রাতভর অতিবৃষ্টির কারণে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ সেচ প্রকল্পের ভেতর তীব্র জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে বিপাকে পড়েছেন এই অঞ্চলে বসবাসকারী নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ।
সোমবার (৭ আগস্ট) সকালে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ সেচ প্রকল্পের আওতাধীন সিদ্ধিরগঞ্জ ও ফতুল্লার বেশ কয়েকটি এলাকায় ঘুরে এমন দৃশ্যের দেখা মিলেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাতভর অতিবৃষ্টি ও ভারী বর্ষণের ফলে সিদ্ধিরগঞ্জের কদমতলী, পাইনাদি, মিজমিজি ও ফতুল্লার সস্তাপুর, কোতালেরবাগ লালখাঁ, ইসদাইর, গাবতলী এবং লালপুর এলাকায় হাঁটু পানি থেকে কোমর পর্যন্ত পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার নারী-পুরুষসহ শিক্ষার্থীরা বিপাকে পড়েছেন। এই অঞ্চলের কোথাও কোথাও প্লাবিত হয়ে বসতঘর তলিয়ে গেছে। এছাড়া নিম্ন অঞ্চলের সড়কগুলোতে কোথাও নৌকা কোথাও ভ্যান দিয়ে পানি পার হচ্ছে কিশোর বয়সের ছেলেরা।
বুড়ির দোকান এলাকার ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাচালক জয়নাল মিয়া জানান, পুরো এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। ফলে রিকশা নিয়ে বের হতে পারছি না। আমরা দিনমজুর মানুষ, কাজ না করলে সংসার চলে না। এই পানি না কমা পর্যন্ত গ্যারেজ থেকে রিকশা নিয়ে বের হতেও পারব না।
নারায়ণগঞ্জ হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী হৃদয় আহমেদ বলেন, স্কুলে যাওয়ার জন্য প্রায় ২০ মিনিট দাঁড়িয়ে আছি। কোনো রিকশা নেই। ভ্যান দিয়ে পানি পার হয়ে মূল সড়কে যেতে জন প্রতি ২০ টাকা করে নিচ্ছে। আমিও আমার এক সহপাঠী দর কষাকষি করে ত্রিশ টাকায় পার হলাম। অথচ এখানে পানি না জমলে ৩০ টাকায় আমি স্কুলেই চলে যেতে পারতাম।
সস্তাপুর এলাকার বাসিন্দা ও নারায়ণগঞ্জ কলেজ অ্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব বিজ্ঞানের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম বলেন, বর্ষা এলেই ডিএনডি এলাকায় বসবাসেরত মানুষের দুর্ভোগ বাড়ে। তবে সদর উপজেলা রোডের ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড থেকে বাইতুল আকসা মসজিদ পর্যন্ত অংশে সারাবছরই পানি জমে থাকে। রাতভর অতি বৃষ্টির কারণে এই দুর্ভোগ আরও বেড়েছে। কবে এ থেকে পরিত্রাণ পাব জানা নেই।
এদিকে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ সেচ প্রকল্পের দায়িত্বরত প্রকল্প কর্মকর্তা জানান, সারারাত অতিবৃষ্টির ফলে ডিএনডি প্রকল্পের আওতাধীন বেশ কিছু এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। আমরা এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছি। আদমজী, শিমরাইল ও ফতুল্লা-পাগলায় সবকয়টি স্টেশনে পাম্প চলছে। আশা করি ৪-৫ ঘণ্টার মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হযে যাবে।