ঢাকা, সোমবার ৬ জানুয়ারী ২০২৫, ২৩শে পৌষ ১৪৩১

রাণীনগরে বন্ধ জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন কার্যক্রম, চরম ভোগান্তিতে

কাজী আনিছুর রহমান, রাণীনগর | প্রকাশের সময় : শনিবার ৪ জানুয়ারী ২০২৫ ০৩:৪৫:০০ অপরাহ্ন | দেশের খবর

নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার একডালা এবং খট্রেশ্বর ইউনিয়ন পরিষদে গত ১৫দিন ধরে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন সার্ভারে প্রবেশ বন্ধ রয়েছে। ফলে নিবন্ধন করতে আসা সেবা প্রত্যাশীরা চরম ভোগান্তিতে পরেছেন। ইউনিয়ন পরিষদের একাধিক সুত্রে জানা গেছে,সম্প্রতি ঢাকায় ট্রেনিংয়ে গিয়ে সংশ্লিষ্ঠদের নির্দেশনা অনুযায়ী সচিবরা জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন সার্ভারে প্রবেশ করতে না পারায় সাথে সাথেই সার্ভারে প্রবেশ বন্ধ করে দিয়েছেন। 

ইউনিয়ন পরিষদের একাধীক সুত্রে জানাগেছে,নওগাঁ জেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদ/পৌরসভায় কর্মরত জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন সহকারী/ইউনিয়ন পরিষদ প্রশাসনিক কর্মকর্তা,হিসাব সহকারী-কাম-কম্পিউটার অপারেটরদের জেনারেল রেজিস্ট্রারের কার্যালয়,জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন,পরিবহন পুল ভবনে একদিনের প্রশিক্ষনে অংশগ্রহনে ডাকা হয়। এতে রাণীনগর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের সাথে রাণীনগর খট্রেশ্বর ইউনিয়ন পরিষদ,একডালা ইউনিয়ন পরিষদ ও বড়গাছা ইউনিয়ন পরিষদ সচিব ও হিসাব সহকারী-কাম- কম্পিউটার অপারেটররা অংশ নেন। গত ১৮ডিসেম্বর প্রশিক্ষন চলাকালে সচিবদের জন্ম ও মৃত্যু  নিবন্ধন সার্ভারে প্রবেশ করে কাজ দেখাতে বলা হয়। 

এসময় একডালা ইউনিয়ন পরিষদ সচিব,রাণীনগর খট্রেশ্বর ইউনিয়ন পরিষদ সচিব এবং বড়গাছা ইউনিয়ন পরিষদ সচিব সার্ভারে প্রবেশ করতে পারেননি। ফলে অসন্তোষ হয়ে সাথে সাথে ওই তিন ইউনিয়ন পরিষদের জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন সার্ভারে প্রবেশ বন্ধ করে দেয়া হয়। এর মধ্যে শুধুমাত্র  বড়গাছা ইউনিয়ন পরিষদের সার্ভারে প্রবেশে নতুন পাসওয়ার্ড দেয়ায় ওই পরিষদে কাজ চলমান থাকলেও গত প্রায় ১৫ দিন ধরে একডালা এবং খট্রেশ্বর রাণীনগর ইউনিয়ন পরিষদে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন,সংশোধনসহ বিভিন্ন কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। 

ফলে সেবা প্রত্যাশীরা চরম ভোগান্তিতে পরেছেন। সেবা নিতে আসা অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে বলছেন,এই সময়ে সন্তানদের বিদ্যালয়ে ভর্তি করাতে হচ্ছে। কিন্তু সার্ভারে প্রবেশ বন্ধ থাকায় জন্ম নিবন্ধন বা সংশোধন করাতে পারছিনা। তাই সন্তানদের ভর্তি নিয়ে হতাশা এবং দুশ্চিন্তাই পরেছি। এছাড়া জাতীয় পরিচয় পত্র,পাসপোর্ট তৈরিতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে ইউনিয়নবাসীকে।

একডালা ইউনিয়নের স্থল গ্রামের সুমন হোসেন বলেন,তার ভাই সুজনের নামের ভুল সংশোধন করতে গত ১০/১২দিন আগে আবেদন করেছি। এটি সংশোধন করে ভাতিজাকে বিদ্যালয়ে ভর্তি করাবো। কিন্তু সার্ভারে প্রবেশ বন্ধ থাকায় সংশোধন করতে পারছিনা। ফলে চরম ভোগান্তিতে পরেছি।

পাকুড়িয়া গ্রামের জাকিরুল ইসলাম বলেন,তার ছেলের জন্ম নিবন্ধনে ভুল থাকায় তা সংশোধন করতে গত ১৩ডিসেম্বর আবেদন করেছি। এটি সংশোধন করে ৯ম শ্রেনীতে রেজিট্রেশন করাবো। কিন্তু সার্ভার বন্ধ থাকায় এখন পর্যন্ত সংশোধন করাতে পারিনি। ফলে চরম বিপাকে পরেছি।

একডালা ইউনিয়ন পরিষদের হিসাব সহকারী-কাম-কম্পিউটার অপারেটর মিজানুর রহমান বলেন,সার্ভারে প্রবেশ বন্ধ থাকায় গত কয়েক দিনে প্রায় অর্ধশত আবেদন জমা পরে আছে। 

একডালা ইউনিয়ন পরিষদের সচিব সেলিনা আক্তার বলেন,প্রশিক্ষনে সার্ভারে প্রবেশ করে কাজ করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু কম্পিউটারের সমস্যার কারনে প্রবেশ করতে পারিনি। ফলে আমি নিজে সার্ভারে কাজ করিনা এমনটি ধরে নিয়ে কর্মকর্তারা সাথে সাথেই সার্ভারে প্রবেশ বন্ধ করে দিয়েছেন। অবশ্য একই কথা বলেছেন খট্রেশ্বর রাণীনগর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব রুহুল আমিন তোতা।

একডালা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী শাহাজাহান বলেন,সার্ভারে প্রবেশ করতে না পারায় বিদ্যালয়ে ভর্তিতে অভিভাবকরা চরম বিপাকে পরেছেন। সার্ভারে প্রবেশে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানিয়েছি। 

রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাইমেনা শারমীন বলেন,পরিষদে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন কাজ চালু করতে ইতি মধ্যেই লিখিতভাবে আবেদন করেছি। আসা করছি খুব দ্রুতই সমাধান হবে।

 

বায়ান্ন/এসএ