ঢাকা, মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

হিলি বন্দরে আমদানি বাড়ায় বেড়েছে রাজস্ব আদায়

মোঃ লুৎফর রহমান, হিলি (দিনাজপুর)প্রতিনিধি : | প্রকাশের সময় : সোমবার ৭ ফেব্রুয়ারী ২০২২ ০৪:২৪:০০ অপরাহ্ন | দেশের খবর

ভারত থেকে পণ্য আমদানি বাড়ায় দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরে বেড়েছে রাজস্ব আদায়। জানুয়ারিতে জাতীয় রাজস্ব ^ বোর্ডের (এনবিআর) বেঁধে দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৩ কোটি টাকা। আর রাজস্ব আদায় হয়েছে ৪৩ কোটি টাকা, অর্থাৎ এক মাসে রাজস্ব বৃদ্ধি পেয়েছে ১০ কোটি টাকা। জানুয়ারিতে ভারত থেকে পণ্য আমদানি হয়েছে এবন্দরে ২২ লাখ ৭ হাজার ২৬৮  মেট্রিকটন।

 সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে  বিষয়টি জানিয়েছেন হিলি কাস্টমসের ডেপুটি কমিশনার কামরুল  ইসলাম।

হিলি স্থলবন্দর ও কাস্টমস ঘুরে দেখা যায়, সকাল থেকে লাইন ধরে এই বন্দরে প্রবেশ করছে ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রাক। বন্দরের স্কেলে গাড়িসহ মালামাল ওজন করছেন বন্দর কর্মীরা। তা আবার বন্দর অভ্যতরীণে ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রাকগুলো আনলোড ও দেশি ট্রাকগুলো লোড করছেন বন্দর শ্রমিরা। পণ্য খালাস করে নিজ দেশে গাড়িসহ ফিরে যাচ্ছেন ভারতীয় গাড়ি চালকরা।

গত ডিসেম্বর তুলোনায় জানুয়ারি মাসে রাজস্ব বৃদ্ধি পেয়েছে ১০ কোটি টাকা।  এদিকে ব্যবসায়ীদের দাবি যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল হলে আরও বাড়বে পণ্য আমদানি সহ রাজস্ব আদায়। 

সম্প্রতি গত ডিসেম্বর মাসে এই বন্দরে গড়ে প্রতিদিন ভারতীয় পণ্যবাহী গাড়ি প্রবেশ  করতো ১৬০ থেকে ১৮০ গাড়ি। তা আবার বৃদ্ধি পেয়ে জানুয়ারি মাসে এবন্দরে প্রবেশ  করেছে ২৫০ থেকে ২৮০ ভারতীয় পণ্যবাহী গাড়ি।

হিলি স্থলবন্দরের  শ্রমিক  প্রধান  গোলাম মোর্শেদ বলেন, হিলি স্থলবন্দরে আমদানি বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই শ্রমিকদের কাজের পরিমাণও বেড়ে গেছে। সরকারি বিধিনিষেধ অনুযায়ী বন্দরে  ম্রমিক  লোড-আনলোডের কাজ করছেন। সব  শ্রমিকদের টিকার আওতায় আনা হয়েছে।

হিলি স্থলবন্দরের আমদানি কারক শাহিনুর রেজা শাহিন বলেন, হিলি বন্দরের অবকাঠামো কিছুটা বৃদ্ধির কারণে ভারত থেকে আমদানি বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমান আমরা আগের চেয়ে বেশি পণ্য আমদানি করছি। তবে যদি সরকার হিলির অবকাঠামোগুলো আরও উন্নত করে এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল করে তাহলে আমদানি-রপ্তানি বৃদ্ধি সহ বাড়বে সরকারি রাজস্ব।

হিলি পানামা পোর্ট লিংকের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহারব হোসেন প্রতাব মল্লিক বলেন, করোনা ও ওমিক্রনের মধ্যদিয়ে এই বন্দরে আমদানি-রপ্তানি স্বাভাবিক রয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনেই সকল কার্যক্রম চলছে। ইতিপূর্বে ভারত থেকে পণ্য আমদানি হয়েছিল প্রতিদিন ১৫০ থেকে ১৬০ গাড়ি, বর্তমান তা বৃদ্ধি পেয়ে ২৫০ থেকে ২৬০ গাড়ি পণ্য আমদানি হচ্ছে। 

 

হিলি স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানি কারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশিদ হারুন বলেন, হিলি বন্দরের বেশকিছু সমস্যা আছে। এখানকার রাস্তা-ঘাট , জরাজীর্ণ এবং ভাঙাচোরা অবস্থায় আছে। সরকার যদি এসব সমস্যার সমাধান করেন, তাহলে এবন্দরে ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করে স্বস্তি পাবে। পূর্বের চেয়ে বন্দরে আমদানি বেড়ে গেছে, ভবিষ্যতে আরও বৃদ্ধি পাবে যদি বন্দর সড়কের উন্নয়ন হয়। আমরা আশাবাদী সড়ক সমস্যার অবসান হলে এবন্দরে  প্রতিদিন ৫০০ থেকে ৬০০ পণ্যবাহী ভারতীয় গাড়ি আমদানি হবে। পাশাপাশি সরকারের রাজস্বও অনেক গুনে বেড়ে যাবে।

হিলি কাস্টমসের ডেপুটি কমিশনার কামরুল ইসলাম বলেন, গত অর্থ বছরের জানুয়ারি  মাসে পর্যন্ত হিলি কাস্টমসে রাজস্ব আদায় হয়েছিল ১৭৩ কোটি টাকা। বর্তমান চলতি অর্থ বছরের জানুয়ারি  মাস পর্যন্ত  রাজস্ব আদায় হয়েছে ২৩৮ কোটি টাকা, অর্থাৎ ৬৫ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে এবন্দরে। গত ২০২০-২১ অর্থ বছরে রাজস্বর লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ৩১২ কোটি টাকা, আদায় হয়েছিল প্রায় ৪০০ কোটি টাকা। চলতি অর্থ বছরে ইতিমধ্যে রাজস আদায় হয়েছে ২৩৮ কোটি টাকা। জানুয়ারি মাসে রাজস্বর লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৩ কোটি টাকা, আদায় হয়েছে ৪৩ কোটি টাকা। জানুয়ারিতে রাজস্ব বৃদ্ধি পেয়েছে ১০ কোটি টাকা।

তিনি আরও জানান, ২০২১-২২ চলতি অর্থ বছরে আরও ৫ মাস বাঁকি রয়েছে। আশা করছি বাঁকি ৫ মাসে গত অর্থ বছরের চেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় হবে এই বন্দরে।