যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের গা ঘেঁষে এবং পরিত্যাক্ত ভবনের ভেতর, সীমানা প্রাচীরের আনাচে-কানাচে পাওয়া যাচ্ছে সদ্য ফেলনা মাদক বহন কারী বোতল সহ ফেনসিডিলের বোতল। এরই মধ্যে পৃথক অভিযানে হাসপাতাল থেকে তিন মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করেছে পুলিশ।
সরেজমিনে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের ১নম্বর গেটের পাশে শৌচাগারের পেছনে এবং হাসপাতালের পেছনে গাড়ি পার্কিং সেডের পেছনে দেখা যায় সদ্য ফেলা একাধিক ফেনসিডিলের বোতল। অনুসন্ধানে জানা যায়, রাতের বেলায় হাসপাতালে ওয়ার্ডে ভর্তি রোগীর স্বজনদের আনাগোনা ছাড়া বাহিরে তেমন লোকের আনাগোনা থাকে না। হাসপাতালের জরুরী বিভাগের সামনে শুধু পুলিশের নিরাপত্তা কর্মী এবং এ্যাম্বুলেন্স চালকেরা অবস্থান করে। তবে হাসপাতালে পেছন সাইড এবং মর্গের রাস্তায় কোন লোকের আনাগোনা না থাকায় এই সুযোগে গভীর রাতে হাসপাতালে এ সকল নির্যন জায়গা সেবন ও লেনদেন করার কাজে ব্যবাহার করে মাদক সেবনকারী ও ব্যবসায়ীরা। মর্গের রাস্তায় পরিত্যাক্ত স্টাফ কোয়ার্টারের মধ্যে সহজে কেউ প্রবেশ করে না। ফলে সেখানে এক দশকের পরিত্যাক্ত ভবনের মধ্যে বসে মাদক সেবন করলে বোঝার কোন উপায় নেই।
এদিকে হাসপাতালে লাশ কাটা ঘরের অপজিটে সীমানা প্রাচীর নিচু এবং টপকাতে সহজ হওয়ায় বাহিরে থেকে সেবনকারী এবং মাদক কারবারিদের প্রাচীর টপকিয়ে হাসপাতালের ভেতরে প্রবেশ করতে কোন সমস্যা হয় না। এতে অনায়াসে হাসপাতালে প্রবেশ করে পরিত্যাক্ত ভবন এবং ঝোপ ঝাড়ের মধ্যে বসে নিশ্চিন্তে মাদক সেবন করা যায়। নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক এ্যাম্বুলেন্স চালক বলেন, রাতের বেলা আমরা কয়েলজন এ্যাম্বুলেন্স চালক গাড়ির ভেতরেই বসে থাকি। আমাদের চোখে যতটুকুু দেখেছি রাত ১১টা থেকে ১২টার দিকে একটা খালি ইজিবাইক হাসপাতালের মধ্যে ঢুকে হাসপাতালের পেছনের দিকে যায়। আমাদের সন্দেহ হয় ইজিবাইকের উপর।
কারন হাসপাতাল চত্তরে যত ইজিবাইকের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে ততোই ফেনসিডিল, মদের বোতল ফেলানো অবস্থায় দেখছি। হাসপাতালে দায়িত্বরত পুলিশে এএসআই আবু সালেহ জানান, হাসপাতালের ভেতরে সার্বিক নিরাপত্তার এবং মাদক কারবারিদের ব্যাপারে আমি সজাগ দৃষ্টি রাখি। এদিকে গত ২৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায় যশোর জেনারেল হাসপাতালের মধ্যে এক নারী মাদক কারবারিকে ১১০ গ্রাম গাজা এবং গত ২৯ জানুয়ারি রাতেও হাসপাতালের করোনারী কেয়ার ইউনিটের সামনে থেকে দুই মাদক কারবারি কে ত্রিশ পিচ ইয়াবা এবং চাকু সহ গ্রেফতার করে পুলিশ। এ নিয়ে হাসপাতাল চত্ত্বর থেকে গত চার দিনের ব্যবধানে তিন মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করেছে পুলিশ। এতে হাসপাতাল চত্ত্বরে মাদক কারবারিরা কিভাবে প্রবেশ করে, হাসপাতালের ভেতর কাদের কাছে মাদক বিক্রি করে এবং কারাই বা এই মাদক সেবন করে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে জনমানে।
এ ব্যাপারে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা.আখতারুজ্জামান বলেন, হাসপাতালে গত চারদিনে তিন মাদক কারবারিকে পুলিশ আটক করেছে। হাসপাতালে মাদক ব্যবসায়ী এবং সেবনকারীদের আনাগোনা নির্মূল করার লক্ষ্যে আমরা সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করেছি। হাসপাতালে নিরাপত্তার ব্যপারে আরও জোরদার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।