আলাউদ্দিনের ক্রিকেটার হওয়ার অদম্য ইচ্ছার কারণে প্রতিদিন সাইকেলে করে পাড়ি দেন ৫০ কিলোমিটার পথ। বামহাতি পেসার আলাউদ্দিনের বলের গতি ১২৫ থেকে ১৩০। নিজ উপজেলা ও গ্রাম ভিত্তিক টুর্নামেন্ট খেলে মুগ্ধতা ছড়ান। সেই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে স্বপ্ন বুনেন ক্রিকেটার হওয়ার। আর শুরু করে দেন কঠোর পরিশ্রম। কিন্তু ক্রিকেট যে রাজকীয় খেলা। ক্রিকেট উপকরণ ও প্রশিক্ষণ এ সব কিছুর জন্য চাই একটি সঠিক গাইড লাইন। যা তার নেই।
ক্রিকেট পাগল আলাউদ্দিন যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার শংকরপুর ইউনিয়নের জেকাঠি গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে। তার নেশা এখন ক্রিকেট। বাবার হাতে গড়ে উঠা দরিদ্র পরিবারের ছোট সন্তান আলাউদ্দিন। বাবা সাইকেল মিস্ত্রি আর বড় ভাই মাছ ধরার কাজ করেন। এ আয়ে সংসার চলে তাদের। নবম শ্রেনী থেকে উত্তীর্ন হয়ে দশম শ্রেণিতে উঠতেই আলাউদ্দিনের ক্রিকেটে পরিবারের নিষেধাজ্ঞা। কিন্তু দমে যাননি আলাউদ্দিন।
বড় ভাই আল আমিনের উৎসাহে ভর্তি হন সাতক্ষীরা কলারোয়া ক্রিকেট একাডেমিতে। বিপত্তি যাতায়াত। প্রতিদিন সাইকেল চালিয়ে ৫০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে কলারোয়ার মাঠে প্রাকটিস করছে আলাউদ্দিন।
কলারোয়া ক্রিকেট একাডেমির হয়ে কলারোয়ার মাঠে একাডেমিক ভিত্তিক টুর্নামেন্ট খেলে গত কয়েক আসরে করেছেন দুর্দান্ত পারফরমেন্স। তুলে নিয়েছিলেন উইকেট। বর্তমানে ভালো পারফরমেন্স করার কারনে আলাউদ্দিন যশোর জেলা ক্রিকেট একাডেমিতে সুযোগ পেয়েছেন।
আলাউদ্দিন জানান, জাতীয় দলের ক্রিকেটার মুস্তাফিজুর রহমান তার আইডল। তাকে অনুসরণ করেই যাত্রা করেন। সুযোগ পেলে দেখা করতে চান মুস্তাফিজুর রহমানের সাথে। নিতে চান টিপস আর ভবিষ্যতে জাতীয় দলে জায়গা পেলে দলকে উপহার দিতে চান নিজের সেরা ক্যারিয়ার।
তিনি আরও বলেন, আমি দরিদ্র ঘরের সন্তান হয়ে জন্ম নিয়েছি। একাডেমির মিলন স্যারসহ আমার বন্ধুরা আমাকে খুব দেখভাল করেন। আমার কষ্টে ব্যথিত হন সবাই। আমাকে ক্রিকেটের বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন মিলন স্যার।
লন্ডন ক্রিকেট গ্রাউন্ড দলের অধিনায়ক ও ঝিকরগাছার জেকাঠি গ্রামের কৃতি সন্তান আবুল কালাম আজাদ জানান, আলাউদ্দিন একজন ভালো মানের ক্রিকেটার। তার স্বপ্ন জাতীয় দলের খেলা। দরিদ্র ঘরের সন্তান হওয়াই এটা তার অনেকটা বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ১২৫ থেকে ১৩০ গতি তার বলে। এই মুহুর্তে ভালো ক্রিকেটার তৈরি করতে তৃণমূলে মানসম্মত প্রশিক্ষক প্রয়োজন। তাহলে আলাউদ্দিনের এত কষ্ট করতে হবে না।
আলাউদ্দিনের স্বপ্ন মুস্তাফিজুর রহমানের মত ক্রিকেটার হয়ে জাতীয় ক্রিকেটে বড় অবদান রাখবেন। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছেন সে।