প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষকে (বেপজা) বিদেশে বাংলাদেশকে প্রচার করতে এবং দেশের শিল্প খাতে আরও বিনিয়োগ আনতে বলেছেন। প্রধান উপদেষ্টা ঢাকার তেজগাঁওয়ে তার কার্যালয়ে বেপজার ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদন জমা নেওয়ার সময় এই নির্দেশনা দেন।
প্রেস উইং জানায়, প্রধান উপদেষ্টা বেপজার কর্মকর্তাদের বলেন, অর্থনৈতিক কূটনীতির জন্য একটি দল তৈরি করুন এবং বিদেশে বাংলাদেশকে প্রচার করুন। এই উদ্দেশ্যে সংস্থাটিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাথে সহযোগিতা করতে বলেছেন তিনি।
তিনি বেপজা কর্মকর্তাদের বিদেশে, বিশেষ করে চীন ও জাপানে অধ্যয়নরত বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের জড়িত করতে বলেন, যাতে বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের পছন্দ করার আগে ভাষার বাধা অতিক্রম করতে সহায়তা করা যায়।
বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল আবুল কালাম মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছেন, বাংলাদেশে জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থান এবং বারবার বৈশ্বিক রাজনৈতিক দৃশ্যপট পরিবর্তনের পর তারা ইতিমধ্যেই বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছেন।
তিনি বলেন, গত তিন সপ্তাহে, আমরা চীনা বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে $১৩৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের প্রস্তাব পেয়েছি। আরও বিনিয়োগের জন্য আলোচনা চলছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে আটটি রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল চালু রয়েছে, যেখানে ৪৫২টি কারখানা রয়েছে। জোনে বর্তমানে আরও ১৩৬টি কারখানা নির্মাণাধীন রয়েছে। কার্যকরী কারখানার মধ্যে, ১০০ টিরও বেশি স্থানীয় বিনিয়োগকারীদের মালিকানাধীন, এবং বাকি বেশিরভাগই যৌথ উদ্যোগ।
বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান বলেন, কারখানাগুলির মধ্যে, ৫২ শতাংশ তৈরি পোশাক সামগ্রী, টেক্সটাইল আইটেম এবং গার্মেন্টস জিনিসপত্র উৎপাদন করে। অবশিষ্ট কারখানাগুলি বহুমুখী, কফিন এবং খেলনাগুলির মতো বিবিধ সামগ্রী তৈরি করে।
নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহ, বেপজা এলাকায় বন্ডেড গুদাম সুবিধা, চট্টগ্রাম-সাংহাই সরাসরি বিমান যোগাযোগ এবং চীনের সাংহাই শহরে ভিসা কাউন্সেলর সার্ভিসসহ বিনিয়োগকারীদের কিছু দাবির কথা মেজর জেনারেল জিয়া প্রধান উপদেষ্টাকে জানান।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস কর্তৃপক্ষকে রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের সম্ভাবনা অন্বেষণ করতে এবং গ্যাস অনুসন্ধানে কাজ করতে এবং একটি বিতরণ ব্যবস্থার উন্নয়ন করতে বলেন।
প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে জ্বালানি আমদানি করে বাংলাদেশ লাভবান হতে পারে কি না, তা দেখার জন্যও তিনি কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ জানান।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী লক্ষ্যযুক্ত অর্থনৈতিক কূটনীতির ওপর জোর দেন।
তিনি বলেন, যে সরকার দেশগুলিতে বিদ্যমান প্ল্যান্টগুলি থেকে শিল্পগুলিকে আরও বেশি শক্তি পেতে সক্ষম করার জন্য একটি সমন্বিত বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থার বিকাশে কাজ করবে।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেন, আমাদের উচিত বেপজা এবং বেজাকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলা এবং আরও বিনিয়োগ আনার জন্য বিশ্বজুড়ে এই এলাকায় উপলব্ধ সুযোগ-সুবিধার প্রচার করা।
সভায় প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব মোঃ সিরাজ উদ্দিন মিয়া উপস্থিত ছিলেন।
বায়ান্ন/এসবি
