ঢাকা, শনিবার ৪ জানুয়ারী ২০২৫, ২১শে পৌষ ১৪৩১

আগাছা দমনে বিষ প্রয়োগ হুমকিতে জীববৈচিত্র কমছে জমির উর্বরতা

এম রাসেল আহমেদ,জয়পুরহাটঃ | প্রকাশের সময় : সোমবার ৭ অগাস্ট ২০২৩ ১০:০২:০০ পূর্বাহ্ন | দেশের খবর

জয়পুরহাট জেলার কৃষক কৃষি জমিতে আগাছা নিধনে প্যারাকোয়ার্ড জাতীয় বিষ ব্যবহারের দিকে ঝুঁকছেন । অল্প খরচে স্বল্প সময়ে জমিতেই বিষ দিয়ে আগাছা নিধন করছেন তারা। হুমকিতে পড়েছে জীববৈচিত্র এতে জমির উর্বরতা হ্রাস পাচ্ছে।

ক্ষেতলাল উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্র জানায়, খরচ একটু বেশি হলেও চাষাবাদের ১৫ দিন থেকে ১ মাস আগে জমিতে শ্রমিক ও হালচাষ দিয়ে আগাছা মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে কৃষকদের। এতে জমির জৈবসারের পরিমাণ বেড়ে উর্বরতা শক্তি বাড়বে। রক্ষা পাবে প্রাকৃতিক ভারসাম্যও। জানা যায়, জয়পুরহাটে ফসলের ক্ষেত, সড়কের পাশে, উঠান, বাড়ির আনাচে-কানাচে  যত্রতত্র গজিয়ে ওঠা আগাছা বিষ দিয়ে নিধন করা  হচ্ছে। আগে কৃষক ক্ষেত নিড়ানিসহ উঁচু-নিচু জমির আগাছা অপসারণে নিড়ানী ও  হাল চাষ দিয়ে আবাদের উপযোগী করতেন। এতে ফসলি জমির উর্বরতা শক্তি ও অণুজীবের সংখ্যা বৃদ্ধি পেত।নিড়ানী ও  হালচাষে খরচ বেড়ে যাওয়ায় স্বল্প খরচে বিষ ছিটিয়ে জমির আগাছা নিধন করছেন কৃষক। বিষ প্রয়োগ করায় ধ্বংস হচ্ছে প্রকৃতির উপকারী কীটপতঙ্গ, কেঁচো, ব্যাঙ, কাঁকড়া, শামুক-ঝিনুকসহ নানা জলজ প্রাণী। বিভিন্ন বিল-ঝিল মাছশূন্য হয়ে পড়েছে। বিষাক্ত কীটপতঙ্গ খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ছে দেশীয় প্রজাতির পাখি। কমছে পাখি সংখ্যাও। গো-খাদ্যের জন্য মাঠগুলো সবুজ ঘাসশূন্য হয়ে পড়ছে। ইরি-বোরো ঘরে তোলার পর আমন আবাদের পর জমিতে কচুরিপানাসহ বিভিন্ন আগাছা জন্মে। এই আগাছা নিধনে বিষ প্রয়োগ করা হচ্ছে। বড়তারা ইউনিয়নের পাঠানপাড়া এলাকার কৃষক আবদুল কালাম বলেন, ধান কাটার পর জমিতে প্রচুর আগাছা জন্মায়। এক বিঘা জমির আগাছা দমন করতে প্রায় পাঁচ-সাতজন শ্রমিক দরকার। এতে ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা মজুরি গুনতে হয়। সেখানে ১০০ টাকার বিষ দিলে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে আগাছা মরে যাচ্ছে। তবে কৃষি শ্রমিক ও হালচাষ দিয়ে ঘাস মাটিতে পুঁতে দিলে জমির উর্বরতা বাড়ে। সহকারী কৃষি কৃষি কর্মকর্তা ইমরুল ইসলাম বলেন, ট্রাক্টর,পাওয়ার টিলার, গরুর হাল কিংবা শ্রমিক দিয়ে আগাছা মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিলে জমির উর্বরতা ও অণুজীবের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। বর্তমান আগাছা দমনে অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহার করে সেগুলো পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। এতে মাটির গুণাগুণ নষ্ট ও অণুজীবের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। যত্রতত্র এর ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় মাটি, পরিবেশ, জীববৈচিত্রের ক্ষতি করছে। এসব রক্ষায় জনসচেতনতা সৃষ্টি বা আইন করে এখনই বন্ধ করা দরকার। ক্ষেতলাল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ জাহিদুল ইসলাম বলেন, কৃষকরা সময় ও টাকা বাঁচানোর জন্য আগাছানাশক ব্যবহার করছেন। এতে মাটির উর্বরতা হ্রাস পায় এবং ফসলের কাঙ্খিত ফলন পাওয়া যায় না। আমরা এগুলো ব্যবহার না করার জন্য কৃষদের পরামর্শ দিয়ে যাচিছ।