বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু বলেছেন- যখন একটি দেশে অবৈধ সরকার থাকে, এই সরকার যখন দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ে তখন জনগণের দায়িত্ব হচ্ছে এই অবৈধ সরকারকে আন্দোলনের মাধ্যমে বিতাড়িত করা। আমাদের সকল নেতাকে নির্বাচনে নেওয়ার জন্য ষড়যন্ত্র করা হয়েছে কিন্তু তারা সফল হয় নি। আমাদের নেতা তারেক রহমানের আহবানে সাড়া দিয়ে দেশের অন্তত ৯৫ শতাংশ মানুষ ভোটে যায় নি। এটিই হচ্ছে বিএনপির সফলতা। জনগন এই অবৈধ সরকারকে মেনে নেবেনা। এখন দেশের বিরুদ্ধে দেশী বিদেশী ষড়যন্ত্র চলছে। তারা অবৈধ সরকারকে টিকিয়ে রাখতে পারবে না। সরকার দেশ থেকে পালিয়ে যাবে। আমরা এই সরকারকে বিদায় করেই ঘরে ফিরব ইনশাআল্লাহ।
শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টায় সিলেট নগরীর রেজিষ্ট্রারী মাঠে সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপি আয়োজিত কালো পতাকা মিছিলপূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। দ্রব্যমূল্যের সীমাহীন উর্ধ্বগতি, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াসহ সকল রাজবন্দীদের মুক্তি, সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও অবৈধ সংসদ বাতিলসহ ১ দফা দাবী আদায়ের লক্ষ্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই কালো পতাকা মিলি করে বিএনপি।
তিনি আরো বলেন, ব্যাংক লুট থেকে শুরু করে সরকারের অপকর্মে কথা বলে শেষ হবে না। অবৈধ সরকার মানুষের ঘাড়ে চেপে বসেছে। এরা বেশী দিন থাকলে বাংলাদেশ স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব হুমকিতে পড়বে। বিএনপি একটি শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক আন্দোলন করছে। প্রশাসনের উচিত অবৈধ সরকারের সঙ্গ না দিয়ে জনগনের সাথে থাকা। এই সরকারকে আমরা বিতাড়িত করতে সক্ষম হবো ইনশাআল্লাহ।
সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরীর সঞ্চালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্ঠা আরিফুল হক চৌধুরী, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিভ পার্টির চেয়ারম্যান কারী আবু তাহের, বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন।
জেলা ওলামা দলের আহবায়ক মাওলানা নুরুল হকের কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইন।
বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্ঠা আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত একদফা দাবী আদায় না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। আমাদের গ্রেফতারকৃত সকল নেতাকর্মীদের অবিলম্বে মুক্তি দিয়ে সকল রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। বিএনপি সাধারণ মানুষকে সাথে নিয়ে এই একদফা আন্দোলন চালিয়ে যাবে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন বলেন, দেশের মানুষ এই ডামি নির্বাচনকে প্রত্যাখ্যান করেছে। সাধারণ মানুষ ও বিশ্ব সম্প্রদায় এই সরকারকে প্রত্যাখ্যান করেছে। ইনশাআল্লাহ অতিশীঘ্রই একটি নির্দলীয় সরকারের অধিনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
সভাপতির বক্তব্যে সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, সরকারকে কালো পতাকা দেখিয়ে আমরা বলতে চাই, আপনি ৭ তারিখে ডানি নির্বাচন করে জাতিকে ধোকা দিয়েছেন। মানুষ তা বুঝে গেছে। তাই।দেশের ৯৮ শতাংশ সাধারণ মানুষ ভোট দিতে যায় নাই। দেশের গণতন্ত্র ও বাকস্বাধীনতাকে হত্যা করে এক তরফা নির্বাচনের নামে প্রহসনের নাটক মঞ্চস্থ করা হয়েছে। দেশের মানুষ যখন অর্থাভাবে নিত্যপণ্য ক্রয় করতে পারছে না, তখন নির্বাচনী নাটক করে জনগনের হাজার হাজার কোটি টাকা গচ্ছা দেয়া হয়েছে। এই নির্বাচনে মানুষ ভোট দিতে যায় নি, এতে প্রমাণিত হয় দেশের সিংহভাগ মানুষ গণতন্ত্র ও বাকস্বাধীনতার পক্ষে রয়েছে। তাই অবিলম্বে এই ডামি নির্বাচনের ডামি সংসদকে ভেঙ্গে দিয়ে নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকারের অধিনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন দিতে হবে।
মিছিলটি নগরীর রেজিস্ট্রারী মাঠ থেকে শুরু হয়ে নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়। মিছিলে কালো পাতাকা নিয়ে বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।