ঢাকা, শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ই আশ্বিন ১৪৩১

স্কোয়াশ চাষে লাভবান হচ্ছেন নওগাঁর কৃষকরা

আমিনুল জুয়েল, নওগাঁ : | প্রকাশের সময় : শুক্রবার ২৮ জানুয়ারী ২০২২ ১১:৫৩:০০ পূর্বাহ্ন | দেশের খবর

স্কোয়াশ একটি বিদেশি এবং শীতকালীন জাতীয় সবজি।  এই সবজি সুস্বাদু এবং পুষ্টিমান সমৃদ্ধ। এটি দেখতে শসার মতো । কেউ কেউ লম্বা লাউ ভেবে ভূল করতে পারেন। স্কোয়াশে ছোট ও সুচালো অসংখ্য কাঁটা থাকে। বড় স্কোয়াশের ওজন দুই-তিন কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। গাছগুলিও লাউ বা শসার গাছের মতো ছড়িয়ে পরে জমিতে।

 

স্কোয়াশের বীজ বপণের দুই মাসের মধ্যেই বড় হয়ে ওঠে। কেউ কেউ জালেঙ্গা বা চাংলার উপর গাছ তুলে দেন। আবার কেউ জমিতেই গাছ বড় করে ফলন আরোহণ করেন। দুই থেকে আড়াই মাস পর হলুদ ফুল দেখা যাবে জমিতে।

 

বিদেশি সবজি স্কোয়াশ এখন চাষ হচ্ছে উত্তরের জেলা নওগাঁয়। সদর উপজেলার তিলকপুর ইউনিয়নের মঙ্গলপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল লতিফের সাথে কথা হলো। তিনি জানান, ‘চলতি বছরে প্রায় এক বিঘা জমিতে স্কোয়াশ চাষ করেছি। বেদেশি এই সবজির চাষ এবং ফল দেখতে অনেকেই ভীড় জমান আমার ক্ষেতে। প্রায় প্রতিদিনই ভিড় করছেন আশপাশের এলাকার কৃষকরাও।’

 

তিনি আরও জানান, ‘স্কোয়াশ উচ্চ ফলনশীল হওয়াও তা লাভজনকও। পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ শীতকালীন এই সবজিটি খেতেও সুস্বাদু। তাই অল্প শ্রম ও পয়সায় লাভবান হতে পারবো বলে আশা করছি।

 

ফতেপুর গ্রামের আরেক কৃষক ইউনুছ আলী বলেন, ‘আমরা মূলত দেশীয় বিভিন্ন সবজির চাষ করি। শীতে সাধারণত আলু, টমেটো, শিম, কপির আবাদ করি। এই প্রথম স্কোয়াশ চাষ করছি। এই সবজির কথা আগে কখনও শুনিনি। নভেম্বরে বীজ রোপণ করেছি। বর্তমানে প্রতিটি স্কোয়াশের ওজন দুই থেকে আড়াই কেজি । রোগবালাই নেই বললেই চলে। এটি একটি লাভজনক সবজিচাষ। আমি পরের বছর থেকে বৃহৎ আকারে এই সবজি চাষ করার পরিকল্পনা করেছি।

 

স্থানীয় আরেক কৃষক জানান, ‘অল্প সময়েই গাছে স্কোয়াশ ধরেছে। বাজারে এর দামও নাকি ভালো। চাষের খরচও তুলনামূলক অনেক কম। তাই এটি চাষের বিষয়ে লতিফ ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলেছি। কৃষি অফিস থেকে সহায়তা ও পরামর্শ পেলে আমরাও স্কোয়াশ চাষ করব।

 

বীজ বপণের ব্যাপারে মঙ্গলপুর গ্রামের স্কোয়াশ চাষি আব্দুল লতিফ বলেন, তাঁর এক বিঘা জমিতে ১৩টি সারি রয়েছে। প্রতিটি সারিতে আছে ৪২টি স্কোয়াশ গাছ। প্রতিটি গাছ থেকে গড়ে ১০টি করে স্কোয়াশ পাওয়ার আশা তার। নিয়ম করে প্রতিদিন বিকেলে গাছগুলোতে পানি দেন তিনি।

 

বীজ, সার, সেচ ও ওষুধ খরচ দিয়ে প্রতি বিঘায় ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকার মতো খরচ হয়। তবে স্থানীয় কৃষি অফিস থেকে কিছু সহায়তা পেয়েছেন তিনি। বাজারে বর্তমানে প্রতি কেজি স্কোয়াশ বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি।

 

তাঁর একবিঘার ক্ষেত থেকে প্রায় ১০০ মন স্কোয়াশ পাওয়ার আশা করছেন লতিফ।  তাহলে সব খরচ বাদ দিয়ে এক লাখ টাকার মতো লাভ হবে বলে জানান তিনি।

 

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর নওগাঁর উপ-পরিচালক কৃষিবিদ শামছুল ওয়াদুদ বলেন, ‘স্কোয়াশ মূলত একটি শীতকালীন ও বিদেশি সবজি। এটি মিষ্টি কুমড়ার মতো সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যে অল্প খরচেই এর চাষ হয়। দ্রুত বর্ধনশীল হওয়ায় অল্প পরিশ্রমেই এর থেকে অধিক আয় করা সম্ভব।

 

এলাকার কোনো কৃষক স্কোয়াশ চাষে আগ্রহী হলে, কৃষি বিভাগ থেকে পরামর্শ ও সহায়তা করা হবে বলেও জানান এই কৃষি কর্মকর্তা।