবেশ এবং ৩১ দফা সম্বলিত লিফলেট বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। দ্বিগুন উৎসাহ নিয়ে দলের নেতাকর্মিরা কাজ করে যাচ্ছে, এমন মন্তব্য রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।
এদিকে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আওতাধিন, সব কয়টি থানা ও ওয়ার্ড কমিটি ভেঙে দিয়ে সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটিগুলো পূর্ণগঠনের ঘোষনায় থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়েয় নেতাকর্মি এবং নতুন পদ প্রত্যাশীদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দিপনা ও মাঠ পর্যায়ে বেশ চাঙ্গাভাব দেখা দিয়েছে। চলছে দৌড়ঝাঁপও।
সূত্র মতে, বিএনপির মহানগর কেন্দ্রিক যেকোনো অনুষ্ঠানে হাজির হচ্ছে থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ের বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠন সমুহের নেতাকর্মি এবং পদ প্রত্যাশীরা। সবমিলিয়ে মাঠ পর্যায়ে সক্রিয় হয়ে উঠেছে চট্টগ্রাম বিএনপি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন।
জানতে চাইলে, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এস এম সাইফুল আলম বলেন, তৃণমূলে দলকে ‘শক্তিশালী’ ও নেতাকর্মীদের ‘সুসংঘটিত’ করতে বিএনপির চট্টগ্রাম মহানগর নেতৃবৃন্দের প্রতি নির্দেশনা আছে কেন্দ্রের। এক্ষেত্রে কাউন্সিলের মাধ্যমে ইউনিট, ওয়ার্ড ও থানা কমিটি গঠন করতে বলা হয়েছে। নির্দেশনা অনুযায়ি আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির অপর যুগ্ম আহ্বায়ক সৈয়দ আজম উদ্দিন জানান, দীর্ঘ ১৭ বছর অনেক জেল-জুলুম, নির্যাতনের পরও আমরা মাঠে-ময়দানে থেকেছি। রাজপথে থেকেছি। ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর এবার আমরা মাঠ পর্যায়ে আরো জোড়ালোভাবে সক্রিয় আছি। এছাড়া তৃণমূলে দলকে ‘শক্তিশালী’ ও নেতাকর্মীদের ‘সুসংঘটিত’ করতে আমাদের প্রতি নির্দেশনা আছে কেন্দ্রের।
কমিটি পূর্ণগঠন প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কমিটিগুলো আরো অনেক আগেই হয়ে যেত। কিন্তু জাতীয় কিছু কর্মসূচী থাকার কারণে একটু পিছিয়েছে। বর্তমানে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক আলহাজ্ব মো. এরশাদ উল্লাহ চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে রয়েছেন উল্লেখ করে বলেন, তিনি শীগ্রই দেশে ফিরছেন বলে জেনেছি। এরপর এ ব্যাপারে দ্রুত সিদ্ধান্ত আসবে এবং আগামী সপ্তাহে কিংবা ফেব্রুয়ারি মাসের শেষের দিকে কমিটিগুলো পুর্নগঠন প্রক্রিয়া শুরু হবে।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৬ আগস্ট ডা. শাহাদাত হোসেন ও আবুল হাশেম বক্করের নেতৃত্বে গঠন করা হয়েছিল চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির কমিটি। পরবর্তীতে বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ড কমিটি পুনর্গঠন করা হয়। এরপর দুই দফা নগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি পরিবর্তন হলেও থানা ও ওয়ার্ড কমিটিগুলোতে কোনো পরিবর্তন আসেনি।
বায়ান্ন/প্রতিনিধি/পিএইচ