জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বাকি আরো এক বছর তিন মাস। কিন্তু এরই মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হাওয়া বইতে শুরু করেছে। আগামীতে কোন্ দল থেকে কে মনোনয়ন পাবেন তা নিয়ে ইতোমধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে। কোন্ এলাকায় কে এমপি নির্বাচিত হলে জনস্বার্থ প্রধান্য পাবে তা নিয়েও কম আলোচনা হচ্ছে না। এই আলোচনায় উঠে আসছে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নামের তালিকা। স্থান পেয়েছে নতুন নেতৃত্বের নাম।
সিলেট অঞ্চলও ওই আলোচনা থেকে পিছিয়ে নেই। আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, জামায়াতে ইসলামের সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিয়ে দলীয় নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষ আলোচনায় অংশ নিচ্ছেন। এই আলোচনার মধ্য দিয়েই বের হয়ে আসছে জনবান্ধব প্রার্থীদের নাম।
সিলেটের সীমান্তবর্তী জকিগঞ্জ ও কানাইঘাট নিয়ে সিলেট-৫ আসন গঠিত। এই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য বিশিষ্ট শিল্পপতি হাফিজ আহমদ মজুমদার। এই আসনে আওয়ামী লীগসহ বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় পার্টির একাধিক প্রার্থীর নাম আলোচনায় উঠে আসছে।
স্থানীয়রা আগামী সংসদ নির্বাচনে এই আসনে জনবান্ধব প্রার্থী কামনা করছেন। এই আলোচনায় স্থান পেয়েছেন জকিগঞ্জ উজেলার সাবেক চেয়ারম্যান, ব্যবসায়ী ও জাতীয় পার্টির শীর্ষ নেতা আলহাজ শাব্বির আহমদ।
স্থানীয়রা জানান, ২০০৯ সালে জকিগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে শাব্বির আহমদ বিপুল ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এক বছরের মাথায় পার্টির চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদ জকিগঞ্জে লাখো মানুষের সমাবেশে শাব্বির আহমদকে জকিগঞ্জ-কানাইঘাট সংসদীয় আসনের প্রার্থী ঘোষণা করেন। ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে দলের মনোনয়ন লাভ করেন। কিন্তু দুর্বৃত্তরা হামলা করে জ্বালিয়ে দেয় শাব্বির আহমদের বাড়ি ঘর। এরশাদের নির্দেশনায় চ‚ড়ান্ত মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন শাব্বির আহমদ।
দলীয়ভাবে জানা গেছে ১৯৯০ সালে ফ্রান্স জাতীয় পার্টির সভাপতি করা হয় শাব্বির আহমদকে। দীর্ঘ ৮ বছর তিনি ওই দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৮ সালে কেন্দ্রীয় জাতীয় পার্টির সদস্য করা হয় শাব্বির আহমদকে। ২০০৪ সালে করা হয় জাপার কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক। ২০১০ সালে শাব্বির আহমদকে কেন্দ্রীয় জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব দেয়া হয়। বর্তমানে তিনি জাপার কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান।
দলীয় সূত্র জানায়, জকিগঞ্জের জাতীয় পার্টিকে শক্তিশালী করে তুলতে শাব্বির আহমদকে আহŸায়ক করে একটি কমিটি গঠন করে দেন পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের। পার্টির চেয়ারম্যানের নির্দেশনা অনুযায়ী ওয়ার্ড পর্যায় থেকে শুরু করে উপজেলা সদর পর্যন্ত জাপাকে শক্তিশালী করে তুলেছেন শাব্বির আহমদ। তৃণমূল পর্যন্ত জাতীয় পার্টির আদর্শ পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়েছেন তিনি।
স্থানীয়রা জানান, সামাজিক কর্মকান্ডে আলহাজ শাব্বির আহমদের বিশাল অবদান রয়েছে। শিক্ষা বিস্তারে কাজ করছেন নিরলসভাবে। শাব্বির আহমদ ট্রাস্টের মাধ্যমে প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দেয়া হয়। এছাড়া তিনি কয়েকটি মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি।
স্থানীয়রা জানান, করোনাভাইরাসের দুর্যোগ শুরু হয় যেসময়, ওইসময় শাব্বির আহমদ ফ্রান্সে ছিলেন। কিন্তু করোনা শুরু হওয়ার এক মাসের মাথায় তিনি দেশে ফিরেন। অবস্থান নেন এলাকায়। চারদিকে কর্মহীন খেটে খাওয়া মানুষের হাহাকার। ওই অবস্থায় শাব্বির আহমদ একাকী গ্রাম থেকে গ্রামে ছুটতে থাকেন। কর্মহীন মানুষের হাতে নগদ অর্থ সহায়তা তুলে দিতে শুরু করেন। সেই সাথে সাধারণ মানুষকে স্বাস্থ্য সচেতন করে তোলার প্রচারণাও চালান। স্বাস্থ্য সামগ্রী বিতরণ করেছেন পুরো এলাকায়। পুরো করোনাকালীন দুর্গত মানুষের পাশে ছুটে গেছেন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে।
স্থানীয়রা জানান, করোনার পরপরই শুরু হয় সিলেটের ভয়াবহ বন্যা। এই বন্যার সময় আলহাজ শাব্বির আহমদ আবার ছুটতে শুরু করেন অসহায় মানুষের পাশে। বন্যাকবলিত মানুষজনকে উদ্ধারের পাশপাশি তাদেরকে খাদ্য সহায়তা দিতে শুরু করেন। স্থানীয়রা জনবান্ধব জাতীয় পার্টির এই নেতাকে আগামী সংসদ নির্বাচনে সিলেট-৫ আসনে দেখার আকাক্সক্ষা প্রকাশ করেছেন।
দৈনিক বায়ান্ন থেকে যোগাযোগ করা হয় আলহাজ শাব্বির আহমদের সাথে। তিনি জানালেন আগামী সংসদ নির্বাচনে দলের মনোনয়ন চাইবেন। মনোনয়ন পেলে নির্বাচনে অংশ নেবেন।