ঢাকা, মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

বেনাপোল-যশোর-সাতক্ষীরা সড়কের পরিবহনে নেই স্বাস্থ্যবিধির বালাই

বেনাপোল প্রতিনিধি : | প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার ৮ ফেব্রুয়ারী ২০২২ ১১:২৭:০০ পূর্বাহ্ন | দেশের খবর

করোনার ‘লাল’ তালিকাভুক্ত যশোরে স্বাস্থ্যবিধি পালনের নিষেধাজ্ঞার প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ধারণক্ষমতার বেশি যাত্রী নিয়ে বেনাপোল-যশোর ও সাতক্ষীরার রুটে আন্ত:জেলার মধ্যে যানবাহন চলাচল করছে।

যশোর-বেনাপোল ও যশোর-সাতক্ষীরা মহাসড়কে আন্ত:জেলার মধ্যে চলাচলকারি বাস ও তিনচাকাগুলোতে ধারণক্ষমতার বেশি যাত্রী বহন করা হচ্ছে। এসব বাসের চালক, সুপারভাইজার ও সহকারীদের কারও মুখে মাস্ক নেই। যানবাহনে হ্যান্ড সেনিটাইজার কিম্বা জীবানুনাশক স্প্রে করার কোন ব্যবস্থা না রেখেই গতানুগতিক ভাবে যাত্রী বহন করা হচ্ছে।

বেনাপোল ও নাভারন বাসস্ট্যান্ডে দেখা গেছে এসব চিত্র। বেনাপোল থেকে আন্ত:জেলার মধ্যে চলাচল করা বাস ছাড়াও দেশের অভ্যন্তরে অন্তত ১৪টি রুটে পরিবহন যাতায়াত করে। আর বাগআঁচড়া থেকে যশোরমুখী বাসগুলো চলাচল করে। মহামারীর বিস্তার ঠেকানোর লক্ষে বাসে ও তিনচাকায় অর্ধেক যাত্রী নেওয়ার কথা থাকলেও চালকরা আগের মতোই যাত্রী বহন করছেন। চালক ও যাত্রীরা শারীরিক দূরত্বের বিষয়টি মোটেও তোয়াক্কা করছেন না। এমন কি মাস্কের ব্যবহারও উঠে গেছে।

চালকের সহকারীকে মাস্ক ব্যবহার না করার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, মাত্রই তো বিধিনিষেধ শুরু হলো, আরেকটু বাড়ুক তখন আবার নিয়মিত মাস্ক পরবো। মাস্ক পরে কথা বলা যায় না।

বাসে এত যাত্রী তোলার কারণ জানতে চাইলে সুপারভাইজার (কন্ডাক্টর) লুৎফর রহমান বলেন, আমরা তো প্রতিদিনই এমন যাত্রী বহন করি। অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলতে হবে, তারপরও তো এভাবে চলছি। কেউ তো কিছু কচ্ছে না। এই ক’দিন একটু যাত্রী বেশি হচ্ছে।

মাস্ক ব্যবহার না করার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে যাত্রীদের কেউ কেউ বলেন, মুখ থেকে পড়ে গেছে। কেউ বলেন, আনতে ভুলে গেছেন। আবার কেউ বলেন, খুলে পকেটে রেখেছি।

বাসযাত্রী নাভারনের আব্দুল মতিন বলেন, সবাই কচ্ছে তবে কেউ তো মাস্ক পরছে না। নাকের মদ্দি শিরশির করে তাই মাস্ক পরতি পারিনে।

এমনই চিত্র দেখা গেছে বাসের অধিকাংশ যাত্রীর ক্ষেত্রে। সবারই বিধিনিষেধ মানায় অনীহা। অথচ প্রতিদিনই যশোরাঞ্চলে বাড়ছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ।

যশোরে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় ও করোনা উপসর্গ নিয়ে চার জন মারা গেছেন। নতুন করে ২৯০ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৬৫ জন আক্রান্ত হয়েছেন। 

যশোর জেনারেল হাসপাতালের আরএমও আরিফ আহমেদ জানিয়েছেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ২৯০ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৬৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। করোনা শনাক্ত হার প্রায় ২৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। করোনায় মারা গেছে তিনজন আর উপসর্গ নিয়ে মারা গেছে এক জন। হাসপাতালে ভর্তি আছে ২২ জন। আইসোলেশনে ২৬০১ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আক্রান্তের মধ্যে সদর উপজেলায় ৫১ জন, অভয়নগরে এক জন, চৌগাছায় চারজন, ঝিকরগাছায় দুইজন, কেশবপুরে দুইজন, মণিরামপুরে দুইজন, শার্শায় তিনজন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।

এ নিয়ে যশোরে মোট করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২৪ হাজার ৫৯৯ জন। সুস্থ হযেছেন ২১ হাজার ৯৯৮ জন। মৃত্যুবরণ করেছেন ৫২৭ জন। হাসপাতালে ২২ জন ভর্তি এবং আইসোলেশনে ১৫ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মীর আলিফ রেজা বলেন, আমরা অনেক চেষ্টা করছি, মাইকিং করেছি, নিজে সরেজমিনে বুঝিয়েছি, জরিমানা করেছি। কিন্তু মানুষ তো অসচেতন, কিছুই মানতে চাচ্ছেনা।  ধর্মের দোহাই দিচ্ছে, আরও কতো কি ব্যাখ্যা। আমাদের নিজ থেকে সচেতন না হলে আসলেই তা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়।