গাজীপুরের শ্রীপুরে স্বামীর নতুন স্ত্রীর তাড়া খেয়ে দুই সন্তান উপজেলা ডাক বাংলোতে আশ্রয়। প্রথম স্ত্রীর উপায়ন্তর না পেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
বৃহস্পতিবার বিকালে শ্রীপুর থানা চত্বরে সংবাদ সম্মেলনে এক লিখিত বক্তব্যে তিনি প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন এবং সন্তান নিয়ে নিজগৃহে ফিরে যাওয়ার আকুতি জানান।
সাজানো মামলায় এক বছরের কন্যাসন্তান নিয়ে দুই মাস জেলে থাকার পর তিনি জেল থেকে বেরিয়ে বাড়ি ফিরে দেখেন ঘরে স্বামীর সদ্য বিয়ে করা নতুন স্ত্রী। নিজ ঘর থেকে সন্তানসহ তাকে পিটিয়ে বের করে দেয় তার স্বামী ও স্বামীর নতুন স্ত্রী।
গত ২০ জুলাই জেল থেকে বের হয়ে প্রায় ১৫ দিন যাবত দুই শিশুসন্তান নিয়ে কখনো মানুষের বারান্দায়, কখনো খোলা আকাশের নিচে চরম নিরাপত্তাহীনতায় মানবেতর জীবনযাপন করে আসছেন ভুক্তভোগী ওই নারী।
ভুক্তভোগী নারী নাছরিন দুই শিশু সন্তানসহ নিজ গৃহে ফেরার দাবিতে স্থানীয় কাউন্সিলর, প্রশাসনসহ বিভিন্নজনের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও বিচার পাননি।
লিখিত বক্তব্যে নাছরিন জানান, তার পৈতৃক বাড়ি বাগেরহাট জেলা সদরের অর্জুন বহর গ্রামে। ২০১৩ সালে চাকরির সুবাদে শ্রীপুর পৌর এলাকার বহেরারচালা গ্রামে বসবাস শুরু করেন তিনি।
তার মায়ের পৈতৃক জমি বিক্রির টাকা দিয়ে বহেরারচালা এলাকার জনৈক বিল্লাল ও মজিবর রহমানের কাছ থেকে সরকারি খাসজমি স্ট্যাম্পের মাধ্যমে খরিদ করে বসতবাড়ি নির্মাণ করেন। পরে চাকরি ছেড়ে জনৈক তোফাজ্জল হোসেনের মালিকানাধীন দুইটি দোকান ঘর সাড়ে ৭ লাখ টাকা জামানত দিয়ে ভাড়া নিয়ে ২০১৬ সালে টেইলারিংয়ের ব্যবসা শুরু করেন। ২০১৮ সালে দোকানঘর মালিক তোফাজ্জল অভিভাবক সেজে তার সহযোগী একই উপজেলার গোসিংগা ইউনিয়নের পেলাইদ গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে কবির হোসেনের সঙ্গে বিয়ে দিয়ে দেন তাকে।
নাছরিন বলেন, ওই তোফাজ্জল ও তার স্বামী কবির সুপরিকল্পিতভাবে দোকান ও বসতবাড়ি আত্মসাতের জন্য বিভিন্ন এনজিও থেকে আমার নামে প্রায় ১০ লাখ টাকা ঋণ উত্তোলন করেন। একপর্যায়ে তারা ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আমার দোকান হাতিয়ে নেয় এবং আমার বসতবাড়ি হাতিয়ে নিয়ে আদালতে মামলা দায়ের করে আমাকে তিনবার জেল খাটায়। ২০ জুলাই সাজা খেটে বাড়িতে এসে দেখি আমার স্বামী কবির পুনরায় বিয়ে করে নতুন স্ত্রীকে ঘরে তুলে রেখেছেন।
এদিকে দুই সন্তানসহ নাছরিনের উপজেলা ডাক বাংলোতে আশ্রয় নেওয়া গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তরিকুল ইসলাম ব্যক্তিগতভাবে নাছরিনকে তিন হাজার টাকা প্রদান করেন এবং তিনি আরো নিশ্চয়তা দেন যে লিখিত আবেদন করলে আইনি সহায়তার দেওয়া হবে।