ঢাকা, বৃহস্পতিবার ৯ জানুয়ারী ২০২৫, ২৬শে পৌষ ১৪৩১

রৌমারীতে সেতু ভেঙ্গে যাওয়ায় দুর্ভোগে ৪০হাজার মানুষ

শৌখিন মিয়া, রৌমারী ও চর রাজিবপুর : | প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৭:৪৬:০০ অপরাহ্ন | দেশের খবর
কুড়িগ্রামের রৌমারীর চরশৌলমারী বাজারের পাশে খালে ২০১৮ সালে ৬০ মিটারের একটি সেতু নির্মাণ করা হয় । অপরিকল্পতভাবে ও পাইলিং ছাড়াই সেতুটি নির্মাণের এক বছর পর ২০১৯ সালে ভেঙ্গে পড়ে। এরপর থেকে সেতুটি নির্মাণের কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ। সেতুটি ভেঙ্গে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে এলাকার মানুষের স্বাভাবিক জীবন ব্যবস্থা। শুষ্ক মৌসুমে কোনও মতে পারাপার হওয়া গেলেও বর্ষা মৌসুমে তা মোটেও সম্ভব হয়না। এতে ১৫ গ্রামের ৪০ হাজার মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। সেতু পার হতে গেলে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার শিকার হন পথচারিরা। জনগুরুত্বপূর্ণ সেতুটি দ্রুত নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
 
স্থানীয়রা জানান, ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের সেতু-কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় চরশৌলমারী বাজার হতে ঘুঘুমারী যাওয়ার রাস্তায় খলিলের বাড়ির পাশে ৬০ ফুট দৈর্ঘ্য সেতুটি নির্মাণ করা হয়। ‘মেসার্স মনিরুল ইসলাম’নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি নিমার্ণ কাজ করে। সেতুটি ৫৪ লাখ চার হাজার ৬৫০ টাকা ব্যয়ে ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা তদারকিতে কাজ করা হয়।
 
সরেজমিনে দেখা গেছে, চরশৌলমারী বাজারের পাশে খালে মাঝ বরাবর ভাঙা সেতুর ওপরে বাঁশ ও কাঠ দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে সাঁকো। তারও অবস্থা নড়বড়ে। সেই সাঁকোতে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছেন শিক্ষার্থীসহ হাজারও মানুষ। যে কোনো মুহূর্তে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
 
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. তুহিন মিয়া বলেন, সেতুটি ভাঙার কারণে চরশৌলমারী ইউনিয়নের ঘুঘুমারী, চরঘুঘুমারী, সুখেরবাতি, খেদাইমারী, চরগেন্দার আলগা, সুখেরচর ও ময়েজেরচরসহ ১৫ গ্রামের ৪০ হাজার মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন। এছাড়া চরশৌলমারী ডিগ্রি কলেজ, বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, দাখিল মাদ্রাসা ও চারটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ শিক্ষকরা এই সেতুতে চলাচল করে থাকেন।
 
চরশৌলমারী ডিগ্রি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ বীরমুক্তিযোদ্ধা কুদরত উল্লাহ বলেন, সেতুটি ভেঙ্গে যাওয়ার পাঁচ বছর হলো। কিন্তু নির্মাণের কেউ উদ্যোগ নেয়নি।
 
চরগেন্দার আলগা এলাকার নজরুল ইসলাম বলেন, সপ্তাহে দু’দিন (শুক্রবার-সোমবার) চরশৌলমারী বাজারে হাট বসে। এ হাটে চরের সমস্ত কৃষিপণ্যসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য বিক্রি করতেযেতে হয়। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে সেতুটি ভেঙ্গে থাকার কারণে পরিবহন খরচ বেশি হচ্ছে।
 
চরশৌলমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কেএইচএম সাইদুর রহমান দুলালের ভাষ্য, অপরিকল্পতভাবে ও পাইলিং ছাড়াই সেতুটি নির্মাণ করা হয়। এ কারণে সেতুটি নির্মাণের এক বছর পরেই ভেঙ্গে যায়। জনদুর্ভোগ কমাতে ওই জায়গায় একটি টেকসই সেতু নির্মাণ করা জরুরি।  
 
অভিযুক্ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স মনিরুল ইসলামের স্বত্বাধিকারী মনিরুল ইসলামের দাবি, সেতুটি নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়নি। সেতুটির পাশে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু তোলার কারণে ভেঙ্গে যায়।
 
রৌমারী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মেশকাতুর রহমান বলেন, বিষয়টি ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
 
রৌমারী উপজেলা প্রকৌশলী মামুনুর রহমান বলেন, ওই জায়গায় একটি সেতু নির্মাণের জন্য প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।