সুনামগঞ্জে যৌতুকের টাকা জন্য স্ত্রীকে হত্যার ঘটনার মামলায় ১৯ বছর পর স্বামী আব্দুল্লাহকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত। রোববার দুপুরে অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতের বিচারক মহিউদ্দিন মুরাদ এ রায় ঘোষণা করেন। দণ্ডিত আসামী আব্দুল্লাহ পলাতক রয়েছেন। মামলার অপর দুই আসামি খালাস পেয়েছেন।
রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট খায়রুল কবির রুমেন।
আদালত ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০০৩ সালের ৭ আগস্ট দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার জয়কলস গ্রামের আব্দুল্লাহের সাথে শেফালী বেগমের বিয়ে হয়। আর্থিক অভাব অনটনের কারণে তাদের সংসারে প্রায়ই ঝগড়া হতো। ঘটনার প্রায় ২ মাস পূর্বে আসামী আব্দুল্লাহ সৌদি আরব যাওয়ার জন্য তার স্ত্রী শেফালী বেগমের কাছে ১ লক্ষ টাকা যৌতুক দাবি করেন। টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে স্ত্রী শেফালী বেগমকে ২০০৩ সালের ২৭ অক্টোবর আব্দুল্লাহ শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে হত্যা করেন।
পরে বাড়ির পিছনে একটি আমগাছে ঝুলিয়ে রাখেন মরদেহ। খবর পেয়ে পুলিশ উপস্থিত হয়ে মৃতদেহের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করে এবং আলামত জব্দ করে। শেফালীর শরীরে বিভিন্নস্থানে জখম দেখতে পায় পুলিশ। শেফালী বেগমের ডান হাঁটুর নীচে ও বুকে জখম ছিল।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, শেফালীকে মারধর করে মুখে কাপড় গুজে দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন আব্দুল্লাহ। পরে হত্যার বিষয়টি ধামাচাপা দিতে মরদেহ আমগাছে ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা বলে প্রচার করেন।
ওই ঘটনায় শেফালী বেগমে মা মালেকা বেগম বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে স্বামী আব্দুল্লাহ, তার পিতা খাসিদ আলী ও মা সৈয়দুন্নেছার বিরুদ্ধে ২০০৪ সালে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। মামলার দীর্ঘ বিচারকার্য শেষে আদালত স্বামী আব্দুল্লাহকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন এবং তার পিতা-মাতাকে খালাস প্রদান করেন।