ঢাকা, শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ই আশ্বিন ১৪৩১

নবজাতকের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় থানায় মালা, আসামি গ্রেফতার ও দায় স্বীকার

নাগরপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি : | প্রকাশের সময় : সোমবার ৩১ জানুয়ারী ২০২২ ০৭:৫২:০০ অপরাহ্ন | দেশের খবর
টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্বর থেকে গতকাল ৩০ জানুয়ারী রবিবার সকালে সদ্যজাত কন্যা শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে নাগরপুর থানা পুলিশ। 
 
এরপর থেকেই এ ঘটনার রহস্য উদঘাটনে মাঠে নামে পুলিশ। বিভিন্ন তথ্য ও সূত্রের উপর ভিত্তি করে পুলিশ জানতে পারে ২৯ তারিখ রাতে পেট ব্যাথা নিয়ে উপজেলার বেকড়া আটগ্রাম ইউনিয়ের এক যুবতী মেয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়।
সে বেকড়া উত্তর পাড়ার ছনির মোল্লার মেয়ে। 
 
মধ্য রাতে ছনিয়ার প্রসব ব্যাথা উঠলে মা হাফিজা মেয়েকে হাসপাতালের টয়লেটে নিয়ে বাচ্চা প্রসব করান। প্রসবের পরপরই নবজাতকে গলাটিপে মেরে ভেন্টিলেটর দিয়ে ফেলে দেয়। এবং টয়লেটের রক্ত পানি দিয়ে ধুয়ে পরিস্কার করে। কয়েক ঘন্টা চলে মা মেয়ের এসব কাজ। দীর্ঘ সময় হাসপাতালের টয়লেটে আটকে এমন কাজ করায় অন্যান্য রোগীরা বিপাকে পড়ে যায়। এতে বাড়তে থাকে সন্দেহ। আর সেই সন্দেহ এ নির্মম হত্যাকান্ডের রহস্যের জট ছাড়াতে সহায়ক হয়।
পরদিন ৩০ জানুয়ারী সকালে হাসপাতাল থেকে ছুটি নিয়ে বাড়িতে চলে যায় ছনিয়া। 
 
হাফিজা ও ছনিয়ার থানা পুলিশকে বলে, ভাদ্রার ফুপাতো ভাইয়ে সাথে শারীরিক মেলামেশায় ছনিয়ার পেটে ধীরে ধীরে বেড়ে উঠে ফুপাতো ভাইয়ের সন্তান। 
উপজেলার ভাদ্রা ইউনিয়নে হানিফের ছেলে ফুপাতো ভাই শামিমের সাথে শারীরিক মেলামেশায় জন্ম নিয়েছিল হত্যাকৃত নবজাতক শিশু কন্যাটি। 
 
এ ঘটনায় গ্রাম পুলিশ বাদী হয়ে ১৫ নং ক্রমিকে নাগরপুর থানায় ৩০/০১/২০২২ তারিখে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে। 
মামলাটি ধারা ৩০২, ২০১, ৩৪ তে নাগরপুর থানায় রেকর্ড করা হয়েছে। 
নাগরপুর থানার চৌকস পুলিশ সদস্য এসআই ইদ্রিস আলী ও সঙ্গী ফোর্স মামলা হাতে পেয়েই তথ্য প্রমানের ভিত্তিতে ছনির মোল্লার বসতবাড়ি থেকে নবজাতকের মা ছনিয়া (১৮), ছনিয়ার মা ছনির মোল্লার স্ত্রী হাফিজা আক্তার (৪০) কে গ্রেফতার করেছে।
পরে, প্রাথমিক জিজ্ঞেসাবাদে মা ও মেয়ে নবজাতকে গর্ভপাত ও হত্যার ঘটনা স্বীকার করে। 
 
উল্লেখ্য, গত ৩০ জানুয়ারী ভোর সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের টয়লেটে ছনিয়ার বাচ্চা প্রসব করে। অবিবাহিত মেয়ের বাচ্চা প্রসবের পরপরই নানী নাতনীর গলা চেপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে টয়লেটের ভেন্ডিলেটরের ফাঁক দিয়ে ২য় তলা থেকে ফেলে দেয়।
স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দেয়ার জন্য আসামিদের বিজ্ঞ আদালতে প্রেরন করেছে থানা পুলিশ। 
 
নাগরপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মনোয়ার হোসেন জানান, নবজাতকের গলাটা মরদেহ উদ্ধারের পর বিভিন্ন তথ্য প্রমানের ভিত্তিতে এ হত্যাকান্ডের মূল আসামি গ্রেফতার করে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরন করা হয়েছে।