রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন পরিষদের ভোট গ্রহণ হবে ২৮ নভেম্বর। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গ্রামের হোটেল, রেস্তোরাঁ ও চায়ের দোকানগুলো জমে উঠেছে। প্রতিদিন বিভিন্ন স্থানে চলছে নির্বাচনী সভা। সভার পাশাপাশি প্রার্থীরা ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট চাচ্ছেন। ভোটারদের মন পেতে নানান প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন প্রার্থীরা।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ছয়টি ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে ১৯ জন, সংক্ষিত অাসনের নারী ৬০ জন ও সাধারণ সদস্যপদে ১৮৯ জন প্রার্থী নির্বাচনি মাঠে রয়েছেন।
এর মধ্যে আওয়ামী লীগের মনোনীত ৬ জন, জাতীয় পার্টির ২ জন ও স্বতন্ত্র-বিদ্রোহী প্রার্থী আছেন ১১ জন।
ধুরইল ইউনিয়নের অামরাইল গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. দেলোয়ার হোসেন কাছে নৌকা মার্কায় ভোট চাচ্ছেন। তিনি উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান মো. কাজিম উদ্দিন ভোটারদের এ সময় তিনি বলেন, এলাকায় উন্নয়নমূলক কাজ করেছি। তবে কিছু অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করার জন্যই আবার প্রার্থী হয়েছি। জনগণ নির্বাচিত করলে সেসব কাজ শেষ করব।’
ঘাসিগ্রাম ইউপির নৌকার প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান মো. অাজাহারুল ইসলাম বাবলু বলেন, তিনি চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় ইউনিয়নের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। তাই ইউনিয়নবাসি অাবারও চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত করবেন অাশাবাদী।
গোছা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান মো. অাফজাল হোসেন বকুল ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচারণা করছেন। এ সময় তিনি ভোটরদের প্রতিশ্রুতি দেন, নির্বাচিত হতে পারলে এলাকার বড় সমস্যাগুলো আগে সমাধন করবেন। পাশাপাশি ঘুষ ছাড়া ভিজিডি, ভিজিএফ, বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড করে দেওয়া আশ্বাস দেন তিনি। স্বতন্ত্র প্রার্থী মো.তাজরুল হক দেওয়ান বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
রায়ঘাটি ইউনিয়নের নৌকার প্রার্থী মো. বাবলু হোসেন বলেন, অামার বাবা বর্তমান চেয়ারম্যান মো. খলিলুর রহমান ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। অামি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলে বাবার অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করবেন ভোটারদের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন।
এদিকে ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থী শ্রী সুরঞ্জিত সরকার জানান, তিনি ভোটারদের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছেন। নির্বাচিত হলে তিনি বাল্যবিবাহমুক্ত ইউনিয়ন গড়বেন। সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে যৌতুক ও নারী নির্যাতন বন্ধেরও প্রতিশ্রতি দেন তিনি।
মৌগাছি ইউনিয়নের নৌকার প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান মো. অাল অামিন বিশ্বাস, স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান মো. অাবুল হোসেন খান ও জাপার প্রার্থী মো. হারেছ অালী নতুন নতুন প্রতিশ্রুতি নিয়ে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। বাকশিমইল ইউনিয়নের নৌকার প্রার্থী মো. অাব্দুল মান্নান ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান মো. অাল মোমিন শাহ গাবরু সকাল থেকে গভীর রাত পযন্ত ছুটে বেড়াচ্ছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। জাহানাবাদ ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী মো. হযরত অালীসহ অারও পাঁচ প্রার্থী চালিয়ে যাচ্ছেন প্রচার প্রচারণা। প্রার্থীদের অনেক প্রতিশ্রুতি শুনেছি। তবে যাকে দ্বারা এলাকার উন্নয়ন হবে। তাকেই ভোট দিবেন বলে জানান অধিকাংশ ভোটাররা।
নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে আয়োজনে সব ধরনের প্রস্তুতি আছে বলে জানান উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. জয়নুল আবেদীন। মুঠোফোনে তিনি বলেন, প্রার্থীরা ভোটারদের কাছে ভোট চাচ্ছেন। নির্বাচন নিয়ে মানুষের আগ্রহও আছে। তবে নির্বাচনী প্রচারণাকে কেন্দ্র করে কোনো আর্থিক লেনদেন বা আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।