সুনামগঞ্জ জেলার শান্তিগঞ্জ উপজেলার দেখার হাওড়ের ছাইয়া কিত্তা ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ আবারও ধসে পড়ছে। কাজ শেষ হওয়ার আগেই এ নিয়ে ২য় বার বাঁধে ধসের সৃষ্টি হয়েছে। এতে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন হাওড়পারের কৃষকরা। পিআইসি কমিটির লোকজন ধস ঠেকাতে কাজ করছেন দিন-রাত। এর আগে প্রকল্প বাস্তবায় কমিটির লোকজন ৩শত জিও বেগে মাটি ভরাট করে ধসে পড়া অংশ মেরাতম করেছিলেন। ৭দিন যেতে না যেতেই আবার সেই অংশে বাঁধটিতে ধস দেখা দিয়েছে।
রবিবার (০৩ মার্চ) সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, শান্তিগঞ্জ উপজেলা দেখার হাওড়ের ছাইয়া কিত্তার বাঁধ ৬নং পিআইসি কমিটির অধীনে। দেখার হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধের পিআইসি নং-৬ এর অধীনে প্রায় ১০০০ মিটার বাঁধের কাজ নির্মাণ করা হয়েছে। প্রকল্প এলাকার উত্তর পার্শ্বে ‘ছাইয়া কিত্তা’ নামক জায়গায় গত দুই বছর আগে বর্ষা মৌসুমে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী রাতের আধারে মহাসিং নদী ও বাঁধের পশ্চিমে বালি মাটি ও ভিট বালি উত্তোলন করে। এতে বাঁধের দুই পাশে মহাসিং নদীর অংশে ও হাওড়ের অংশে বড় বড় দুইটি ডোবার সৃষ্টি হওয়ায় প্রায় ২৭ ফুট গভীর গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। এর পর থেকে এই বাঁধে প্রতি বছর এই জায়গায় ধসে পড়ার ঘটনা ঘটছে। প্রাণপণ চেষ্ঠা করে প্রতি বছর এই অংশে ধসে পড়া বাঁধ রক্ষা করা হয়। চলতি বছর এই বাঁধে এ নিয়ে ২য় বার বাঁধটি ধসে পড়েছে। প্রথম বার প্রায় ৭দিন আগে এই বাঁধের দু পাশে ফাটল দেখা দিয়ে বাঁধটি ধসে পড়ে। এর পর ধসে পড়া অংশ মেরাতম করতে ৩শত জিও বেগে মাটি ভরাট করে দু পাশে ডাম্পিং করে বাঁধটি মেরামত করা হয়। শনিবার (০২ মার্চ) রাতে আবারও সেই অংশে ফাটল দেখা দিয়ে বাঁধটি আবারও ধসে পড়তে শুরু করে।
বর্তমানে ছাইয়া কিত্তা বাঁধ নির্মাণ প্রকল্পের মাটি ভরাটের কাজ শেষ করে ঘাস লাগানোর কাজ চলছে। কিন্তু বাঁধের দুই পাশে আবারও ভাঙন শুরু হওয়ায় হুমকির মুখে রয়েছে ফসল রক্ষা বাঁধ এবং আর্থিক সংকটে পড়ছেন পিআইসি কমিটির লোকজন।
আস্তমা গ্রামের কৃষক ও পিআইসি কমিটির সভাপতি আজিমুল হক জানান, আমার প্রকল্পে এ নিয়ে ২য় বার ফাটল দেখা দিয়ে বাঁধের মাটি ধসে পড়েছে। এর আগে ৩শত জিও বেগ ব্যবহার করে বাঁধের এই অংশ পানি উন্নয়ন র্বোডের ডিজাইন অনুযায়ী মেরামত করেছি। শনিবার সন্ধ্যা থেকে আবারও এই অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে। এখন বাঁধের দু’পাশের বেশ জায়গা ধসে পড়েছে। আমি এই বাঁধের কাজ করতে প্রাণপণ চেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছে। এখন ভাঙন রোধে আরও অর্থ বরাদ্দ দিয়ে দুইটি গর্ত মাটি ভরাট করা প্রয়োজন। না হলে বাঁধ রক্ষা করা যাবেন না। বৈশাখ মাসে হাওরে পানি এলে এ বাঁধ হুমকির মুখে পড়বে।
শান্তিগঞ্জ উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ও উপজেলা কাবিটা কমিটির সদস্য সচিব ইয়াছিন খান বলেন, দেখার হাওরের ছাইয়া কিত্তা হাওড়ের বাঁধটি এ নিয়ে ২য় বার ভাঙন দেখা দিয়েছে। এর আগে ৩শত জিও বেগ ডাম্পিং করে ভাঙন বন্ধ করেছি। এখন আবার সেই জায়গায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। এখানের এই অংশের দু’পাশে গভীর ২টি গর্ত থাকায় এমনটি হচ্ছে। পশ্চিম পাশের গর্তটি এখান অনেকটাই ভরাট হয়েছে। ভাঙনও বন্ধ হয়েছে। এখন নদীর পাশের গর্তটিই বাঁধের জন্য হুমকি হিসেবেই আমরা দেখছি। এই জায়গায় আরো জিও বেগ দিয়ে ডাম্পিং করে তার পার বাঁধের স্লোপের কাজ করতে হবে। আশা করি ২-৩ দিনের মধ্যেই এই কাজটি সম্পন্ন করতে পারবো।