ঢাকার ব্যস্ততম বিমানবন্দর মহাসড়ক এখন যেন যানজটের আরেক নাম। বিশেষ করে এমআরটি প্রকল্পের কাজ শুরুর পর থেকে এই সড়কে দিনরাত লেগে থাকা যানজট নগরবাসীর জীবনে দুর্বিষহ পরিস্থিতি তৈরি করেছে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত থেমে থাকা গাড়ির সারি যেন অচলাবস্থার প্রতীক হয়ে উঠেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, সরকারী-বেসরকারী চাকরিজীবী, অফিসগামী মানুষ, ছাত্র-ছাত্রী থেকে শুরু করে সাধারণ পথচারীরা যানজটের কবলে পড়ে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন। অনেকে গাড়ি ছেড়ে পায়ে হেঁটে গন্তব্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন। বিশেষ করে বয়স্ক ও অসুস্থ মানুষদের দুর্ভোগ আরও কয়েকগুণ বেড়েছে।
উত্তরা জসীমউদ্দীন ট্রাফিক বক্সের দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) ইউনুস জানান, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল এলাকায় এমআরটি প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ায় রাস্তার একাংশ বন্ধ রয়েছে। ফলে কুড়িল বিশ্বরোড থেকে টঙ্গী আবদুল্লাহপুর পর্যন্ত সড়কে যানজট তৈরি হয়েছে।
একজন প্রাইভেট কার চালক জানান, আবদুল্লাহপুর থেকে বিমানবন্দরে পৌঁছাতে তাকে এক ঘণ্টারও বেশি সময় লেগেছে।
আরেকজন যাত্রী বলেন, প্রতিদিন যদি এমন যানজট চলতে থাকে, তাহলে মানুষ মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে।
গণপরিবহন চালক কামাল হোসেন জানান, ৪০ মিনিট যানজটে আটকে থাকার কারণে যাত্রীরা গাড়ি থেকে নেমে গেছেন। বিমানবন্দর পৌঁছাতে পৌঁছাতে গাড়ি প্রায় ফাঁকা হয়ে যায়। ফলে আয় কমে গেছে, লোকসান গুনতে হচ্ছে।
আব্দুল্লাহপুর ট্রাফিক বক্সের টিআই মোহাম্মদ মাসুম জানান, বিমানবন্দর রেলস্টেশন পাড় হয়ে কাওলা এলাকায় এমআরটি প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ায় রাস্তার একাংশ বন্ধ রয়েছে। আজ সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস হওয়ায় ঢাকার বাইরের ছুটিচূত মানুষ অফিসে যোগ দিতে ঢাকায় ফিরছে। এ কারণে গাড়ির চাপ আরও বেড়ে গেছে।
তিনি আরও বলেন, গাড়ির গতি সচল রাখতে ট্রাফিক পুলিশ সর্বোচ্চ আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছে। আশা করছি ধীরে ধীরে পরিস্থিতির উন্নতি হবে।
সাধারণ যাত্রীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, যানবাহন চলাচলের বিকল্প ব্যবস্থা না করেই রাজধানীর এমন গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কে উন্নয়নকাজ শুরু করা হয়েছে। ফলে যানজটের এই নিত্যদিনের যন্ত্রণা আর সইতে পারছি না।
পরিকল্পনাহীনভাবে বড় প্রকল্পের কাজ শুরু করায় উত্তরা থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত সড়কে প্রতিদিন অসহনীয় যানজট তৈরি হচ্ছে। যাত্রীরা চান, উন্নয়নকাজ পরিচালনায় কার্যকর পরিকল্পনা ও বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।
বিমানবন্দর মহাসড়কের এই দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পেতে নগরবাসী দ্রুত পদক্ষেপ আশা করছেন। উন্নয়ন যেন জনজীবনকে আরো অস্থির না করে, সেজন্য সমন্বিত পরিকল্পনার দাবি এখন তীব্রতর।
বায়ান্ন/টিএ/এএস/একে