নাটোর শহরের উত্তর চৌকিররার এলাকায় পারিবারিক কলহকে কেন্দ্র করে স্ত্রী মাছুরা বেগম ও আড়াই বছরের শিশু কন্যা মাহাফুজাকে গলা টিপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে স্বামী। এ ঘটনা পুলিশ স্বামী আব্দুস সাত্তারকে আটক করেছে।রবিবার দুপুরে চৌকিরপাড় এলাকায় আব্দুস সাত্তারের নিজ বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। আটক আব্দুস সাত্তার-৩৫ একই এলাকার মৃত হয়রত আলীর ছেলে।
পুলিশ ,প্রতিবেশী ও নিহতের পারিবারিক সুত্র জানায় ,বছর দশেক আগে নাটোর সদর উপজেলার গোয়ালডাঙ্গা গ্রামের মেছের প্রামাণিকের মেয়ে মাছুরা বেগম-২৯ এর সাথে উত্তর চৌকির পার মৃত হযরত আলীর ছেলে আব্দুস সাত্তারের বিয়ে হয়। বিবাহিত জীবনে ৬ বছরের এবংআড়াই বছরের দুটি সন্তান রয়েছে তাদের। নিহত গৃহবধূ অমাছুরা বেগমের বাবা হযরত প্রমামণিক বলেন, বছর খানেক পূর্বে স্বামী -স্ত্রী কলহের কারণে মাছুরা সন্তানদের নিয়ে তার কাছে চলে যায়। পরবর্তীতে সন্তানদের মুখের দিকে চেয়ে মাছুরা আবার স্বামীর ঘরে ফিরে আসে। এরপ থেকে সাত্তার কখনোই মাছুরা বা তাদের সন্তানদের নানা বাড়িতে পাঠায়নি। মেছের প্রামাণিক বলেন, মেয়েকে নিতে আসলে তার সাথে দেখা করতে দিতনা। এবং কেন দেখা করতে গেলাম একারণে মেয়েকে মারধর করতো। একারণে আমরাও যেতামনা। প্রতিবেশিরা জানান, রবিবার দুপুরে পারিবারিক কলহকে কেন্দ্র করে স্ত্রী ও শিশু কন্যাকে গলাটিপে হত্যা করে আব্দুস সাত্তার। এসময় স্থানীয়রা জানতে পেরে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ এসে মরদেহ দুটি উদ্ধার করে ওর স্বামী ছাত্তারকে আটক করেছে।এলাকাবাসী জানান, আব্দুস সাত্তার বর্তমানে পুরাতন কাপড় কেনা বেচার ব্যবসা করে। অন্য সময় মৌসুমী ফল বিক্রয়ের ব্যবসা করে। সংসারে নানা অভাব থাকার কারণে বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋন গ্রহণ করে। কিন্তু সময়মত টাকা দিতে না পারায় পাওনাদাররা তার বাড়িতে গিয়ে হাঙ্গামা করতো। একারণে প্রতিবেশীদেরকে তার বাড়িতে যেতে দিতনা আব্দুস সাত্তার। এ নিয়ে পারিবারিক কলহর লেগেই থাকতো। পত্যক্ষ দর্শি প্রতিবেশী কাজী মোস্তাক বলেন, সকালে সাত্তার কোর্টে গিয়েছিল কাপড় বিক্রির জন্য। দুপুরে বাসায় আসে। এসময় ছোট ছেলে দুধের জন্য কাদাঁকাটি শুরু করলে সে তাকে আছাড়ে ফেলে হত্যা করে। আটক আব্দুস সাত্তার বলেন, তার স্ত্রী সন্তানকে সেই হত্যা করেছে বলে অপ্রকৃতিতিস্থের মত আচরণ শুরু করে। এসময় পুলিশ তাকে আটক করে দ্রুত থানায় প্রেরন করে। অপরদিকে হত্যা কান্ডের খবর চড়িয়ে পড়লে আশে পাশের অসংখ্য মানুষ জড়ো হয়। তারা প্রত্যকেই এটাকে হত্যাকান্ড অবহিত করে বিচার দাবি করে। উত্তেজিত মানুষকে থামাতে পুলিশকে হিমশিম খেতে হয়। নাটোর থানার ওসি মনসুর রহমান বলেন, মাছুরার পিতা হত্যার অভিযোগে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। অপরদিকে মৃতদের লাশ উদ্দার করে ময়না তদন্তের জন্য নাটোর হাসপাতাল মর্গে প্রেরন করা হয়েছে।
নাটোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারেক জুবায়ের জানান, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি, প্রাথমিকভাবে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে আমাদের ধারণা । এ বিষয়ে আইনগত পদক্ষেপ এবং পুলিশি তদন্ত চলছে।