রাজশাহী জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের পাঁচ নেতার কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে বাস মালিকরা। তাদের অব্যাহত চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ তারা। ফলে এই চাঁদাবাজির প্রতিবাদে রাজশাহী থেকে ঢাকা রুটে দুই দিন ধরে বাস চলাচল বন্ধ রেখেছেন মালিক সমিতি।
সোমবার দুপুর থেকে প্রথমে কয়েকজন শ্রমিক আন্দোলন শুরু করেন দৈনিক মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে। পরে রাজশাহী থেকে ঢাকাগামী বাস চলাচল বন্ধ করে দেন বাস-ট্রাক অনার্স এসোসিয়েশন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার দুপুরের পর থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা ছাড়ায় রাজশাহী শিরোইল বাস স্টেশনের কয়েকজন শ্রমিক আন্দোলন শুরু করেন। এর পর দূরপাল্লার সকল রুটের বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। এতে দূভোর্গে পড়েন বিভিন্ন রুটে গন্তব্যে যাওয়া যাত্রীরা। এ বিষয় নিয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা দেয়নি রাজশাহী জেলা মোটরশ্রমিক ইউনিয়ন।
তবে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির রাজশাহী বিভাগীয় সভাপতি ও রাজশাহী সড়ক পরিবহন গ্রুপের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাফকাত মঞ্জুর বিপ্লব বলেন, ‘প্রথমে শুধুমাত্র দেশ ট্রাভেলস ও ন্যাশনাল ট্রাভেলস চলাচল বন্ধ রাখা হয়। পরে আন্তজেলার সব বাস বন্ধ করে দেন মালিকরা।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মাহাতাব উদ্দিন বলেন, শ্রমিকরা তাদের নিয়োগপত্র ও বেতন বৃদ্ধির জন্য আন্দোলন করছেন। আমরা তাদের সাথে আছি। তবে আদায়কৃত চাঁদার টাকা দিয়ে শ্রমিকদের উন্নয়ন করা হয় বলে দাবি করেন এই শ্রমিক নেতা।
দেশ ট্রাভেলসের মালিক বজলুর রহমান রতন বলেন, শ্রমিক ফেডারেশন থেকে বাসের চাঁদা ৩০ টাকা করে দুই সমিতিকে ৬০ টাকা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। কিন্তু রাজশাহী মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মাহাতাব উদ্দিন ও তার চার সহযোগী ফেরদৌস, সুলতান, গাজি এবং পাখি মিলে প্রতি বাস থেকে ৪৫০ টাকা করে চাঁদা আদায় করছে।
তিনি আরও বলেন, চাঁদর টাকা দিয়ে শ্রমিকদের উন্নয়নের কথা থাকলেও সেটি তারা না করে নিজেদের গাড়ী বাড়ি বানাচ্ছে। আর শ্রমিকদের মেয়ে বিয়ে, মৃত্য দাবি এখন আমাদের ঘাড়ে চাপানো হয়েছে। এর ওপর আবার নতুন করে শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধির দাবি তুলে কয়েকজনকে মাঠে নামিয়েছেন ইউনিয়নের নেতা মাহাতাব। এর প্রতিবাদে আমরা সব বাস বন্ধ করে দিয়েছি।
বজলুর রহমান রতন আরো বলেন, করোনাই ক্ষতিগ্রস্ত সবচেয়ে বড় সেক্টর পরিবহন। আমরা চরম দুর্দশায় আছি। আমরা যে চাঁদা দেয়, সেই টাকা শ্রমিকদের জন্য ব্যবহার না করে এখন আবার আমাদের পেছনে ক্ষেপিয়ে তুলেছেন ইউনিয়নের নেতারা। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া পর্যন্ত আমরা রাস্তায় বাস চালাবো না।