সিলেট মহানগরীর শাহপরাণ থানাধীন টুলটিকর এলাকায় তিন সন্তানের জননীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ বলছে- রাজমিন বেগম (৪০) নামের ওই গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছেন। তবে তার বাবার বাড়ির লোকজনের দাবি- স্বামীর নির্যাতনে তার মৃত্যু হয়েছে।
মৃত রাজমিন বেগম (৪০) টুলটিকর এলাকার মিয়াবাগের বন্ধন হাউসের নাছির উদ্দিনের স্ত্রী। তার বাবার বাড়ি একই এলাকার মিরাপাড়ায়। তিনি মিরাপাড়ার মৃত ইছন মিয়ার মেয়ে।
পুলিশ জানায়, রাজমিন বেগম তিন সন্তানের জননী। সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সন্তানরা ঘরে টেলিভিশন দেখছিলেন। হঠাৎ তারা তাদের মাকে (রাজমিন) ঘরের জানালার গ্রিলের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় ঝুলতে দেখেন। এসময় তাদের চিৎকারে প্রতিবেশীরা এসে ওড়না খুলে রাজমিনের ঝুলন্ত দেহ নামান। খবর পেয়ে তার স্বামী সবজি ব্যবসায়ী নাছির উদ্দিন তার শ্যালককে নিয়ে বাসায় এসে রাজমিনকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। তবে হাসপাতালে যাওয়ার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানান ওসমানীর জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসকরা।
এদিকে, রাজমিনের বাবার বাড়ির লোকজনের দাবি- স্বামীর নির্যাতনে তার মৃত্যু হয়েছে।
রাজমিনের চাচা রুহুল আমিন জানান, খবর পেয়ে আমরা দ্রুত হাসপাতালে এসে রাজমিনকে মৃত দেখতে পাই। আমাদের ধারণা- রাতের কোনো এক সময় আমার ভাতিজিকে নাছির উদ্দিন মারধর করে। এতে সে মারা যায়। আর সকালে অসুস্থতার নাটক করে নাছির উদ্দিন আমার ভাতিজিকে হাসপাতালে নিয়ে আসে।
তিনি আরও বলেন- গত কয়েকমাস ধরে নাছির উদ্দিন আরেকটি বিয়ে করবে বলে আমার ভাতিজির সম্মতি নিতে চাপ দিচ্ছিলো। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কলহের সৃষ্টি হয়। এর আগেও রাজমিনকে মারধর করেছে নাছির উদ্দিন।
নাছির মৃত রাজমিনের লাশের ময়না তদন্ত করাতে ইচ্ছুক নয় জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের দাবি- ময়না তদন্তের মাধ্যমে মৃত্যুর সঠিক কারণ বের করে নাছিরকে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা হোক।
এ বিষয়ে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হবে বলে জানান তিনি।
শাহপরাণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আনিসুর রহমান বলেন- প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, রাজমিন আত্মহত্যা করেছেন। সন্তানেরা তার দেহ জানালায় ঝুলতে দেখে চিৎকার করেন। পরে প্রতিবেশিরা এসে দেহটি নামান। লাশের ময়না তদন্ত হবে বলে জানান ওসি আনিসুর রহমান।