নরসিংদীর রায়পুরায় আধিপত্য বিস্তার কেন্দ্র করে দুই দফায় টিনের ঘর, টিনসেট, বিল্ডিংসহ অন্তত ৪০ বসতঘরে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটিয়েছে প্রতিপক্ষের লোকজন।
উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের গৌরীপুর পাঠান বাড়ীর এলাকায় শুক্রবার বিকালে ও শনিবার ভোরে এসব হামলা-ভাঙ্গচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, গত ২৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হয়ে যাওয়া ইউপি নির্বাচনে নৌকা প্রতিকে অগ্নিসংযোগ ও পোস্টার ছিড়ে ফেলাকে ঘিরে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর মধ্যে দ্বন্ধের সৃষ্টি হয়। তখন নৌকার প্রার্থী মো. হোসেন ভুইয়ার সমর্থক মোল্লাবাড়ী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সানাউল্লাহ ভুইয়ার সমর্থক পাঠানবাড়ীর লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। নির্বাচন পরবর্তি সময়ে এরই জের ধরে বিজয়ী চেয়ারম্যান হোসেন ভুইয়া সমর্থক মোল্লাবাড়ী ও পরাজিত চেয়ারম্যান সানাউল্লাহ ভুইয়ার সমর্থক পাঠানবাড়ীর লোকজনের মধ্যে হামলা-ভাংচুরের ঘটনাও ঘটে। উক্ত ঘটনার জের ধরেই শুক্রবার বিকালে প্রথম দফায় এবং শনিবার ভোরে দ্বিতীয় দফায় পাঠানবাড়ীর লোকজনের অন্তত ৪০টি বসত ঘরে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটায় খোদাবক্স ও মোল্লা বাড়ীর লোকজন।
ক্ষতিগ্রস্থের শিকার খোশেদা বেগম, আপেল মিয়ার স্ত্রী হাফেজা বেগম, সেলিম মিয়ার স্ত্রী শেফালি আক্তার, জামাল মিয়ার স্ত্রী লিপি বেগম, রুবেল মিয়ার স্ত্রী নাহিদা আক্তার, আলআমিনের স্ত্রী প্রিয়া আক্তার সহ আরো অনেকেই জানান, বর্তমান চেয়ারম্যান সমর্থক আল মামুনের নির্দেশে খোদাবক্স ও মোল্লা বাড়ির লোকজন ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী দিয়ে তাদের অন্তত ৪০টি বাড়িঘরে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট চালিয়েছে। এসময় হামলাকারীরা ঘরের ভিতর থেকে নগদ অর্থ, স্বর্ণালংকার সহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে যায়। পূর্বশত্রুতার জের ধরেই এই ঘটনা ঘটিয়েছে বলে জানান তারা।
এদিকে অভিযুক্ত আল মামুনের সাথে কথা হলে তিনি সকল অভিযোগ অস্বিকার করে বলেন, নির্বাচনকালীন সময়ে যে তুচ্ছ ঘটনা ঘটেছিল সেখানে আমাদের কিছু লোকজন জড়িত ছিল, কিন্তু আজকের ঘটনার সাথে আমি এবং আমার লোকজন জড়িত নই। তবে পাঠান বাড়ীর লোকজন মোল্লা বাড়ীর মোশারফকে ছুড়িকাঘাত করে। পরে হয়তো বা তারা এসব ঘটিয়েছে।
এ ব্যাপারে মোল্লা বাড়ীর মোঃ শাজাহান মিয়া বলেন, শুক্রবার পাঠান বাড়ির নিকটে মসজিদ নির্মানের কাজে আমার এলাকার মোশারফ মিয়া নামে একজন রাজমেস্ত্রীর কাজ করছিল। তুচ্ছ ঘটনায় তাদের মধ্যে কথাকাটির এক পর্যায়ে মোশারফকে ছুড়িকাঘাত করে আহত করেন। পরে তারাই আবার পাশর্^বর্তি তুলাতলী থেকে লোকজন এনে এলাকায় আতঙ্ক সৃস্টি করে। এরই প্রেক্ষিতে এসব হামলা, ভাংচুরের ঘটনা ঘটে।
এ ব্যাপারে রায়পুরা থানার ওসি তদন্ত গোবিন্দ সরকার বলেন, বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। পরবর্তী সহিংসুতা এড়াতে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের পরে এ দু’পক্ষের বসতঘর ভাঙ্গচুরের ঘটনায় উভয় পক্ষের থানায় মামলা দায়ের হয়। পরর্বিততে বিষয়টি নিয়ে আশপাশের কয়েকজন ইউপি চেয়ারম্যান বসে আপোষ মিমাংসা করেছিলেন বলে জানা গেছে।