পর্যটনের সময় ঘনিয়ে আসছে। নভেম্বর থেকে সিলেটের পর্যটন কেন্দ্রগুলো জমজমাট হয়ে উঠবে। প্রায় ৬ মাস ওই জমজমাট অবস্থা থাকবে। বছরের বাকি ৬ মাসও পর্যটন কেন্দ্রগুলো জমজমাট থাকে অপেক্ষাকৃত কম। তবে পর্যটন কেন্দ্রগুলো কোনো সময়ই মানুষ শূন্য থাকে। প্রাকৃতিকভাবে গড়ে উঠা সিলেটের পর্যটন কেন্দ্রগুলো আজো পরিকল্পিতভাবে পরিচালিত হচ্ছে না। ফলে মাঝে মধ্যে এসব পর্যটন কেন্দ্রে বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ঘটে। একই সঙ্গে এসব পর্যটন কেন্দ্র থেকে মোটা অঙ্কের রাজস্ব আয়ের সম্ভাবনা থাকলেও সরকার তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এই অবস্থায় পর্যটন কেন্দ্রগুলোকে পরিকল্পিতভাবে পরিচালিত করা এখন সময়ের দাবি।
দৈনিক বায়ান্নের কাছে সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার দুই বারের চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন সিলেটের পর্যটন খাতগুলো নিয়ে নানান দিক তুলে ধরেছেন।
তিনি জানান, সিলেট জেলার সীমান্তবর্তী উপজেলা জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জে প্রায় ডজনখানিক পর্যটন কেন্দ্র রয়েছে। যা গড়ে উঠেছে প্রাকৃতিকভাবে। এসব পর্যটন কেন্দ্রের নৈসর্গিক সৌন্দর্যের বার্তা বাংলাদেশের আনাচে কানাছে ছড়িয়ে আছে। বিশেষ করে জাফলংয়ের সৌন্দর্যের কথা ব্যাপকভাবে সুপরিচিত।
জয়নাল আবেদীন জানান, জৈন্তাপুরের লালাখালের সৌন্দর্য মানুষের মনে সৃষ্টি করে বিস্ময়। লালাখালের নীল পানিতে নৌকা নিয়ে ঘুরে বেড়াতে পর্যটকরা পছন্দ করেন। মনকে সতেজ করে তোলে এই সৌন্দর্য। একই উপজেলার লাল শাপলার বিলে সাত সকালে ছুটে যান পর্যটকরা। ফুটে থাকা রাশি রাশি লাল শাপলার সাথে মিতালী করেন তারা। এই উপজেলায় জৈন্তার রাজবাড়ী, খাসিয়া পুঞ্জিসহ পাহাড় বেষ্টিত আরো অনেক পর্যটন কেন্দ্র রয়েছে।
তিনি জানান, গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং পর্যটন কেন্দ্রে ঘুরতে না গেলে মনের ক্ষুধা মিঠে না পর্যটকদের। এই উপজেলায় রয়েছে বিছনাকান্দি, পান্থুমাইসহ বেশ কয়েকটি পর্যটন কেন্দ্র। কোম্পানীগঞ্জের সাদাপাথর অনেক অনেক পরিচিত লাভ করেছে। এই উপজেলায় রয়েছে আরো বেশ কয়েকটি পর্যটন কেন্দ্র।
জয়নাল আবেদীন জানাচ্ছিলেন, সিলেটের এসব পর্যটন কেন্দ্র অপার সম্ভাবনাময়। প্রাকৃতিকভাবে গড়ে উঠা এসব পর্যটন কেন্দ্রে প্রতিদিনই বিপুল সংখ্যক মানুষ ছুটে আসেন মনের ক্ষুধা নিবারণ করতে। কিন্তু ঘুরতে আসা এসব পর্যটকরা পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত থাকেন। স্যানিটেশনের ব্যবস্থা নেই বললেই চলে। যা আছে তা অনেকটা সেকেলে। এই অবস্থায় আধুনিক সুযোগ সুবিধার স্যানিটেশন ব্যবস্থা চালু করা যায়। পর্যটন কেন্দ্রগুলোকে যারা তদারকি করেন তাদের কাছে মাঝে মধ্যে পর্যটকরা হয়রানীর শিকার হন। জরুরি স্বাস্থ্যসেবার কোনো ব্যবস্থা নেই।
জয়নাল আবেদীন বলেন, সিলেটের এসব পর্যটন কেন্দ্র নিরাপদ করে তুলতে পর্যটন মন্ত্রনালয় পদক্ষেপ নিতে পারেন। পর্যটন মন্ত্রনালয়ের নিয়ন্ত্রনে পর্যটন কেন্দ্রগুলো পরিচালিত হলে সরকার অনেক রাজস্ব আয় করতে পারবেন এখান থেকে। সেই সাথে পর্যটন কেন্দ্রগুলো পর্যটনবান্ধব হিসেবে গড়ে তুলতে পারবে।
তিনি বলেন, এছাড়া এসব পর্যটন কেন্দ্রের বিশেষ করে জাফলংয়ের পিয়াইন নদীতে নেমে অনেক সময় চোরাবালিতে আটকা পড়ে প্রাণ হারাতে হয় পর্যটককে। এই পিয়াইন নদীর ঝুঁকিপূর্ন এলাকা চিহ্নিত করে সেখানে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা যেতে পারে।
জয়নাল আবেদীন সিলেটের পর্যটন কেন্দ্রগুলোকে পর্যটনবান্ধব হিসেবে গড়ে তুলতে সরকারের পরিকল্পিত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।