ঢাকা, মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

আন্দোলন অব্যাহত পেট্রাপোল বন্দরে, চার দিন ধরে বন্ধ আমদানি-রফতানি

বেনাপোল প্রতিনিধি : | প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার ৩ ফেব্রুয়ারী ২০২২ ০১:২৭:০০ অপরাহ্ন | দেশের খবর

চার দিন ধরে বেনাপোল সীমান্তের বিপরীতে ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে বন্ধ রয়েছে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য। পেট্রাপোলসহ কলকাতায় একাধিক বৈঠক হলেও কোন সুরাহা হচ্ছে বিষয়টি নিয়ে। বুধবার কলকাতায় শুল্ক দফতরের সঙ্গে ক্লিয়ারিং এজেন্টদের বৈঠক হলেও কোন সমাধান হয়নি। বার বার এই বিষয়ে আলোচনা করে কোনও সুরাহা মেলেনি বলেও অভিযোগ আমদানি-রফতানি কাজে জড়িতদের। ফলে দু’দেশের বন্দর এলাকায় আটকা পড়েছে শত শত পণ্যবাহী ট্রাক। 

বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দরের মধ্যে আমদানি-রফতানি বন্ধ থাকলেও বেনাপোল বন্দরে পণ্য খালাস, পণ্য উঠানামা ও শুল্কভবনের সকল কাজকর্মসহ দু’দেশের মধ্যে যাত্রী পারাপার স্বাভাবিক রয়েছে।

এদিকে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ক্লিয়ারিং এজেন্টরা পেট্রাপোলের বাকি সংগঠনের নেতাকর্মীদেরকে নিয়ে বৈঠকে বসে সিদ্ধান্ত নেবেন এই আন্দোলন চলবে না কি কর্মবিরতি থেকে সরে দাঁড়িয়ে ফের চালু করবেন আমদানি-রফতানির কাজ। এদিনের বৈঠকের পর কি সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে তা আজই জানিয়ে দেওয়া হবে শুল্ক দফতরকেও।

পেট্রাপোল এক্সপোর্ট এন্ড ইমপোর্ট এ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক প্রদীপ দে বলেন, টানা চার দিনে পড়ল আন্দোলন। পেট্রাপোল বন্দর বন্ধ থাকায় ক্ষতির মুখে পড়েছে সীমান্ত বাণিজ্য। আমরা চাই দ্রুত এর সমাধান করে ফের কাজের গতি আসুক বন্দরে। বৃহস্পতিবারের বৈঠকের ফল কি হয় তা দেখার জন্যও মুখিয়ে আছে আন্দোলনকারীরা।

বন্দরের অভ্যন্তরে পণ্যবাহী ট্রাক রাখার জায়গায় চালক ও খালাসিদের ঢুকতে দেওয়ার দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। কিছু দিন আগেই স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিলেন, কোনও ট্রাককে বৈধ কাগজপত্র ছাড়া বন্দরে ঢুকতে দেওয়া হবে না। তার পর থেকেই বৈধ কাগজ ছাড়া ট্রাক চালক ও খালাসিদের ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ।

যদিও আমদানি-রফতানির কাজে জড়িতদের দাবি, করোনা আবহে অনেক গাড়ির কাগজ পূর্ন নবায়ন করা হয়নি। তার মাঝেই হঠাৎ করে এই নতুন নিয়মের কারণে প্রচুর পণ্যবাহী ট্রাক আটকে যাবে বলেও আশঙ্কা তাদের। তাই আগামী ৬ মাস গাড়ির কাগজ বৈধ করার সময় চেয়েছেন আন্দোলনকারীরা। তাদের আরও দাবি, তত দিন পর্যন্ত যেন তাদের ট্রাক আটকানো না হয়। দাবি না মেনে নেওয়া পর্যন্ত তারা এই ভাবেই আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলেও জানিয়েছেন।

ভারতীয় বিএসএফ ও পেট্রাপোল ল্যান্ড পোর্ট অথরিটির হঠকারী সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন, পেট্রাপোল এক্সপোর্ট এন্ড ইমপোর্ট অ্যাসোসিয়েশন, সিএন্ডএফ স্টাফ অ্যাসোসিয়েশন, বনগাঁ গুডস ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশন, বনগাঁ নব ট্রাক মালিক সমিতি, বনগাঁ মোটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন, সীমান্ত পরিবহন মালিক সমিতি ও শ্রমিক সংগঠনসহ ৮টি সংগঠন সোমবার (৩১ জানুয়ারি) সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতির ডাক দেয়।

পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ার এ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, বুধবার শুল্ক দফতরের সঙ্গে কলকাতাতে দীর্ঘ সময় ধরে চলা বৈঠকে ক্লিয়ারিং এজেন্টরা তাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে শুল্ক দফতরের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদেরকে তাদের দাবি সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানান। তবে কোন সবুজ সংকেত এখনও পর্যন্ত মেলেনি বা সেখান থেকে কোনও সমাধান সূত্র পাওয়া যায়নি। আমদানি-রফতানি কাজে বন্দর অভ্যন্তরে প্রবেশসহ নানা হয়রানি বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।

বেনাপোল বন্দরের উপপরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবীর তরফদার বলেন, ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে ধর্মঘটের কারণে বৃহস্পতিবার চতুর্থ দিনের মতো বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানি বন্ধ রয়েছে। তবে তারা বৈঠকের মাধ্যমে বিষয়টি মিমাংসার চেষ্টা চালাচ্ছেন। আমদানি-রফতানি রপ্তানি বন্ধ থাকলেও বেনাপোল বন্দরে পণ্য খালাস, পণ্য উঠানামা, শুল্কভবনের কাজকর্ম ও যাত্রী পারাপার স্বাভাবিক রয়েছে।