ঝিনাইদহে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে থাকা শতাধিক ব্রীজ চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। নির্মানের পর আর সংস্কার না করায় এ বেহাল দশা ব্রীজ গুলোর। তারপরও ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দা ও কৃষকরা। এতে প্রায় ঘটছে দুর্ঘটনা। দ্রুত এসব ব্রীজগুলো সংস্কার বা নতুন করে নির্মাণের দাবী স্থানীয়দের।
ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলার বেলতলা গ্রামের এই ব্রীজটি ভেঙ্গেছে প্রায় ১৫ বছর আগে। স্থানীয় বাসিন্দা ও কৃষকরা কাঠ ও বাঁশ দিয়ে মেরামত করে কোনমত চলাচল করে। তবে মাঠ থেকে ফসল আনতে হলে ঘুরতে হয় প্রায় ৫ কিলোমিটার। জোড়াদহ ও ফসলি ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ এদিক দিয়ে চলাচল করলেও ব্রীজটি সংস্কারে নেই কোন উদ্যোগ।
পাশের ফুলবাড়িয়া গ্রামের ব্রীজটি ভেঙ্গেছে তিন বছর আগে। ব্রীজের মাঝখানে বড় ছিদ্র হওয়ায় পারাপার হচ্ছে না কোন যানবাহন। কোনোটির মাঝবরাবর ভেঙে দেবে গেছে। কোনোটির রেলিং ভাঙা, আবার কোনোটির পাটাতন ভেঙে পড়ে আছে। বেরিয়ে এসেছে রড। পিলার-পাটাতনের পলেস্তারাও উঠে গেছে। কয়েক বছর ধরে ক্রমেই খারাপ হচ্ছে এসব সেতুর অবস্থা। কালের নিয়মে সেতুগুলোর তলায় কংক্রিটের ঢালাই ফেটে, মরচে পড়া রডের খাঁচা খুলে ঝুলছে। সরু ইটের গাঁথনির রেলিং-ও খুলে গেছে অধিকাংশ সেতুর। ভেঙে যাওয়া অংশে কাঠ ও বাঁশ বিছিয়ে ঝুঁকি নিয়ে নিত্য যাতায়াত করছেন গ্রামের কয়েক হাজার বাসিন্দা। কোনমত ভ্যান, মোটর সাইকেল পার হলেও প্রায় ঘটছে দুর্ঘটনা। হরিণাকুন্ডুর মত পার্শবর্তী উপজেলা শৈলকুপা ও সদরের অধিকাংশ ব্রীজের একই দশা। ব্রীজগুলো ভেঙ্গে যাওয়া ভোগান্তি রয়েছে স্থানীয়রা। তাই দ্রুত ব্রীজগুলো সংস্কার বা নতুন করে নির্মাণের দাবী তাদের।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের গঙ্গা-কপোতাক্ষ সেচ প্রকল্পের আওতায় ঝিনাইদহে প্রধান, সেকেন্ডারী ও টারশিয়ারী ৫’শ ২০ কিলোমিটার খালের উপর ১৯৬৫ সালে সেতুগুলো নির্মাণ করা হয়। এরমধ্যে প্রায় শতাধিক সেতু চলাচলের অনুপযোগী। নির্মাণের পর আর সংস্কার না করায় এ বেহাল দশা সেতুগুলোর। তারপরও ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দা ও কৃষকরা। এতে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। দ্রুত এসব সেতুগুলো সংস্কার বা নতুন করে নির্মাণের দাবী স্থানীয়দের। আর কর্তৃপক্ষ বলছে,সমস্য সমাধানে কাজ করছেন তারা।
পাশের ফুলবাড়িয়া গ্রামের সেতুটি ভেঙ্গেছে দেড় বছর আগে। সেতুর মাঝখানে বড় ছিদ্র হওয়ায় পারাপার হচ্ছে না কোন যানবাহন। কোনমত ভ্যান, মোটরসাইকেল পার হলেও প্রায় ঘটছে দুর্ঘটনা। হরিণাকুন্ডুর মত পার্শ্ববর্তী উপজেলা শৈলকুপা ও সদরের অধিকাংশ সেতুর একই দশা। সেতুগুলো ভেঙ্গে যাওয়ায় ভোগান্তিতে রয়েছে স্থানীয়রা। তাই দ্রুত সেতুগলোগুলো সংস্কার বা নতুন করে নির্মাণের দাবী তাদের।
স্থানীয় সবুজ হোসেন বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত সেতুটির বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে অনেক আগেই জানানো হয়েছে। কিন্তু এখনো কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। যেকোনো মুহূর্তে সেতুটি ভেঙে যেতে পারে।
গৃহিনী সুলতানা পারভীন বলেন, সেতু দিয়ে বৃদ্ধ ও শিশুদের মারাত্বক ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হয়। সেতু দিয়ে পারাপারের সময় অনেকে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। স্কুলে ছেলে-মেয়েদের পাঠিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকতে হয় তাদের।
ফুলবাড়িয়া এলাকার কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, প্রতিদিন এই ভাঙা সেতু দিয়ে আমাদের বিদ্যালয়ে যাতায়াত করতে হয়। ভয়ে অনেকে স্কুলে যেতে চায় না। আমরা চায় অতিদ্রুত এখানে একটি সেতু নির্মাণ হোক।
ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-প্রধান সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আব্দুল মোত্তালেব বলেন, সেতু সংস্কার ও নির্মাণের বিষয়ে উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। কাজের অনুমোদন ও বাজেট আসলেই কাজ শুরু হবে।
বায়ান্ন/প্রতিনিধি/পিএইচ