যশোরের ঝিকরগাছায় মসজিদে যাওয়ার রাস্তা দখল করে দোকান ঘর নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। গত ৩০ জানুয়ারি এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর শংকরপুর ইউনিয়নের ফেরিঘাট জামে মসজিদের কমিটির পক্ষে একটি অভিযোগ করা হয়। অভিযোগে শংকরপুর কুলবাড়িয়া গ্রামের হোটেল ব্যাবসায়ী মো. আলাউদ্দিনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তদন্তের আগেই যেখানে নির্মাণ কাজ চলছে সেখানে কি তদন্ত হবে সেটা সবাই জেনে গেছে।
কমিটির সভাপতি মিজানুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুস ছাত্তার স্বাক্ষরিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উল্লেখিত মসজিদের সামনে দিয়ে একটি রাস্তা ও সরকারি খাস জমি দীর্ঘদিন ধরে পুকুর অবস্থায় ছিল এবং সেটি লিজ নিয়ে মসজিদ ভোগদখল করছিল। মসজিদের মুসল্লিদের জানাজাসহ অন্যান্য ধর্মীয় সভা সমাবেশ পালন করতে এবং পুকুরের মধ্যে মসজিদ ভাঙনের হাত থেকে রক্ষার জন্য ওই জমি প্রায় ১০ লাখ টাকা খরচ করে মাটি ভরাট করা হয়। বর্তমানে জমির উত্তরে মো. আলাউদ্দীন তার নিজস্ব জমির সাথে রাস্তা ও খাস জমি অবৈধভাবে দখল করে পাকা ঘর নির্মাণ করছেন। এরই মধ্যে ঘর নির্মাণের প্রায় অর্ধেক কাজ সম্পন্ন হয়ে গেছে।
বাঁকড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ দু‘দফা ঘটনাস্থলে এসে কাজ বন্ধ করে চলে যাওয়ার পরদিন হতে পুনরায় কাজ চালিয়ে যাচ্ছে আলাউদ্দীন।
তারপর ভূমি অফিস থেকে বলার পর কয়েকদিন কাজ বন্ধ ছিল। সম্প্রতি ঝিকরগাছা উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে যাওয়ার পর আবার পুরোদমে নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন আলাউদ্দীন।
এদিকে লিখিত অভিযোগের এক সপ্তাহ পার হলেও কাজ বন্ধ হওয়া তো দুরের কথা বহাল তবিয়তে সরকারি রাস্তা ও খাস জমি দখল করে দোকান ঘর নির্মান অব্যাহত রয়েছে। এর ফলে সস্থানীয়দের মাঝে নানান প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। অভিযোগ দেওয়ার পরে কার ক্ষমতার জোরে সরকারি রাস্তা ও খাস জমি দখল করে দোকান ঘর নির্মান করছে আলাউদ্দীন এমন আলোচনা সবার মুখে মুখে। তবে একটি সুত্র জানিয়েছে, স্থানীয় চেয়ারম্যানসহ প্রভাবশালী নেতারা মোটা অর্থের বিনিময়ে ইন্ধন যোগাচ্ছে এমনটায় অভিযোগ।
অভিযুক্ত আলাউদ্দিন বলেন, ক্রয় করা জমিতে বাড়ি নির্মাণ করছি। শংকরপুর গ্রামের সাবেক মেম্বার আহসানের কাছ থেকে ওই জমি আমি কিনেছি। সরকারি জমিতে ঘর নির্মাণের অভিযোগ ভিত্তিহীন।
এ ব্যাপারে বাঁকড়া ভূমি অফিসের ভূমি কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। আলাউদ্দীন জানিয়েছেন তার কেনা জমিতে নির্মাণ কাজ করছেন। মসজিদ কমিটির অভিযোগের প্রেক্ষিতে সবাইকে নিয়ে দুই এক দিনের মধ্যে বসে সমগ্র বিষয়টির একটি তদন্ত প্রতিবেদন উপজেলা ভূমি কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহবুবুর হক বলেন, বিষয়টি জমি সংক্রান্ত। তাই অভিযোগটি সহকারী কমিশনার (ভূমি) দফতরে প্রেরণ করা হয়েছে। তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।