ঢাকা, মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

ভবন নেই কিন্তু নতুন চেয়ারম্যান পেল সেনুয়া ইউনিয়ন

রবিউল এহ্সান রিপন, ঠাকুরগাঁও: | প্রকাশের সময় : বুধবার ৯ ফেব্রুয়ারী ২০২২ ১২:৩০:০০ অপরাহ্ন | দেশের খবর

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নতুন ইউনিয়ন “সেনুয়া ইউনিয়ন”। ইউনিয়ন পরিষদ এর নির্ধারিত জায়গার সামনে বড় করে সাইবোর্ড ঝুলানো রয়েছে। সাইবোর্ড এ লিখা রয়েছে ২২ নং সেনুয়া ইউনিয়ন পরিষদের জন্য নির্ধারিত স্থান। নেই কোন স্থাপনা বা ভবন আর সেই ইউনিয়নের নতুন চেয়ারম্যান পেলেন ইউনিয়নবাসি।

চায়ের দোকানে নির্বাচনের পরে এলাকার স্থানীয়দের গল্পের মাঝে হঠাৎ মমিনুল ইসলাম বলে উঠেন “সিংহাসন ছাড়া রাজা পাইনো হামরা”। এ কথা শুনে আশে পাশের অনেকে হেঁসে দেয়। মমিনুল ইসলাম ২২ নং সেনুয়া ইউনিয়নের মোলানখুরি এলাকার বাসিন্দা। তার সাথে কথা হলে তিনি আরো বলেন, এলাও ইউনিয়ন পরিষদের কোন ঘর নাই, চেয়ারম্যানডা বসিবে কুন্ঠে। আর হামরাই কোনঠে গেইলে চেয়ারম্যানের দেখা পামো। আর এই চেয়ারম্যান হবার তানে কত মারামাড়ি হইল ভোটত।

দোকানে বসে থাকা এক মুরুব্বী হামিদুল ইসলাম বলেন, ভোটের আগে চেয়ারম্যান প্রার্থীর কর্মীদের মধ্যে মারামাড়ি হয়। একে অপরের ভোটের অফিস পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনাও ঘটে। সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে সাংবাদিককেও মারপিট করা হয়। ভোটের দিনেও কয়েকটি কেন্দ্রে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সব মিলিয়ে চেয়ারম্যান হওয়ার জন্য নতুন ইউনিয়নে ভালোই গন্ডগোল হয়। এখন চেয়ারম্যান হয়েছে ঠিকই কিন্তু চেয়ারম্যান এর নিজস্ব বসার কোন জায়গা নেই। অস্থায়ী একটি কার্যালয়ে বসতে হবে চেয়ারম্যানকে।

গত ৭ ফেব্রুয়ারী (সোমবার) সপ্তম ধাপে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ২২ নং সেনুয়া ইউনিয়ন পরিষদে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠিত নির্বাচনে আওয়ামীলীগ মনোনিত প্রার্থী নোবেল কুমার সিংহকে ৩৬৭ ভোটে পরাজিত করে স্বতন্ত্র প্রার্থী মতিয়ার রহমান মতি চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হয়। নির্বাচনকে ঘিরে নির্বাচনের আগে ও ভোটের দিন বিছিন্ন কিছু সহিংসতার ঘটনাও ঘটে।

উল্লেখ্য, গত ২০২০ সালের ৫ নভেম্বর ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ৪ নং বড়গাঁও ইউনিয়ন পরিষদকে  ভেঙে ২২ নং সেনুয়া ইউনিয়ন পরিষদ নামে নতুন একটি ইউনিয়ন পরিষদ গঠন করা হয়। নবগঠিত ইউনিয়নের ভবনের জন্য স্থান নির্ধারন করা হলেও এখনও সক্রিয়ভাবে ভবন নির্মানের কাজ শুরু হয়নি।

স্থানীয় ইউপির বাসিন্দা আরিফুল ইসলাম বলেন, আমাদের ইউনিয়নটি নতুন করে গঠন করা হয়েছে। যদিও এখন ইউনিয়নের আওতাধীন সুবিধা গুলো আমরা ভোগ করতে পারছিনা। এরই মধ্যে আমরা নতুন চেয়ারম্যান পেয়েছি। আশা করা যায় একটি ইউনিয়নকে ভেঙে দুটো করার কারনে এলাকার মানুষেরা স্থানীয় প্রশাসনের আওতাধীন সকল সুযোগ সুবিধা পাবেন।

বেসরকারী ভাবে নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান মতি বলেন, যেহেতু আমাদের ইউনিয়নটি নতুন করে গঠন করা হয়েছে, সেজন্য ভবন নির্মাণ সময় সাপেক্ষ। তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে ভবণ নির্মাণ করে দিলে আমরা জনগণের দোরগোড়ায় সেবা পৌছে দিতে সক্ষম হব। তাই কর্তৃপক্ষের কাছে দ্রুত ভবন নির্মাণের জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহের মোঃ শামসুজ্জামান বলেন, আমরা ভবন নির্মাণের জন্য মন্ত্রণালয়ে কাগজ পাঠিয়েছি। খুব অল্প সময়ের মধ্যে ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হবে। তবে নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান কে দীর্ঘ সময় অস্থায়ী ভবনে কাজ চালিয়ে নিতে হবে। কারন ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হলেও নির্মান কাজ সময়ের ব্যাপার।