ঈদের আগে ও পরে সাতদিন এক জেলা থেকে আরেক জেলায় মোটরসাইকেল চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ। এজন্য আগেভাগেই ঢাকা ছাড়ছেন মোটরসাইকেল চালকরা। অনেকেই বাস-ট্রেনের টিকিট সংগ্রহ করতে পারেননি, কেউ আবার বাড়তি খরচ থেকে বাঁচতে কেউ চুরি হওয়ার আশঙ্কায় মোটরসাইকেলে রওনা দিচ্ছেন।
বুধবার (৬ জুলাই) ঢাকার অন্যতম প্রবেশপথ গাবতলী ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়। একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন শহীদুল বারী। ঢাকা থেকে গন্তব্য গ্রামের বাড়ি বগুড়া। শহীদুলের সঙ্গে আছেন স্ত্রী কণা ও সাত বছরের সন্তান অনিক। সঙ্গে কিছু মালামাল।
শহীদুল বলেন, যে বেতন-বোনাস পেয়েছি তা দিয়ে বাস বা ট্রেনে যাওয়া সম্ভব নয়। যাতায়াতে ছয় হাজার টাকা ফুরিয়ে যাবে। তাই বসকে বলে আগেই মোটরসাইকেল নিয়ে বাড়ি যাচ্ছি। আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) গেলে রাস্তায় মোটরসাইকেল ধরবে।
অনেকে টিকিট না পেয়ে বাধ্য হয়ে মোটরসাইকেলে যাচ্ছেন। তাদের মধ্যে একজন রাজশাহীর সৌরভ। তিনি বলেন, ট্রেনের লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট পাইনি। বাসের থেকে মোটরসাইকেল জার্নি অনেক ভালো। আমার মনে হয় বাস মালিকদের খপ্পরে পড়ে মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ করা হয়েছে।
শখের দামি মোটরসাইকেল গ্যারেজে চুরি হয়ে যেতে পারে এ আশঙ্কায় অনেকে মোটরসাইকেল নিয়েই বাড়ি ছুটছেন। তাদের মধ্যে একজন যশোরের সৌমিক। তিনি পেশায় ব্যবসায়ী।
সৌমিক হক বলেন, ইয়ামাহা আর১৫ মোটরসাইকেল সাড়ে চার লাখ টাকা দিয়ে কিনেছি। গ্যারেজে রাখলে চুরি হবে না এ নিশ্চয়তা কে দেবে। মোটরসাইকেল বন্ধ করায় দুদিন আগেই বাড়ি যাচ্ছি। তা না হলে ঈদ সামনে দোকানে আরও বেচাকেনা করতে পারতাম। এখন মোটরসাইকেল সামলাবো নাকি দোকান।
বাস মালিকদের খপ্পরে পড়ে মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ করা হয়েছে বলে ধারণা অনেকের। তাই ক্ষোভে বাস এড়িয়ে আগেই মোটরসাইকেলে বাড়ি যাচ্ছেন। তাদের মধ্যে একজন চুয়াডাঙ্গার যাত্রী পলাশ।
তিনি বলেন, সবাই কিন্তু মোটরসাইকেল শখে চালায় না। আমি ১০ বছর ধরে মোটরসাইকেল চালাই পেটের দায়ে। বাসচালকরা যাত্রী পাচ্ছেন না বলেই মোটরসাইকেল বন্ধ করা হয়েছে।